Home জাতীয় বান্দরবানে স্কুল ছাত্রসহ আবারো ৩ বমকে হত্যার ঘটনায় নিন্দা

বান্দরবানে স্কুল ছাত্রসহ আবারো ৩ বমকে হত্যার ঘটনায় নিন্দা

52

ডেস্ক রিপোর্ট: বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে গতকাল এক স্কুল ছাত্রসহ তিনজন নিরীহ বমকে গুলি করে হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ইউপিডিএফভুক্ত ৫ সংগঠন।

আজ মঙ্গলবার, ৯ মে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি অংগ্য মারমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সভাপতি কণিকা দেওয়ান, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অঙ্কন চাকমা, ইউনাইটেড ওয়ার্কার্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের সভাপতি সচিব চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নীতি চাকমা সংবাদ মাধ্যমে প্রদত্ত এক যুক্ত বিবৃতিতে উক্ত হত্যাকাণ্ডকে পরিকল্পিত ও বম জাতিসত্তাকে নিশ্চিহ্ন করার সুগভীর ষড়যন্ত্রের অংশ বলে উল্লেখ করে অবিলম্বে এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ স্থানীয়দের বরাত দিয়ে বলেন, গতকাল সকাল ৫টার সময় সেনাবাহিনী ও নব্যমুখোশদের একটি যৌথ দল পাইক্ষ্যং পাড়া ও ক্যায়াপালং পাড়ায় হানা দিয়ে গ্রামবাসীদের গীর্জায় আটকে রাখে। এর আধ ঘন্টা পর রৌনিন পাড়া থেকে রোয়াংছড়ি সদর বাজারে যাওয়া চারজনকে ধরে নিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে। এতে তিনজন নিহত ও একজন পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়।

নিহত তিনজন হলো- নেম থাং বম (৩৫),সাং লিয়ান বম (১৯) এবং লাল লম লিয়ান বম(২৫)। এই তিনজনের মধ্যে সাং লিয়ান বম (১৯) বান্দরবান সরকারি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। নেম থাং বম একজন ক্ষুদে দোকানদার এবং ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। আর লাল লম লিয়ান বম বাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। এ ঘটনায় আহত ব্যক্তির নাম মানসার বম।

পাঁচ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, গত ৭ এপ্রিল একই উপজেলার খামতাং পাড়া এলাকায় ৮ জন বমকে নৃশংসভাবে হত্যার এক মাসের মাথায় আবারো ৩ জন বমকে হত্যার ঘটনা খুবই উদ্বেগজনক। গত ৭ এপ্রিলের হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনগত কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় পূনরায় একই ঘটনা সংঘটিত করা হয়েছে বলে নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনী ও তাদের সৃষ্ট ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসীরা অবাধে খুন-খারাবি চালিয়ে যাচ্ছে। বান্দরবানে বম জাতিসত্তার ওপর যেভাবে একের পর এক হত্যাকাণ্ড চালানো হচ্ছে তা একটি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার সুগভীর ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়। তাছাড়া এক বা একাধিক জাতিসত্তার সমন্বয়ে গঠিত ঠ্যাঙাড়ে বাহিনী দিয়ে অপর একটি ভিন্ন জাতিসত্তার বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ড ও দমন-পীড়ন চালানোকে পার্বত্য চট্টগ্রামে সংগ্রামরত জাতিগুলোর মধ্যে বিভেদ, বিভ্রান্তি ও দ্বন্দ্ব সৃষ্টির অপকৌশল বলে নেতৃবৃন্দ মন্তব্য করেন।

নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে গতকাল ও ৭ এপ্রিলের হত্যাকাণ্ডের স্বাধীন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক সাজা, নিহতদের পরিবারগুলোকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও নিরাপত্তা বিধান এবং বম জাতিসত্তাসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি জনগণের উপর চলমান অন্যায়-অবিচার, দমন-পীড়ন বন্ধের জোর দাবি জানান।