Home জাতীয় বরিশাল জনতা ব্যাংকে কর্মরত মাহমুদুর রহমানের অপকর্মের ফিরিস্তি

বরিশাল জনতা ব্যাংকে কর্মরত মাহমুদুর রহমানের অপকর্মের ফিরিস্তি

113

বিশেষ প্রতিনিধি : বরিশাল শহরে জনতা ব্যাংকের কর্পোরেট শাখায় সিনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মরত মাহমুদুর রহমান নামক এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে নেশাগ্রস্থ হয়ে জনমনে ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের ফায়দা লুটে আসার ঢের অভিযোগ মিলেছে। অভিযোগ উঠেছে, নানান কিসিমের অন্যায় অনিয়মের মাধ্যমে অবৈধপন্থায় অগাধ বিত্ত বৈভবের মালিক বনে গিয়ে নিজেকে ডন হিসেবে জাহির করছেন তিনি। কাশিপুরের সাধারন মানুষের মাঝে মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে উঠছেন মাহামুদুর রহমান। অদৃশ্য শক্তিতে এই ব্যক্তি ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের এলাকার জনমনে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। এতে এলাকার শান্তিপ্রিয় নারী পুরুষরা নিরবে গুমড়ে গুমড়ে কাঁদছে।
এই মাহামুদুর রহমানের গ্রামের বাড়ি বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রত্মপুর ইউনিয়নের ছয় গ্রামে। তার পিতার নাম মজিবুর রহমান। মাহামুদুরের বিরুদ্ধে মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে মাহামুদুর রহমান সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বর্তমানে ব্যাংকে কর্মরত শুভ সেনের লোক পরিচয় দিয়ে বিভিন্নস্থানে অন্যায় অপকর্মের ফিরিস্তি রচনা করে চলছে।
এসব বিষয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শুভ সেন বলেন, ইদানিং জনতা ব্যাংকে কর্মরত মাহামুদুর রহমানের চলাফেরা, আচার-আচারণ অনেকটা অস্বাভাবিক। এ বিষয়ে ব্যাংকে কর্মরত অন্যান্যদের নিয়ে মাহমুদুর রহমানের আচরনের বিষয়ে আলোচনাও হয়েছে। এবং তাকে শান্তভাবে চলাচল-কথাবার্তা বলার বিষয়ে কলিকরা সচেতন করেন বলে মন্তব্য করেন শুভ সেন।
প্রশ্ন উঠেছে-মাহমুদুর রহমান যদি মানসিক ভারসাম্যহীন,বিকারগ্রস্ত হয়, সেক্ষেত্রে তিনি কোন শক্তিকে কিভাবে সরকারের দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকতে পারেন? নাকি কারো ইশারা ইঙ্গিতে অশুভ শক্তির দাপটে এহেন ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্ম দিয়ে স্ব কর্মস্থলসহ অন্যত্র অর্থনৈতিক ফাঁয়দা হাসিলসহ অনৈতিক সুবিধায় মাঠ দাবড়িয়ে বেড়াছেন বিতর্কিত মাহামুদুর রহমান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশাল সিটির ২৯ নং ওয়ার্ডের কাশিপুরের তহশিল অফিস লাগোয়া হাতেম মীরার পুকুরে বহুতল ভবন থেকে ময়লা আবর্জনা প্রতিনিয়ত ফেলে পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় ঘটাচ্ছে। সেখানকার দুটি বহুতল ভবনের যতসব ময়লা আবর্জনার স্তুপ পুকুরে নিক্ষেপ করায় স্থানীয় নারী-পুরুষের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। ওই পুকুরে স্থানীয় শত শত মানুষ গোসল করেন। এমনকি পুকুর থেকে রান্না বান্নার পানি ব্যবহার করে আসছেন বসবাসরত শতাধিক পরিবার। স্থানীয়রা জানান, ভবন দুটির মধ্যে একটি ভবনের মালিক জনতা ব্যাংকে কর্মরত মাহমুদুর রহমান। আরেকটি ভবনের মালিক ব্যাংকে কর্মরত নোবেল। এই দুটি ভবন থেকে দিনরাত পুকুরে ময়লা ফেলে পুকুরের পানি দুষিত করা হচ্ছে। এ বিষয়ে স্থানীয়রা ভবন দুটি মালিককে ময়লা-আবর্জনা পুকুরে ফেলতে নিষেধ করলেও তারা এসবে কোন কর্নপাত করছে না। শত শত মানুষ যেখানে ওই পুকুরের পানি ব্যবহার করে আসছে, সেই পুকুরে ময়লা প্রতিনিয়ত নানান কায়দায় ময়লা ফেলায় স্থানীয় নারী-পুরুষরা সাংবাদিকদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মাহমুদুর রহমান ও নোবেলের মালিকানাধীন বহুতল ভবন থেকে এভাবে ময়লা ফেলায় দুষিত পানি মানুষ ব্যবহার করছেন।
সরেজমিনে সাংবাদিকরা গত ১৫ মার্চ সোমবার ঘটনাস্থলে গেলে ভবন মালিক মাহামুদুর রহমানের স্ত্রী পরিচয়ে এক নারী বলেন, পুকুরে ময়লা ফেলার জন্য আমাকে সিটি কর্পোরেশন অনুমোতি দিয়েছে। ওই নারী দাম্ভিকতার সুরে বলেন, এ বিষয়টি সিটি মেয়রও জানেন। স্থানীয় মো: কামরুল হাসান লিটন, বাবুল সিকদার, এ্যাড. মো: দুলাল, মেহেদি হাসানসহ অসংখ্য মানুষ বিষয়টির প্রতিকারে বরিশাল সিটি মেয়র, বরিশাল জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর সহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের আশু দৃষ্টি কামনা করেছেন। তাদের ভাষ্য, পুকুরের পানি কোনভাবেই দুষিত করা যাবে না। পুকুরে যারা ময়লা ফেলে দুষিত করে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
এসব বিষয়ে ভবন মালিক জনতা ব্যাংকে কর্মরত মাহামুদুর রহমানের ব্যক্তিগত সেলফোনে আলাপ করলে তিনি পুকুরে ময়লা ফেলার বিষয়টির বিষয়ে কোন ধরণের মন্তব্য না করে এড়িয়ে গিয়ে বলেন আপনার পত্রিকা অফিস কোথায়? অপর ভবন মালিক চকবাজার জনতা ব্যাংকে কর্মরত নোবেলও তার ভবন থেকে পুকুরে ময়লা বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে গিয়ে একই কথা বলেন।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে নেশাগ্রস্থ মাহামুদুর রহমান এর আচার আচরনে নিজেকে মস্তবড় গুন্ডা হিসেবে জাহির করে বলেন আপনি কী জানতে চান? বহুতল ভবন থেকে পুকুরে যত্রতত্র ময়লা ফেলার বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে মাহমুদুর রহমান উগ্র ভঙ্গিমায় অনেকটা ঠাণ্ডা মাথার খুনির মতো আচরন করেন। ব্যাংকে কর্মরত নোবেল এর ভাষ্য, পুকুরে ময়লা আবর্জনা কিংবা অন্য কোন কিছুই নিক্ষেপ করা হচ্ছে না। ড্রেনেজ ব্যবস্থার না থাকার জন্য ময়লা অপসারনে সমস্য হচ্ছে। এ বিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলের সঙ্গে আলাপ করা হয়েছে।