Home শিক্ষা ও ক্যাম্পাস বশেমুরবিপ্রবিতে পুকুর খনন প্রকল্পের নামে কফিশপ নির্মাণ

বশেমুরবিপ্রবিতে পুকুর খনন প্রকল্পের নামে কফিশপ নির্মাণ

36

বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পুকুর খনন প্রকল্পের নামে বাজেট দেখিয়ে কফিশপসহ বেশ কয়েকটি স্থাপনা নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। এদিকে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজের তেমন কোন অগ্রগতি দেখা যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের মনে প্রকল্পের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুকুর খনন প্রকল্পটির আরডিপিপি বরাদ্দ ছিল ২ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা, প্রাক্কলিত মূল্য ২ কোটি ৩৭ লক্ষ ৯৩ হাজার টাকা এবং ২ কোটি ১৪ লক্ষ ১৪ হাজার টাকা দরপত্রের মাধ্যমে এম/এস খান সন্স বিডি লিমিটেড (M/S Khan & Sons BD Ltd) এর কাছে প্রকল্পটি দেওয়া হয়। এদিকে প্রকল্পটি ২০২১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়ে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ হবার কথা থাকলেও কাজের অগ্রগতি ৪৫ ভাগ এবং এর বিপরীতে ১৬ শতাংশ মূল্য পরিশোধ করেছে বলে জানা যায়।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে গত দুই বছরে কোনরূপ পুকুর খননের কাজের বিষয়ে সন্ধান না পেয়ে বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্য ড. এ কিউ এম মাহবুব এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমার (উপাচার্যের) বাসভবনের পাশের লেকটাকে পুকুর খনন বলছে। এ বিষয়ে কনসার্নিং দপ্তরকে ফোন কর উত্তর পেয়ে যাবে। অনেক কিছু পুরোনো আগের ঘটনা আমিতো জানব না।প্রকল্প পরিচালক তুহিন মাহমুদকে জিজ্ঞেস কর।

উপাচার্যের বক্তব্য অনুযায়ী সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপাচার্যের বাসভবন সংলগ্ন লেকপাড়ের (পুকুর) পেছনের অংশে শুধুমাত্র কংক্রিটের সীমানা প্রাচীর বা বাধ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানান, গত দুই বছরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে কোন প্রকারের পুকুর খননের কাজ আমরা দেখি নাই। শুধুমাত্র উপাচার্যের বাসভবন সংলগ্ন লেকপাড়ে এর পেছনে নতুন করে বাধ (সুইচ গেট) দেওয়া হয়েছে। এদিকে কাজের অগ্রগতি ৪৫ ভাগসহ মোট বাজেট ২ কোটি টাকার বেশি দেখানো হয়েছে। এদিকে পুকুর খননের নামে কফি শপ নির্মাণ করা হচ্ছে। যেখানে শিক্ষার্থীদের জন্য ক্লাসরুম, ল্যাব রুম, আবাসিক হলসহ মেডিকেল সেন্টার আধুনিকরণ জরুরি ছিল সেখানে কফি শপ নির্মাণ সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য না।

তারা আরও বলেন, এক প্রকল্পের নামে অন্য প্রকল্প নতুন নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নানাবিধ প্রকল্পে স্বচ্ছতার অভাব আমরা পূর্বেও দেখেছি। সাধারণ শিক্ষার্থীসহ জনগণের টাকায় এ ধরনের প্রকল্পে লুটপাট নতুন নয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এ বিষয়ে সকলের কাছে জবাবদিহিতা করতে হবে এবং সঠিক হিসাব দিতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী ইস্কান্দার আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, লেকটাইতো খনন হয়েছে। এছাড়াও ভিসি স্যারের বাসভবনের পাশে পাহাড়ের উপরে উঠে দেখ সিড়ি হয়েছে, কলাম হয়েছে, সুইচ গেটের কাজ হয়েছে। এগুলো পুকুর খননের সাথের কাজ। তুমি ওখানে ভিজিট কর।

পুকুর খননের কাজের মধ্যে অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণের কাজ কিভাবে সম্পৃক্ত জানতে চাইলে তিনি জানান, মূল কাজটা ছিল পুকুরের, পরে এটা রিভাইস হয়েছে। ডিপিপির নামতো কোন পরিবর্তন করা যায় না। আর এটা সম্ভবও নয়।

সর্বশেষ কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, কাজটা করছে প্রকল্প পরিচালক তুহিন মাহমুদ আমি না। আমি মিটিংয়ে আছি এগুলো নিয়ে এখন বলতে পারব না। পরে আসো ডাটা নিতে পারবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কার্স দপ্তর এর পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) তুহিন মাহমুদ এর সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।