Home জাতীয় পথশিশুদের সুরক্ষায় আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠনের সুপারিশ

পথশিশুদের সুরক্ষায় আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠনের সুপারিশ

36

ডেস্ক রিপোর্টঃ পথশিশুদের সুরক্ষায় আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠনের সুপারিশ করেছেন সংসদ সদস্য ও সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা। তারা বলেছেন, বর্তমান সরকার নানা পদক্ষেপ নেওয়া সত্ত্বেও এখনো পথশিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত হয়নি। এক্ষেত্রে সমন্বয়হীনতা অন্যতম প্রধান কারণ। তাই বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দপ্তর ও বিভাগ এবং নাগরিক সমাজ ও পথশিশুদের সমন্বয়ে জাতীয় পর্যায়ে একটি কমিটি গঠন করে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা নিতে পারলেই পথশিশুদের বিদ্যমান সমস্যার করা সম্ভব হবে।
আজ মঙ্গলবার পার্লামেন্ট মেম্বারস ক্লাব মিলনায়তনে পথশিশুদের জন্য কর্মরত ‘স্ট্রীট চিল্ড্রেন এক্টিভিস্টস নেটওয়ার্ক-স্ক্যান’ বাংলাদেশ ও কারিতাস আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে এই সুপারিশ তুলে ধরেন তারা। ‘মহান বিজয় দিবসের প্রত্যাশা ও পথশিশু সুরক্ষায় ক্রস সেক্টর বডি প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্ক্যান সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান মুকুল। প্রবন্ধে তিনি বলেন, সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে পথশিশুদের সুরক্ষায় বিভিন্নমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, তারপরও পথশিশুর সংখ্যা বাড়ছে। সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধমে পথশিশুদের মুলধারায় ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও সমন্বয়হীনতার কারণে প্রত্যাশিত অর্জন সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া বেসরকারি পর্যায়ে প্রকল্প ভিত্তিক নানামুখী কার্যক্রমেও শিশু অধিকার সুরক্ষায় কাঙ্খিত অগ্রগতি নেই।
আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠনের রুপরেখা তুলে ধরে ওই প্রবন্ধে বলা হয়েছে, এই কমিটি প্রয়োজন অনুযায়ী আইনি সহায়তা ও প্রণয়ন, পুর্নবাসন কার্যক্রম পরিবীক্ষন ও মূল্যায়ন, মাদকাশক্ত শিশুদের পুনর্বাসন, শিশু শ্রম ও পাচার বন্ধ করা, পরিবার গুলোকে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি কর্মসচীতে অর্ন্তভুক্তি, গবেষণা, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিবেদন প্রেরণ, ব্যাপকভিত্তিক জনসচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনাসহ পথশিশু কার্যক্রম সমন্বয়ের কাজ করতে পারে। প্রবন্ধে কমিটি গঠনের পাশাপশি পথশিশু সুরক্ষায় বিশেষ নীতিমালা প্রণয়ন ও শিশু অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়।
প্রবন্ধের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও সংসদ সদস্য গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেষ মুজিবুর রহমান শিশুদের সুরক্ষায় বিশেষ কর্মসূচি নিয়েছিলেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার সেই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছে। রাজধানীমূখী মানুষের স্রোত নিয়ন্ত্রণে সরকার গ্রামকে শহরে রূপান্তরিত করার উদ্যোগ নিয়েছে। সাধারণ মানুষের জন্য ৩৩ ধরণের ভাতা চালু করেছে।
পথশিশুদের সুরক্ষায় জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপ করেন সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু। তিনি বলেন, সরকার আইন ও নীতি প্রণয়ন করলেও তার যথাযথ বাস্তবায়ন নেই। তৃণমূলে সচেতনার অভাব রয়েছে। তাই পরিবারের অজান্তে অনেক শিশু পথে নামছে এবং পাচারের শিকার হচ্ছে।
পথশিশুদের মাদকে আসক্তি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন সংসদ সদস্য শিরীন আহমেদ। তিনি বলেন, মাদক বহন করতে গিয়ে মাদকে আসক্ত হচ্ছে। আবার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। এর পিছনে সবসময় সংঘবদ্ধ চক্র কাজ করছে। যা সরকারের একার পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব।
সংসদ সদস্য খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন বলেন, পথশিশুরা বিভিন্ন ধরণের শোষণ ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য পথশিশুদের ব্যবহারের সুনির্দ্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। নির্বচনকে সামনে রেখে সেই ঝুকি বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, সে বিষয়ে এখনই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
কারিতাসের ঢাকা আঞ্চলিক কর্মকর্তা জ্যোতি গোমেজের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে আরো বক্তৃতা করেন র‌্যাব-১০এর কমাণ্ডিং অফিসার এম. ফরিদ উদ্দিন, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের নিখিল চন্দ্র ভদ্র, স্ক্যান সভাপতি জাহাঙ্গীর নাকির, ওয়াল্ড ভিশনের মিঠুন সরকার, এক রঙা এক ঘুড়ির এস এম মাসুদুল ইসলাম নীল, এএসডি’র শাওমী ইমাম, কারিতাসের কামরুন্নাহার প্রমূখ।