ডেস্ক রিপোর্ট: চলমান বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজন করতে ফিফার নিয়ম মেনে সবকিছু করতে হয়েছে কাতারকে। এমনকি স্টেডিয়াম নির্মাণ করতেও মানতে হয়েছে নিয়ম। এর মধ্যে কয়েকটি স্টেডিয়াম একদম শূন্য থেকে নির্মাণ করতে হয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো স্টেডিয়াম ৯৭৪। এই স্টেডিয়ামে সাতটি খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো দ্বিতীয় রাউন্ডে ব্রাজিল-দক্ষিণ কোরিয়া ম্যাচ।

কাতারের সামুদ্রিক এলাকার পাশেই অবস্থিত এই স্টেডিয়ামের আসনসংখ্যা ৪০ হাজার। কিন্তু আচমকাই বিশ্বকাপের পর কেন অদৃশ্য হয়ে যাবে এই স্টেডিয়াম। আর কেনই–বা জাহাজের কনটেইনার দিয়ে নির্মিত স্টেডিয়ামের পরিণতি এত খারাপ হতে চলেছে।
মূল বিষয় হলো কাতার বিশ্বকাপের জন্য স্টেডিয়াম ৯৭৪ অস্থায়ীভাবে তৈরি করা হয়েছে। মোট ৯৭৪টি কনটেইনার দিয়ে তৈরির কারণেই এই স্টেডিয়ামের নাম দেওয়া হয়েছে স্টেডিয়াম ৯৭৪। ফুটবল বিশ্বকাপের ইতিহাসে এটিই প্রথম অস্থায়ী স্টেডিয়াম। মডিউলার স্টিল ও শিপিং কনটেইনার দিয়ে তৈরির কারণেই বিশ্বকাপের শেষে সহজেই ভেঙে ফেলা যাবে এই স্টেডিয়াম। স্টেডিয়াম ভাঙার সময় যাতে দূষণ না হয়, সেটা নিয়ে আলাদা ভাবনাও আছে কাতার প্রশাসনের। এমনকি প্রয়োজনে ওই কনটেইনার পুনরায় ব্যবহারও করা যাবে। এমনকি দরকার পড়লে অন্য দেশেও স্থানান্তর করা যাবে।
তবে বিশেষজ্ঞরা এই স্টেডিয়ামের নির্মাণশৈলীর প্রশংসা করলেও এর সম্পর্কে আরও অনেক কিছুই অজানা রয়ে গেছে বলে মনে করেন তাঁরা। তাঁদের মতে, বিশ্বকাপের পর ঠিক কী করা হবে স্টেডিয়ামটির ধ্বংসাবশেষ নিয়ে, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন বিশেষজ্ঞরা। কোনো কিছুই পরিষ্কার নয়।

২০১১ সালে বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব পায় কাতার। এরপর ২০১৮ সালে শুরু হয় এই স্টেডিয়াম তৈরির কাজ। ৪৪ হাজার ৮৯ আসনবিশিষ্ট এই স্টেডিয়াম তৈরি করতে লেগেছিল প্রায় তিন বছর। বিশ্বকাপ–যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে ফিফা আরব কাপের ছয়টি ম্যাচ আয়োজন করা হয়েছিল সেখানে। বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগে সৌদি আরব, কাতার, জর্দান, সুদান এই স্টেডিয়ামে খেলেছে।

কাতারে আরও আয়োজন
ফুটবল বিশ্বকাপ উপলক্ষে কাতার যেসব স্টেডিয়াম নির্মাণ করেছে, সেগুলো অব্যবহৃত পড়ে থাকবে, তা নয়। ২০২৪ সালে এশিয়ান কাপ ফুটবলের স্বাগতিক দেশ তারা। হতে পারে, সেই সময় এই স্টেডিয়াম আবার ব্যবহার করা হবে। এ ছাড়া ২০৩০ সালে এশিয়ান গেমসেরও স্বাগতিক দেশ কাতার। ফলে তখনো এই স্টেডিয়াম ব্যবহার করা হতে পারে। মোদ্দাকথা হলো, এই স্টেডিয়ামের ভূতভবিষ্যৎ এখনো পরিষ্কার নয়। তবে নান্দনিক এই স্টেডিয়াম আবারও ব্যবহারের সুযোগ আছে।

কাতার বিশ্বকাপের স্টেডিয়ামগুলো নির্মাণ করতে প্রায় ১০ বিলিয়ন বা ১ হাজার কোটি ডলার ব্যয় করেছে, যা মোট ব্যয়ের (৩০ হাজার কোটি ডলার) খুবই সামান্য। তবে এই স্টেডিয়াম তার নির্মাণশৈলীর জন্যই খ্যাত হয়ে থাকবে।
প্রথমআলো