Home সারাদেশ পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জের আলোচিত চিন্তা ঋষির হত্যাকাণ্ড

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জের আলোচিত চিন্তা ঋষির হত্যাকাণ্ড

43

নিতিশ চন্দ্র বর্মন পঞ্চগড় প্রতিনিধি: ঘুমন্ত অবস্থায় নিজের শাশুড়ি চিন্তা ঋষির গলার শ্বাসনালি কেটে দেয় মুকুল চন্দ্র রায়। সেখান থেকে অঝরে রক্ত বের হওয়াসহ গোংরাতে থাকে, ছটফট করতে থাকলে মৃত্যু নিশ্চিত করতে এবার ছোরা দিয়ে বুকে ও পেটে একাধিক কোপ মারে। এরপর ঘটনাস্থলেই মারা যায় চিন্তা ঋষি।

এদিকে ঘটনা অন্য দিকে প্রবাহিত করতে লাশ পূজার ঘর হতে টেনেহিচড়ে বের করে বসতবাড়ির ভেতরে নেয় জামাই। সেখানে পরিত্যক্ত রিং স্লাপের পাশে নিয়ে আসার সময় ভিকটিমের নাতনি জামাই মহাদেব ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। তার সহযোগিতায় রিং স্লাপ কূপের ৪ ফুট নিচে ফেলে দেওয়া হয় শ্বাশুড়িকে। এরপর মাটি চাপা দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে তারা।

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জের আলোচিত চিন্তা ঋষির হত্যাকাণ্ড নিয়ে মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কনক কুমার দাস। তার আগে অভিযুক্ত মুকুল চন্দ্র রায় ও মহাদের ঋষিকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরা, মাটি বহনে ব্যবহৃত প্লাষ্টিকের বালতি জব্দ করা হয়।

মুকুল চন্দ্র রায় (৩৬) নীলফামারী জেলার জলঢাকা এলাকার বালাগ্রামের মৃত খগেশ্বরের ছেলে ও মহাদেব ঋষি (২৫) একই জেলার ডিমলা এলাকার উত্তর সোনাখুলি গ্রামের দেবদাস দধির ছেলে।

গত সোমবার দুপুরে দেবীগঞ্জ উপজেলার মধ্যপাড়া থেকে চিন্তা ঋষি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে বেড়িয়ে আসে এ খুনের রহস্য।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, মুকুল চন্দ্র রায়ে সঙ্গে চিন্তা ঋষির মেয়ে রেনুর প্রায় ৬-৭ বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর রেনু ঋষি জানতে পারেন, মুকুল চন্দ্র রায়ের আরেকজন স্ত্রী আছে। এরপর মুকুল চন্দ্র রায়কে তালাক দেয় তার মেয়ে।

বিয়ে বিচ্ছেদের পর রেনু গাজীপুর এলাকায় জীবিকা নির্বাহের জন্য যায়। সেখানে আল আমিন নামের একজনের সঙ্গে প্রথমে প্রেমে ও পরে বিয়ে হয়। কিছুদিন আগে তারা চিন্তা ঋষির বাড়িতে বেড়াতে আসে। ঘটনাটি জানার পর মুকুল চন্দ্র রায় তার সাবেক শ্বাশুড়ি চিন্তা ঋষির বাড়িতে আসে এবং এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। পরবর্তীতে মুকুল চন্দ্র রায় আল আমিন ও রেনু ঋষির সঙ্গে দেখা করে ও তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ায়। একপর্যায়ে রেনু ঋষিকে তার মা ও স্বামীসহ হত্যার হুমকি দেয়।

এদিকে সেখান থেকে ফিরে আসার পর গত ৩১ অক্টোবর সকালে চিন্তা ঋষির বাড়িতে আসে মুকুল। দুপুর বেলায় চিন্তা ঋষির হাতে ২০০ টাকা দিয়ে বাজার থেকে মুরগি কিনে আনতে বলেন। মুরগী আনার পর মুকুল নিজ হাতে রান্না করে। সেই মাংস দিয়ে তারা দু’জনে দুপুরে ও রাতের খাবার খায়। পরে তারা রাতে আলাদা ঘরে ঘুমাতে যায়। এরপর রাত ১২টা হতে ১টার মধ্যে চিন্তা ঋসিকে হত্যা করা হয়