Home রাজনীতি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়: বামজোট

নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়: বামজোট

25

স্টাফ রিপোটার: বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সভা আজ বাসদ (মার্কসবাদী) কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বামজোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বাসদ (মার্কসবাদী) দলের সমন্বয়ক কমরেড মাসুদ রানা। সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এর সহ-সাধারণ সম্পাদক কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শহিদুল ইসলাম সবুজ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী।
বৈঠকে বক্তারা বলেন, “আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জনমনে ব্যাপক উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। দেশে ন্যূনতম গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও যাতে একচেটিয়াভাবে ক্ষমতায় আসা যায়, সরকার সে লক্ষ্যেই সকল রকম পদক্ষেপ নিচ্ছে। সম্প্রতি ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করে পরিচালকদের মেয়াদ ৯ থেকে বাড়িয়ে ১২ বছর করা হয়েছে, খেলাপিদেরও নতুন ঋণ নেয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ সংশোধন করে, মনোনয়ন পত্র দাখিলের আগেরদিন পর্যন্ত খেলাপি ঋণ পরিশোধের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। সরকারি চাকরি (সংশোধন) বিল ২০২৩ পাশের মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি, স্বশাসিত সংস্থা, রাষ্ট্রায়ত্ত¡ প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় সরকারের অধীন প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত সরকারি কর্মচারিদের নামে কোন ফৌজদারি অভিযোগ থাকলেও পুলিশ গ্রেফতার করতে পারবে না। তাদের গ্রেফতার করতে হলে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে।
ব্যাংক কোম্পানি আইন ও আরপিও সংশোধনের মধ্য দিয়ে সরকার দেশের ব্যাংক লুটপাটকারী ধনিক গোষ্ঠীকে আরও লুটপাটের সুযোগ করে দিল শুধু নয়, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণে যাতে কোন বাধা সৃষ্টি না হয় সে ব্যবস্থাও করে দিল। অপরদিকে সরকারি চাকরি বিল সংশোধনের মাধ্যমে আমলাদের কর্তৃত্ব আরও পাকাপোক্ত করা হল। তাদের ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করা হল।
গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ আইনে আরেকটি সংশোধনী আনা হয়েছে যেটি সরকার অনুগত নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতাকে আরও খর্ব করা হয়েছে। আগে নির্বাচনের বিভিন্ন পর্যায়ে অসঙ্গতির কারণে নির্বাচন বাতিল করার যে ক্ষমতা কমিশনের ছিল, সেটা খর্ব করা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা ফলাফল ঘোষণার পর কমিশন কোন আসনের পুরো ফলাফল স্থগিত করতে পারবে না। শুধু সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত করতে পারবে। এই সংশোধনীর মাধ্যমে কমিশনের ক্ষমতাকে একেবারে শূণ্যের কোঠায় নামিয়ে নিয়ে আসা হল।
এ সবই একটি সাজানো নির্বাচনের চক্রান্ত তা সহজেই বোঝা যায়। এইভাবে সাজানো নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ আর ক্ষমতায় যেতে পারবে না।”
সভায় নেতৃবৃন্দ ফ্যাসিবাদী এই সরকারের বিরুদ্ধে গণআন্দোলনে সর্বস্তরের জনগণকে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানান এবং বামজোটের পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করেন।
সভায় আরো যাঁরা উপস্থিত ছিলেন তাঁরা হলেন বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার ও শামীম ইমাম, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডাঃ ফজলুর রহমান, বাসদ (মার্কসবাদী) দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী ফোরামের সদস্য ডাঃ জয়দীপ ভট্টাচার্য ও রাশেদ শাহরিয়ার, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য মোঃ রুবেল। বৈঠকের শুরুতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় নেতা, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি কমরেড হামিদুল হক স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।