Home জাতীয় নির্যাতন, হেনস্তা, হুমকি প্রদর্শনের ছাত্রলীগ

নির্যাতন, হেনস্তা, হুমকি প্রদর্শনের ছাত্রলীগ

26

স্টাফ রিপোর্টার: ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পেশিশক্তি প্রদর্শনের ঘটনা থামছে না। গত তিন দিনে দেশের তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অপরাধমূলক কাণ্ড ঘটিয়ে আবারো আলোচনায় সংগঠনটি।
দলের নেতাকর্মীদের কেন নিবৃত্ত করা যাচ্ছে না কিংবা এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার শাস্তিই বা কী হচ্ছে? দলটির নেতারা বার বার বলছেন অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। বাস্তবে তার প্রতিফলন অবশ্য খুব একটা দেখা যাচ্ছে না।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেছেন, ‘ছাত্রলীগ একটি বৃহৎ সংগঠন। এই ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হয়। এবারো তাই হচ্ছে। পেশিশক্তি দিয়ে ছাত্র রাজনীতি করার দিন শেষ। এখন বুদ্ধিবৃত্তিক ছাত্র রাজনীতির সময়। আমরা এ বিষয়টিকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। অপরাধ করে কেউ পার পাবে না।’
পুরানো ঢাকার সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের এক ছাত্রী ছাত্রলীগ নেতার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুল ইসলাম আশিকের বিরুদ্ধে।

ওই ছাত্রী বলেন, ‘আমি নিজেও ছাত্রলীগের একজন কর্মী। আশিক বিভিন্ন সময় তার বিশ্বস্ত কয়েক কর্মীর মাধ্যমে আমাকে শারীরিক সম্পর্ক করার প্রস্তাব দেন। তাকে খুশি করলে বড় পদ দেয়ারও আশ্বাস দেন। কিন্তু আমি তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় কর্মীদের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। ক্যাম্পাসে আমার নামে অপবাদ ছড়ান তার কর্মীরা। রাকিব নামে আশিকের এক কর্মী আমাকে নিয়ে অপবাদ ছড়ান। গত বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আমি রাকিবকে জিজ্ঞাসা করি, কেন মিথ্যা অপবাদ ছড়ানো হচ্ছে? ওই সময়ে আশিকের নির্দেশে মারধর ও শ্লীলতাহানি করা হয়। এ সময় আশিক পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন।’

ওই ছাত্রী বলেন, ‘মারধর ও শ্লীলতাহানি করার পর আশিক কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ খান শুভকে ক্যাম্পাসে ডেকে আনেন। এরপর কলেজের ছাত্র সংসদে আমাকে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন ঘটনার বিষয়টি ভুলে যেতে বলেন। ভুলে না গেলে ধর্ষণ করে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেন। এরপর আবারো মারধর করা হয়।’

এ ঘটনায় ওই ছাত্রী থানায় গিয়েছিলেন মামলা করতে। কিন্তু পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির হস্তক্ষেপে পুলিশ মামলা নিয়েছে। তবে মামলার এজাহার থেকে আশিকের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। শনিবার ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। ওই ছাত্রী কলেজের সম্মান দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত। বর্তমানে তিনি স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে আশিকুল ইসলাম আশিক বলেন, ‘ঘটনার সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমার ক্যারিয়ার ধ্বংস করতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এ অভিযোগ আনা হয়েছে। মারধরের যে ঘটনাটি যেখানে ঘটেছে, ওইখানে সিসিটিভি আছে। আপনারা চাইলে সেটা দেখতে পারেন। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। মামলা হয়েছে, পুলিশ তদন্ত করুক। আমার বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ পায় তাহলে যে ব্যবস্থা নেবে আমি সেটা মেনে নেব।’

ওই ছাত্রীকে চেনেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তিনিও সংগঠন করে। আমার ছোট বোনের মতো।’