Home জাতীয় বঙ্গবন্ধু সর্ম্পকে জাবি ছাত্রলীগ নেতার বিভ্রান্তিকর তথ্য

বঙ্গবন্ধু সর্ম্পকে জাবি ছাত্রলীগ নেতার বিভ্রান্তিকর তথ্য

229

তানভীর রিফাত অনিক, জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের বিরুদ্ধে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্ম্পকে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে । যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

গত ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য প্রদানের সময় এমন বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ান লিটন। বক্তব্যের একপর্যায়ে বঙ্গবন্ধুর পিতার নামের শুরুতে ‘শেখ’ শব্দটি বাদ দিয়ে শুধু লুৎফর রহমান ও মাতার নাম সায়েরা খাতুনের পরিবর্তে ‘সাহারা খাতুন’ ও বঙ্গবন্ধুর বিবাহ সাল নিয়ে বিভান্তকর তথ্য দিতে থাকেন । প্রথমে ১৯২৮ সালে, পরে ১৯২৪ সালে, শেষে ১৯১৮ সালে বিবাহ আবন্ধ হন বলে বিভ্রাট ছড়ান।

এমনকি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাই-বোনের সংখ্যা নিয়েও ভুল তথ্য দেন এই নেতা। তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন লুৎফর রহমান এবং সায়েরা খাতুনের চার ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে তৃতীয়।’
লিটনের বক্তব্য অনুযায়ী সন্তানের সংখ্যা সাত জন । অথচ উইকিডাটার তথ্য অনুযায়ী শেখ লুৎফর রহমান এবং সায়েরা খাতুনের দুই ছেলে ও চার মেয়েসহ মোট ছয় জন।

লিটন তার বক্তব্যে বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন লুৎফর রহমান এবং সায়েরা খাতুনের চার ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে তৃতীয়। তিনি ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ জন্মগ্রহন করেন। তিনি সাত বছর বয়সে শিক্ষাজীবন শুরু করেন। ১৪ বছর বয়সে বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত হন। ফলে তার শিক্ষাজীবন চার বছর পিছিয়ে পড়ে। শিক্ষাজীবন পিছিয়ে যাওয়ার পরও তিনি দমে যাননি। “তিনি ১৯২৮ সালে না ১৯২৪ সালে না ১৯১৮ সালে জনাব, জনাবা, ১৯১৮ সালে ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করেন।” এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন। এরপর তার রাজনীতিক জীবন শুরুই করেন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে।”

এ বিষয়ে জাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন বলেন, দিনব্যাপী প্রোগ্রামের পূর্ব প্রস্তুতি নেওয়ার ফলে আমি বক্তব্যের প্রস্তুতি নিতে পারি নি। ফলে ভুলবশত বঙ্গবন্ধুর নামে এমন তথ্য বলে ফেলেছি।

কিন্তু বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে এমন বিভ্রান্তিকর তথ্য ছাড়ানোর কারনে তার নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে অনেকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাবি ছাত্রলীগের এক নেতা বলেন, “একজন নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর আর্দশ ধারণ করতে হলে বঙ্গবন্ধু সর্ম্পকে ভালভাবে জানতে হবে। জাতির জনকের নামে তার এমন বিভ্রান্তিকর তথ্যে প্রদানে আমরা লজ্জিত। বঙ্গবন্ধুর পিতামাতার নাম ভুল বলে,বিবাহ সাল নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে তিনি তার নেতৃত্ব যোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকার ও রাজনীতি বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, বঙ্গবন্ধু সর্ম্পকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাধারণ শিক্ষার্থীর কাছ থেকেও এমন অজ্ঞতা কাম্য নয় সেখানে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের এমন বক্তব্য পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য।

শাখা সাধারণ সম্পাদকের এই বক্তব্য ফেসবুকে পোস্ট করেন শাহরিয়ার মাহমুদ নামে একজন শিক্ষার্থী। যা পরবর্তীতে বর্তমান সময়ের আলোচিত কবি ইমতিয়াজ মাহমুদ তার ফেসবুকে আপলোড করলে বক্তব্যটি ভাইরাল হয়ে যায়।

উল্লেখ, হাবিবুর রহমান লিটন গত ৩ জানুয়ারি ২০২২ সালে জাবি শাখা ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনিত হন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ৪৩ তম ব্যাচ(২০১৩-২০১৪ সেশন) শিক্ষার্থী । তিনি পোষ্য কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পান। পোষ্য কোটার শিক্ষার্থীদের জন্য হলে সিট বরাদ্দ না থাকলেও তিনি অবৈধভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে সিট দখল করে আছেন।