Home খেলা শেষ ম্যাচে জয়ে ফিরেছে আফগান

শেষ ম্যাচে জয়ে ফিরেছে আফগান

30

ডেস্ক রিপোর্টঃ টি-টোয়েন্টি দুই ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে শনিবার আফগানদের কাছে ৮ উইকেটে পরাজিত হয় বাংলাদেশ। এরমাধ্যমে টি-টোয়েন্টি সিরিজটি ১-১ সমতায় শেষ হলো। এর আগে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতেছিলো বাংলাদেশ।
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১১৫ রানের মামুলি সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। জবাবে ১৪ বল বাকী রেখে ১১৬ রানের টার্গেট স্পর্শ করে টাইগাররা।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এ ম্যাচেও টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্বান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।
ব্যাট হাতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারে মাত্র ৩ রান তুলেন মোহাম্মদ নাইম ও আগের ম্যাচে অভিষেক হওয়া মুনিম শাহরিয়ার। তবে আফগানিস্তানের অধিনায়ক মোহাম্মদ নবির করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে প্রথম বাউন্ডারি আদায় করে নেন মুনিম। কিন্তু চতুর্থ বলে উইকেট ছেড়ে খেলতে গিয়ে মিড অফের ফিল্ডার শরফুদ্দিন আশরাফকে ক্যাচ দিয়ে ১০ বলে ৪ রান করে আউট হন মুনিম।
আগের ম্যাচে দলের বিপর্যয়ের মাঝেও ৬০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছিলেন লিটন দাস। আজও তেমন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি। তৃতীয় ওভারে পুল শটে ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে একটি ছক্কা মারেন লিটন। তবে পঞ্চম ওভারের প্রথম ডেলিভারিতে আউট হন লিটন। আজমতুল্লাহ ওমরাজাইর বলে আশরাফকে ক্যাচ দেন ১০ বলে ১৩ রান করা লিটন।
লিটনের বিদায়ের ওভারে দু’টি বাউন্ডারি মারেন নাইম। এরপর ৩ ওভার কোন চার-ছক্কার মুখ দেখেনি বাংলাদেশ। উইকেট ধরে খেলতে গিয়ে ঐ ৩ ওভারে মাত্র ৮ রান তুলেন নাইম ও সাকিব আল হাসান। নবম ওভারের প্রথম বলে সাকিবের সাথে ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউট হন টেস্ট মেজাজে ১৯ বলে ১৩ রান করা নাইম।
উইকেটে সেট হবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন সাকিব। ওমরজাইর করা দশম ওভারের তৃতীয় বলটি ছিলো বাউন্সার, সেটি ঠিক-ঠাক সামলাতে না পেরে আকাশে বল তুলে দেন সাকিব। উইকেটরক্ষক রহমানউল্লাহ গুরবাজ সহজেই সেটি তালুবন্দি করলে ১৫ বলের বাউন্ডারিহীন ইনিংসে ৯ রান করা সাকিবের বিদায় ঘটে।
৪৫ রানে ৪ উইকেট পতনের পর দলকে খেলায় ফেরানোর চেষ্টা করেন শততম ম্যাচ খেলতে নামা মুশফিক ও অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। উইকেট সেট হতে কিছুটা সময় নেন তারা। ১২তম ওভারে রশিদ খানের বল দু’বার মাঠ ছাড়া করেন মাহমুদুল্লাহ।
করিম জানাতের করা ১৪তম ওভারে ২টি বাউন্ডারি পান মুশফিক। ১৫তম ওভারের প্রথম বলে বাউন্ডারি মেরে দেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে ২ হাজার রান পূর্ণ করেন মাহমুদুল্লাহ। তবে ঐ ওভারের চতুর্থ বলে রশিদের বলে বোল্ড হন টাইগার নেতা। ৩টি চারে ১৪ বলে ২১ রান করেন মাহমুদুল্লাহ। মুশফিকের সাথে পঞ্চম উইকেটে ৩১ বলে ৪৩ রান যোগ করেন তিনি।
দলীয় ৮৮ রানে পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে মাহমুদুল্লাহর আউটের পর ব্যাটিং ধস নামে বাংলাদেশের। ১০৫ রানে নবম উইকেট হারায় তারা। তবে শেষ উইকেটে নাসুম আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমানের দৃঢ়তায় অলআউট হয়নি বাংলাদেশ। ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১১৫ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।
মাহমুদুল্লাহর সাথে এ ম্যাচে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়া মুশফিক ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে ৩০ রান করে আউট হন। তার ২৫ বলের ইনিংসে ৪টি চার ছিলো। এছাড়া আফিফ হোসেন ৭, মাহেদি হাসান-শরিফুল ইসলাম রানের খাতা খুলতে পারেননি।
নাসুম ৫ ও ফিজ ৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। আফগানিস্তানের ফারুকি ১৮ রানে ও ওমরজাই ২২ রানে ৩টি করে উইকেট নেন।
সিরিজ হার এড়ানোর লক্ষ্যে ১১৬ রানের টার্গেটে দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারায় আফগানিস্তান। স্পিনার মাহেদি হাসানের বলে আউট হন ৩ রান করা ওপেনার গুরবাজ।
শুরুতে উইকেট হারালেও, আরেক ওপেনার হজরতুল্লাহ জাজাই ও উসমান ঘানি পাওয়ার প্লেতে দলের রান ৩৪ রানে নিয়ে যান। সাকিবের করা নবম ওভারের শেষ দুই বলে পরপর দু’টি ছক্কা মারেন জাজাই। শরিফুলের পরের ওভারে ২টি চার আদায় করেন ঘানি। এরমধ্যে মাহেদির করা ১২তম ওভারে ঘানির ক্যাচ ফেলেন আফিফ। একই বোলারের ডেলিভারিতে ১৫তম ওভারের নাইমের হাতে জীবন পান ঘানি।
সাকিবের করা ১৫তম ওভারে ২টি ছক্কায় দলের স্কোর ১শতে নিয়ে যান জাজাই। এই জুটিতেই জয়ের স্বপ্ন দেখছিলো আফগানরা। তবে দু’বার জীবন পাওয়া ঘানিকে শিকার করে এই জুটি ভাঙ্গেন মাহমুদুল্লাহ। ৪৮ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৭ রান করেন ঘানি। দ্বিতীয় উইকেটে ৮২ বলে ৯৯ রানের জুটি গড়েন জাজাই ও ঘানি।
ঘানি যখন ফিরেন তখন জয় থেকে ১৩ রান দূরে আফগানিস্তান। চার নম্বরে নামা দারউইশ রাসুলিকে নিয়ে আফগানিস্তানকে জয়ের বন্দওে পৌঁছে দেন জাজাই।
টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ৫৯ রানে অপরাজিত থাকেন জাজাই। ৯ রানে অপরাজিত থাকেন রাসুলি। ৩টি চার ও ৫টি ছক্কা দিয়ে নিজের ইনিংসটি সাজান জাজাই। বাংলাদেশের মাহেদি ও মাহমুদুল্লাহ ১টি করে উইকেট নেন।