Home সাহিত্য ও বিনোদন পদ্মা সেতুর সুফল।।কানায় কানায় পর্যটকে পরিপূর্ণ কুয়াকাটা

পদ্মা সেতুর সুফল।।কানায় কানায় পর্যটকে পরিপূর্ণ কুয়াকাটা

32

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি: কানায় কানায় পর্যটকে পরিপূর্ণ কুয়াকাটা সৈকত। পদ্মা সেতুর সুফলে ঢল নেমেছে পর্যটকের। প্রতিদিনই বাড়ছে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পর্যটকের সংখ্যা। ঈদের ষষ্ঠ দিন অর্থাৎ শুক্রবার কুয়াকাটার শতভাগ হোটেল মোটেল বুকিং রয়েছে। অনেকে রুম না পেয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বাসাবাড়িতে। আগত পর্যটকরা সাগরে ঢেউয়ের সাথে তাল মিলিয়ে আনন্দ উন্মাদনায় মেতেছেন। কেউ সৈকতের বেঞ্চিতে বসে উপভোগ করছেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। এদিকে সীমা বৌদ্ধ বিহার, রাখাইন মার্কেট, ইলিশ পার্ক, গঙ্গামতি, ঝাউ বাগান শুটকি পল্লী, লেবুর বন ও তিন নদীর মোহনায় রয়েছে পর্যটকের উচ্ছাসিত উপস্থিতি। আগত পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।
হোটেল মোটেল ব্যবসায়ী ও স্থানীরা জানান, পদ্মা সেতু দক্ষিণাঞ্চলের পর্যটন খাতের সম্ভাবনার যে দ্বার খুলে দিয়েছে, তার কিছুটা প্রমাণ মিলেছে এবারের ঈদের ছুটিতে। এবার ঈদের পরবর্তিতে মুলত ১২ জুলাই থেকে পর্যটকরা আসতে শুরু করে। পর্যটক বেড়ে যাওয়ায় পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এখন বাণিজ্যও রমরমা।
এদিকে সৈকত এলাকার ফুচকা বিক্রেতা থেকে শুরু করে হোটেল, মোটেল, রেস্তোরা ব্যবসা-সবই এখন জমজমাট। কারন, অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এবারই ঈদের ছুটিতে সর্বাধিক পর্যটক ভিড় করেছে। তবে পর্যটক আসার এ ধারা এখনো অব্যাহত রয়েছে বলে পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
আগত পর্যটকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পদ্মা সেতু হয়ে কুয়াকাটা ভ্রমন এখন স্বস্তিদায়ক। ঢাকা থেকে মাত্র ৬ ঘন্টায় আসা যায়। যে কারনে পর্যটকরা এই সৈকতে ভ্রমনের জন্য আসছেন।
পর্যটক মো.তানভীর আহম্মেদ বলেন, ফেরির ঝামেলা ছাড়াই এই প্রথম পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে কুয়াকাটায় আসলাম। সময়ও লেগেছে কম।
সৈকত লাগোয়া আচার ও ঝিনুক ব্যবসায়ী মো.জহিরুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম অর্থাৎ জুন ও জুলাই মাসে কুয়াকাটা সৈকতে পর্যটকদের তেমন ভীড় থাকেনা। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকেই পর্যটক আসতে শুরু করেছে। তবে ঈদের ছুটিতে সবচেয়ে বেশি পর্যটক হয়েছে। তাই বেচা বিক্রিও বেড়ে গেছে।
হোটেল সমুদ্র বিলাসের ব্যবস্থপনা পরিচালক ডা.ইসমাইল ইমন জানান, গত চারদিন পর্যন্ত হোটেল বুকিং রয়েছে।
হোটেল গোল্ডেন ইন’র ব্যবস্থপনা পরিচালক মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, তার হোটেলের একই অবস্থা। ঈদের পর থেকে পর্যটকের ব্যাপক চাপ রয়েছে। আগত পর্যটকরা যদি অগ্রীম হোটেল বুকিং করে আসে তাহলে ভোগান্তিতে পরবে না বলে তিনি জানিয়েছেন।
কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট এসোসিয়েশন কুটুমের সাধারন সম্পাদক মো হোসাইন আমির বলেন, আগের তুলনায় কয়েকগুণ পর্যটক বেড়ে গেছে। এছাড়া পদ্মা সেতুর সুফল পেতে কুয়াকাটার পর্যটন সংশ্লিষ্টরা কোমর বেঁধে নেমেছেন। নতুন স্থাপনা তৈরির পাশাপাশি পর্যটক আকর্ষণে নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছেন তারা।
কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট এসোসিয়েশন কুটুমের সভাপতি নাসির উদ্দিন বিপ্লব বলেন, নিজস্ব পরিবহনে ঢাকা থেকে কক্সবাজার যেতে যেখানে ১২ ঘন্টা সময় লাগে, সেখানে ফেরিবিহীন কুয়াকাটা আসতে সময় লাগে মাত্র ৬ ঘন্টা। এবার ঈদে একদিকে পদ্মা সেতু দেখা, অন্যদিকে কুয়াকাটা ভ্রমনের জন্য পর্যটকদের সংখ্যা বেশি হয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্যুরিষ্ট পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।