Home শিক্ষা ও ক্যাম্পাস বশেমুরবিপ্রবিতে ৬৬.৬ শতাংশ শিক্ষার্থী রয়েছে আত্মহত্যার ঝুঁকিতে

বশেমুরবিপ্রবিতে ৬৬.৬ শতাংশ শিক্ষার্থী রয়েছে আত্মহত্যার ঝুঁকিতে

42

মো মোস্তাফিজুর রহমান, বশেমুরবিপ্রবি: পারিবারিক, আর্থিক, মানসিক এবং হতাশাজনিত কারনে বর্তমানে মানুষের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবনতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও। গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের(বশেমুরবিপ্রবি) শতকরা ৬৬.৬ শতাংশ শিক্ষার্থীও রয়েছে এই আত্মহত্যার ঝুঁকিতে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তাদের এ ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে প্রয়োজন মানসিক স্বাস্থ্য সেবা।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগ কর্তৃক প্রকাশিত “শিক্ষার্থীদের মানসিক-স্বাস্থ্য সমীক্ষা, বশেমুরবিপ্রবি, ২০২৩”- এর এক জরিপে এই তথ্যটি উঠে এসেছে।

জরিপের তথ্যমতে, বশেমুরবিপ্রবি ৬৬.৬ শতাংশ শিক্ষার্থী মানসিক চাপ কিংবা পারিবারিক, অর্থনৈতিক এবং হতাশাজনিত কারনে আত্মহত্যার দিকে ঝুঁকে পড়েছে।

সমীক্ষাটি ২০২৩-এর চলতি বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগ ও অনুষদের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য ও প্রয়োজনীয় মানসিক স্বাস্থ্য সেবার চাহিদা যাচাইয়ের জন্য করা হয়৷ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মোট ৮টি অনুষদে প্রায় ১২হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। সমীক্ষায় দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮টি অনুষদের মধ্যে জীববিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি মানসিক সমস্যার ভোগান্তিতে রয়েছে। তাদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং হতাশার প্রবনতা ২০শতাংশ। এবং মানসিক সমস্যার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থীরা। যাদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং হতাশার প্রবনতা রয়েছে ১৯.৭শতাংশ। সমীক্ষায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে কলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা। এতে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং হতাশার প্রবনতা রয়েছে ১৫.৩শতাংশ শিক্ষার্থীর মধ্যে। যথাক্রমে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং হতাশায় অন্তর্ভুক্ত বিজ্ঞান অনুষদে রয়েছে ১৩.২ শতাংশ শিক্ষার্থী, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে রয়েছে ১১শতাংশ শিক্ষার্থী এবং ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদে রয়েছে ১০.৫শতাংশ শিক্ষার্থী।

এই সমীক্ষায় সবচেয়ে কম মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে কৃষি অনুষদ ও আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরা।

সমীক্ষা অনুযায়ী মানসিক স্বাস্থ্য উন্নতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৯.৫শতাংশ শিক্ষার্থী মানসিক স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। মানসিক চাপ সামলাতে ৮৩.২শতাংশ শিক্ষার্থী অসহায় মূহুর্ত্যে সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। এসময় ৬৬.৬শতাংশ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করার চিন্তাভাবনা করেন বলে সমীক্ষায় উঠে এসেছে।

শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নতিতে ৯৯শতাংশ শিক্ষার্থী মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করার প্রয়োজনীয়তাও অনুভব করেন বলে সমীক্ষায় দেখা যায়।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে কেন্দ্রীয়ভাবে ছাত্র পরামর্শদাতা থাকলেও শিক্ষার্থীরা এতে সন্তুষ্ট না। তাই চলতি মাসে মনোবিজ্ঞান বিভাগ থেকে শিক্ষার্থীদেরকে মানসিক চাপ কমাতে কাউন্সিলিং সেবা চালু করেছে। এর মধ্যে তারা টেলি-কাউন্সিলিং সেবা চালু করেছে। যেখান থেকে শিক্ষার্থীরা মোবাইল ব্যবহার করে এই টেলি-কাউন্সিলিং সেবা গ্রহন করতে পারবে বলে জানা যায়।

মানসিক স্বাস্থ্য সেবা সম্পর্কে মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি নাসরিন নাহার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বর্তমানে মানসিকভাবে খুবই দূর্বল এবং ইমোশনাল। তাই তারা ভবিষ্যতের কথা চিন্তা না করেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়। আর এটার কারন হচ্ছে তারা মানসিক ভাবে সুস্থ না। সেজন্য প্রথমে তাদেরকে মানসিকভাবে সুস্থ রাখতে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার উদ্যোগ নিয়েছি।