Home রাজনীতি বাংলাদেশের মানুষ দালালদের কখনো ক্ষমা করবে না: মির্জা ফখরুল

বাংলাদেশের মানুষ দালালদের কখনো ক্ষমা করবে না: মির্জা ফখরুল

18

স্টাফ রিপোটার: দালালিরও শেষ আছে। বাংলাদেশের মানুষ দালালদের কখনো ক্ষমা করবে না। নো নেভার, এমনটিই মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার (২৯ মার্চ) দুপুরে বিএনপির চেয়াপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তসহ অন্যান্য বিষয়াদি নিয়ে কথা এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা বিএনপি।

মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবিত আলোচনা ও মতবিনিময়ে রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানের কোন সম্ভাবনা দেখছে না বিএনপি। তাই নির্বাচন কমিশনের এই প্রস্তাব গ্রহণ করছে না দলটি। তবে পত্র প্রেরণের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে।

সভায়, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল কর্তৃক মহাসচিবকে প্রেরিত পত্রটির বিষয়ে আলোচনা হয়। পত্রে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিকে আনুষ্ঠানিক না হলেও অনানুষ্ঠানিক আলোচনা ও মতবিনিময়ের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। সভা মনে করে, বর্তমানের মূল রাজনৈতিক সংকট নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি নিঃস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কোন আলোচনা অথবা সংলাপ ফলপ্রসু হবে না এবং তা হবে অর্থহীন। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে যে, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন নয় এবং ইচ্ছা থাকলেও নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভাবে অনুষ্ঠানের নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা নেই।

সভায়, পবিত্র রমজান মাসে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্দ্ধগতির কারনে জন-জীবন সীমাহীন দূর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। অথচ অবৈধ সরকারের মন্ত্রী এবং শাসক দলের নেতৃবৃন্দের ‘জিনিসপত্রের দাম জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেই রয়েছে এবং এত মানুষ লাইন দিয়ে ইফতার সামগ্রী কিনছেন প্রমাণ করে যে, তাদের আয় বেড়েছে’ উক্তি জনগণের সঙ্গে নিকৃষ্ট ধরনের মসকরা ছাড়া আর কিছু নয়। রাজনৈতিক দল গুলোর বার বার সরকারকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান করলেও সরকার এ ব্যাপারে উদাসিন। সরকারি দলের ব্যবসায়িদের সিন্ডিকেট ও এক শ্রেণীর কর্মকর্তাদের দূর্নীতির কারনেই দ্রব্য মূল্য কমানোর কোন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। এই জনবিচ্ছিন্ন সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। বিএনপি ইতিমধ্যে অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে দেশব্যাপী কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। সভায় আগামী ১ এপ্রিল হতে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত মহানগর, জেলা, উপজেলা, পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে গৃহীত মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচী যথাযথভাবে পালনের জন্য সংশ্লিষ্ট সকল শাখাকে অনুরোধ জানানো হয়।

সভায়, ২২ মার্চ বাংলাদেশ সরকারের ভূমি দপ্তরে কর্মচারী সুলতানা জেসমিনকে র‌্যাব কর্তৃক বেআইনীভাবে তুলে নেওয়া এবং নির্যাতনের ফলে তার মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।

সভা মনে করে, সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে একজন মহিলাকে কোন সুনির্দষ্ট মামলা ব্যতিরেকে তুলে নেওয়া এবং ফলশ্রুতিতে মৃত্যু আবারো প্রমাণ করেছে এই সরকারের অধীনে কর্মরত আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা যথেচ্ছভাবে মানবাধিকার লংঘণ করেই চলেছে। হাইকোর্ট ইতিমধ্যে বিষয়টি আমলে নিয়ে এ্যাটনি জেনারেলকে সকল তথ্য উপস্থাপন করতে নির্দেশ দিয়েছে। সংবাদ মাধ্যমগুলো ইতিমধ্যে এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। এ কথা নিঃসন্দেহে প্রমানিত যে, সুলতানা জেসমিন র‌্যাব কাস্টডিতে মারা গেছে যা, চরমভাবে মৌলিক অধিকার লংঘন। আন্তর্জাতিক অধিকার সংস্থা গুলো এ বিষয়ে অবিলম্বে নিরপেক্ষ তদন্ত অনুষ্ঠানের দাবী জানিয়েছে। সভায় অবিলম্বে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত তথ্য জনসম্মুখে উপস্থাপনের দাবী জানাচ্ছে এবং সুলতানা জেসমিনকে হত্যার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানাছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে ফখরুল বলেন, ১৮ সালের নির্বাচনে আগে একবার নয়, দুইবার প্রধানমন্ত্রী সকলের সামনে বললেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে । কোন প্রকার অত্যাচার নির্যাতন হবে না। পুলিশ প্রশাসন ভোটে কোন কারচুপি করবে না। বারবার করে বলছিলেন। কি লাভ হয়েছে?

সাংবাদিককে আটক এর ঘটনায় মির্জা ফখরুল বলেন, এ ধরনের যদি কাজ হয়? কিভাবে সাংবাদিকতা করবেন? তবে দালালিরও শেষ আছে। বাংলাদেশের মানুষ দালালদের কখনো ক্ষমা করবে না। নো নেভার।