এম এইচ নাহিদ ।। “ওই যে ফেরি আসছে”-রাতের আঁধারে নদীর মাঝখানে নিভু নিভু আলো দেখে ফেরির অপেক্ষার দিন শেষ। এখন সন্ধা নামলেই পদ্মার বুক জুড়ে জ্বলে উঠবে আলোর ঝলকানি। আজ মঙ্গলবার (১৪ জুন) প্রথমবার পুরো পদ্মা সেতুতে বাতি জ্বলল ৪১৫টি  ল্যাম্পপোস্টে। সেতু খুলে দেওয়ার ১১ দিন আগে ওই আলোর ঝলকানিতে উচ্ছ্বসিত পদ্মাপারের মানুষ। ফেরির দোতালা কিংবা উপর তোলা থেকে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ উপভোগ করলেন ফেরিপারাপারের যাত্রীরা। সেতুর ঝলমল আলো দেখতে দুই প্রান্তেই জনতার জটলা ছিল বেশ। নিরাপত্তার কড়াকড়ির কারণে কেউ কাছে না যেতে পারলেও  উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন দূর থেকেই।

জানাগেছে, সরাসরি বিদ্যুৎ সংযোগের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর উভয় প্রান্তের সবক’টি ল্যাম্পপোস্টে সফলভাবে আলো জ্বালানো হয়েছে। আজ সন্ধ্যা ৬ টা ৫৪ মিনিটে মূল সেতু সহ মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তের বাতিগুলো এক সাথে জ্বালায় মুন্সীগঞ্জ ও শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে কয়েকটি ধাপে পরীক্ষামূলকভাবে জেনারেটরের মাধ্যমে আলো প্রজ্বলন করা হয়েছিল।

সূত্র জানায়, পদ্মা সেতুতে ৪১৫টি ল্যাম্পপোস্টের মধ্যে মূল সেতুতে আছে ৩২৮ টি। এছাড়া মাওয়া প্রান্তের উড়ালপথে ৪১ টি এবং জারিরা প্রান্তের উড়াল পথে ৪৬ টি ল্যাম্পপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। এতে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু আলোকিত হবে।

মাওয়া প্রান্তে সেতুর প্রথম পিলার থেকে তিন দশমিক সাড়ে সাত কিলোমিটার বিদ্যুতের লাইন সংযুক্তের কাজ শেষ করেছে মুন্সীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লৌহজং জোনাল অফিস। আর জাজিরার নাওডোবা প্রান্ত থেকে তিন দশমিক সাড়ে সাত কিলোমিটার সেতুতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছে শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। সেতু কর্তৃপক্ষের অনুরোধে গত ৩০ মে পদ্মা সেতুতে বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ শেষ করেছে দুই জেলার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। গত ১৮ এপ্রিল ল্যাম্পপোস্টে বাতি লাগানোর কাজ শেষ হয়। এরপর সেতুতে ক্যাবল টানা হয়।

এই ৪১৫টি ল্যাম্পপোস্ট ছাড়াও পদ্মা সেতুতে আর্কিটেকচারাল লাইট জ্বালানো হবে। বিভিন্ন জাতীয় দিবসে, উৎসবের নকশা করে আর্কিটেকচারাল লাইট জ্বালানো হবে। পিলারের পানির অংশ থেকে রোডওয়ে স্ল্যাব পর্যন্ত সেতু ও ভায়াডাক্টে ওই লাইট অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে জ্বালানো হবে। সেতু চালু হওয়ার পর আর্কিটেকচারাল লাইটিংয়ের কাজ শেষ করা হবে।