Home রাজনীতি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি, এমপি আ.স.ম. ফিরোজের বিরুদ্ধে মামলা

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি, এমপি আ.স.ম. ফিরোজের বিরুদ্ধে মামলা

186

আহমেদ জালাল : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার ষড়যন্ত্র এবং ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাঙচুর ও কটূক্তি করার অভিযোগ এনে পটুয়াখালী-২ (বাউফল) আসনের সংসদ সদস্য, সাবেক চিফ হুইপ ও বিএম কলেজের সাবেক ভিপি আ.স.ম. ফিরোজের বিরুদ্ধে পটুয়াখালী আদালতে নালিশি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাউফল উপজেলার বাউফল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মো. জাহিদুল হক (কালা)(৪৬) বাদী হয়ে মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) পটুয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জামাল হোসেনের দ্বিতীয় আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। (মামলা নম্বর সি আর ৫২০/২১)। আদালতের বিচারক মোঃ জামাল হোসেন আগামী ১৯ ডিসেম্বর আদেশের জন্য দিন ধার্য্য করেছেন। বাদী পক্ষে আইনজীবী হিসেবে মামলাটি পরিচালনা করেন সৈয়দ জাহিদুল ইসলাম ও মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৯ ডিসেম্বর বেলা পৌণে ১২টায় বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় অফিসে বসে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক চিফ হুইপ আ.স.ম. ফিরোজ নেতা কর্মীদের সাথে আলাপ কালে বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান খুন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর ছবিতে জুতা ঝাটা লাগিয়ে আনন্দ মিছিল করেছি। তাতেই কিছু হয়নি, আর বাউফল আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীরা যারা আমার বিরুদ্ধে কাজ করে তাদের ডজন খানেক খুন করলেও আমার (আ.স.ম. ফিরোজ) এর কোনো ক্ষতি হবে না। ওই দিন বাদী সেখানে উপস্থিত থেকে এই কথা শুনে শিউরে ওঠেন এবং পরবর্তীতে তিনি ৭৫ সালের সেই ঘটনা সম্পর্কিত তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেন। এরপর রোববার ১২ ডিসেম্বর বাউফল থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। এর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করার পর বরিশাল শহরে তৎকালীন বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খান আলতাফ হোসেন ভুলুর নেতৃত্বে প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি সকাল আটটার দিকে পেশকার বাড়ির সামনে পৌঁছালে আ স ম ফিরোজের নেতৃত্বে মিছিলে হামলা করা হয়। পরে হামলাকারীরা বরিশাল অশ্বিনী কুমার হলের উত্তর পাশে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ঢুকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি নামিয়ে ভাঙচুর করে আর উল্লাস করে। এবং আ.স.ম. ফিরোজের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর ছবিতে জুতার মালা পড়িয়ে শহরে আনন্দ মিছিল বের করা হয়।
মামলায় স্বাক্ষী করা হয়েছে-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ১৯৭৫ সালে বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর কবির নানক, কৃষকলীগের কেন্দ্রিয় কমিটির সহ-সভাপতি ও ১৯৭৫ সালে বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খান আলতাফ হোসেন ভুলু, বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন ফরাজীসহ ১০ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।
বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদার বলেন, ‘জাহিদুল হক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা এবং তাঁর (জাহিদুল) পরিবার আওয়ামী পরিবার হিসেবে পরিচিত। তবে আমি এ বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি না।’
এ প্রসঙ্গে এমপি আ.স.ম. ফিরোজ বলেন, আমি ৪০ বছর পর্যন্ত সংসদ সদস্য। একটি দল আমাকে নয় বার নমিনেশন দিয়েছে। আমার সম্পর্কে নেত্রী এবং কেন্দ্রিয় নেতারা সব জানেন। এটা দুষ্ট লোকের দুষ্টামি মাত্র। এই মহূর্তে এর বেশি কিছু বলতে পারবেন না বলে মন্তব্য করেন এমপি আ.স.ম. ফিরোজ।
বলাবাহুল্য : সাংসদ আ.স.ম. ফিরোজ ১৯৭০ সালে বরিশাল বিএম কলেজ ছাত্র সংসদের (বাকসু) ভিপি ছিলেন।