Home সাহিত্য ও বিনোদন বাংলা একাডেমির ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

বাংলা একাডেমির ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

24

ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলা একাডেমির ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে রোববার ৩রা ডিসেম্বর একাডেমি দিনব্যাপী বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করে। সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে মহান ভাষা আন্দোলনের অমর শহিদদের স্মৃতির প্রতি এবং সাড়ে ১০টায় বাংলা একাডেমির স্বপ্নদ্রষ্টা ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্-র সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। বেলা ৩টায় বাংলা একাডেমির রবীন্দ্র চত্বরে বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাভাবনা শীর্ষক প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বক্তৃতা-২০২৩ প্রদান করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর-এর সভাপতি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। স্বাগত ভাষণ প্রদান করেন একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন একাডেমির সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মো. হাসান কবীর। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, একাডেমির সাবেক পরিচালক জাকিউল হক ও শফিকুর রহমান চৌধুরী, অধ্যাপক শওকত আরা হোসেন, কবি দিলারা হাফিজ, কবি লিলি হক, ড. ইসরাইল খান প্রমুখ।
কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, বাংলা একাডেমি বাংলা ও বাঙালির বাতিঘরের নাম। এই জনপদের সংগ্রামী ইতিহাসের চলন্ত সাক্ষ্য বাংলা একাডেমি। প্রায় সাত দশক ধরে বাংলা একাডেমি তার ধারাবাহিক নিবেদন ও কর্মের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিসত্তা ও বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষের প্রতীক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হয়েছে।
অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বাংলার আকাশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ন্যায় উজ্জ্বল, মেধাবী, প্রজ্ঞাবান ও অন্তদৃর্ষ্টিসম্পন্ন রাজনৈতিক নক্ষত্রের আবির্ভাব ঘটেছিল বিধায় আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম জাতিরাষ্ট্র গণপ্রজাতিন্ত্রী বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাচিন্তার যে বর্ণনা আমরা ইতিহাসে পাই তা একবিংশ শতাব্দীর বাস্তবতার নিরিখে বলা যায় তা অসাধারণ ভবিষ্যৎদর্শনের রূপরেখা। বঙ্গবন্ধুর মুক্তির সংগ্রাম মূলত শিক্ষার আন্দোলন। তিনি বলেন, বাঙালি জাতির কল্যাণচিন্তায় নিবিষ্ট বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাভাবনার কেন্দ্রে ছিল এমন একটি শিক্ষাব্যবস্থা যা মানুষকে মহৎ করে, সৎ করে গড়ে তোলে, দক্ষ ও যোগ্য সুনাগরিক নির্মাণ করে, দেশপ্রেমিক সত্তার উদ্ভব ঘটায়, দিগন্তপ্রসারী দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টি করে, মনোজাগতিক চৈতন্য বিকাশ লাভ করে ও সর্বোপরি সর্বোচ্চ বিশুদ্ধ মানুষের রূপান্তর করে।
খলিল আহমদ বলেন, ১৯৫৫ সালের ৩রা ডিসেম্বর থেকে ৬৮ বছর যাবৎ বাংলা একাডেমি বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও বাঙালি সংস্কৃতির লালন-বিকাশে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করে চলেছে। তিনি বলেন, বর্তমান সংস্কৃতিবান্ধব সরকার বাংলা একাডেমি এবং অন্যান্য জাতীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সারা দেশের সবস্তরের মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক সাক্ষরতা নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্নমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, বাংলা একাডেমির গভীরে আছে একটি সজীব-সচল প্রাণসত্তা। বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের ইতিহাস-ঐতিহ্যের গর্বিত ধারক-বাহকের নাম বাংলা একাডেমি। ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমরা বলতেই পারি, বাংলা একাডেমি বাংলা ও বাঙালির প্রাণপ্রবাহ এবং অবিচ্ছেদ্য অংশ।
ড. মো. হাসান কবীর বলেন, ভাষা আন্দোলনের চেতনাস্নাত বাংলা একাডেমি মুক্তিযুদ্ধজাত বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক প্রত্যয়কে ধারণ করে বাংলা ও বাঙালির প্রাণের প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির উপপরিচালক ড. সাইমন জাকারিয়া।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষ্যে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে দুপুরে একাডেমির কর্মকর্তা/কর্মচারীদের অংশগ্রহণে প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতা এবং সন্ধ্যায় আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে সুরভিত সন্ধ্যা শীর্ষক স্মৃতিচারণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।