বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) আইন বিভাগে পরীক্ষার সাত (৭) মাস পর অসদুপায় অবলম্বনের কারণ দেখিয়ে এম সাদিদ ও আবদুল্লাহ মোল্লা নামক দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের পক্ষে সমর্থন জানিয়ে একই বিভাগের শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করেছে।
রবিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুর ১ টায় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এসময় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের পক্ষে প্রতি সমর্থন জানিয়ে আইন বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. শামসুদদোহা বলেন, প্রথমে বিভাগ থেকে বলা হয়েছিল ৫ টি খাতায় এবং পরে ৩ টি খাতায় হুবহু মিল থাকার কথা বলা হয়। এক্ষেত্রে প্রকৃতপক্ষে কয়টি খাতায় মিল রয়েছে বা মিল থাকলে কি অবস্থায় রয়েছে তা জানতে চাই। এছাড়াও খাতায় মিল থাকলে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আইনের বৈধতা আছে কি না, সাক্ষ্য প্রমাণ ছাড়া ফ্যাক্টের উপর ভিত্তি করে সাড়া দেওয়া চলবে না, নীতি হীনতার কথা তুলে আইনে উল্লেখ না থাকা বিষয়ে সাড়া প্রদান করা যায় কিনা এবং বহিষ্কার এর নোটিশের পূর্বে তারা কিসের ভিত্তিতে ফেইল দেখিয়েছে এর আইনগত ভিত্তি কি এর সুনির্দিষ্ট জবাব জানতে চাই।
তিনি আরও জানান, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বহিষ্কার আদেশ পুনবিবেচনার দাবি জানিয়ে আবেদন জানালে তাদের দোষ স্বীকার করে নেবার জন্য বিভাগ থেকে বলা হয়। ভুক্তভোগীদের ভাষ্যমতে একজনকে শিক্ষক বানিয়ে দেবার প্রস্তাবও দেওয়া হয়। একইসাথে বিভিন্ন মহল থেকে হুমকি প্রদানের মত ঘটনাও ঘটেছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
ভুক্তভোগীদের পক্ষে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী (১৫-১৬) মুহাম্মদ সোলাইমান জানান, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ১ম ব্যাচের শিক্ষার্থী। বিভাগের শুরু আমাদের দ্বারাই। আমাদের কেউ আইন বিভাগে আঁচ লাগে এ ধরনের কর্মকাণ্ড করবে তা বিশ্বাস করি না। পরীক্ষা শেষ হবার ৭ মাস পর এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত বহিষ্কারের ঘটনা যৌক্তিক মনে হয় নাই। আমাদের বন্ধুদের সাথে অন্যায় করা হয়েছে।
আইনের বিভাগের অপর শিক্ষার্থী (১৫-১৬) দেবব্রত পান্ডে , এখানে খাতার মিল পরের বিষয়, যেখানে নকল সাধিতই হয় নাই সেখানে তাদের কিভাবে বহিষ্কার করা হয়। তারা যদি শৃঙ্খলা বিষয়ক একটি নিয়ম-নীতি ভঙ্গ করত তাহলে নিজেদের মনকে শান্তনা দিতে পারতাম। এ সময় তিনি এ ধরনের ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
এ বিষয়ে জানতে আইন বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক মানসুরা খানম বলেন, পরীক্ষার সময় তাদের বহিষ্কার করা হয় নাই। কারণ ঐ সময় আমরা অপরাধটি দেখি নাই। কিন্তু যখন তাদের খাতা এক্সামিন করা হয় তখন ১ টি খাতাতে শতভাগ মিল পাওয়া যায়। তারপর তাদের অন্যান্য খাতাগুলো দেখি। মোটামুটি ৩ টি খাতাতে শতভাগ মিল। স্বাভাবিকভাবে এরকম তো কখনো হয় না শিক্ষক-ছাত্র আমরা সবাই জানি।
তিনি আরও জানান, বিভাগের কাছে মনে হয়েছে জিনিসটি নৈতিকতা বিরোধী বা জিনিসটি ঠিক হয় নাই। আমরা সেই মোতাবেক শৃঙ্খলা বোর্ডে তা পাঠিয়েছি। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী শৃঙ্খলা বোর্ডের ক্ষমতা আছে বহিষ্কার করার।
উল্লেখ, বশেমুরবিপ্রবি আইন বিভাগে শিক্ষকের সাথে ব্যক্তিগত আক্রোশের জেরে পরীক্ষার ৭ মাস পর অসদুপায় অবলম্বনের কারণ দেখিয়ে মাস্টার্সে (স্নাতকোত্তর) অধ্যয়নরত দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। একই প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা উপাচার্য বরাবর বহিষ্কার আদেশ পুনবিবেচনার আবেদন জানান।