Home জাতীয় বিএসএফের বাধায় ফের বন্ধ কসবা ও সালদা নদী রেলষ্টেশনের কাজ

বিএসএফের বাধায় ফের বন্ধ কসবা ও সালদা নদী রেলষ্টেশনের কাজ

49

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় আবারো ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বাধায় রেলওয়ের কাজ বন্ধ হয়েছে। গত ২৬ ডিসেম্বর রবিবার বিকেল থেকে পুনরায় কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। শূন্যরেখার দেড়শ গজের ভেতর কাজ হচ্ছে এমন অজুহাতে বিএসএফের বাধার মুখে গত ৪ এপ্রিল থেকে বন্ধ ছিলো ঢাকা-চট্রগ্রাম রেলপথের ব্রাহ্মণবাড়িয়া কসবা এলাকার ৩টি পয়েণ্টে কাজ। পরে দীর্ঘ নয়মাস বন্ধ থাকার পর দুই দেশের নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে জটিলতা নিরসনে আলোচনা হলে গত ২৪ডিসেম্বর থেকে পুনরায় বাংলাদেশ রেল কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে শুরু হয় কসবার রেল ষ্টেশন, সালদানদী ব্রীজ ও সালদানদী ষ্টেশনের কাজ। কাজ শুরু হওয়ার তিনদিনের মাথায় পুনরায় কসবা রেলষ্টেশন ও সালদানদী রেলষ্টেশন নির্মানের কাজে বাধা দিলে কাজ বন্ধ রাখেন তমা কন্সট্রাকশনের লোকজন। কিন্তু সালদানদী ব্রীজের কাজে কোনো বাধা দেয়নি বিএসএফ।
সোমবার সকালে বাংলাদেশ রেলওয়ের সিভিল ডিপার্টমেন্টের প্রকৌশলী সোহেল রানা’র সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দীর্ঘ নয়মাস বন্ধ থাকার পর গত শুক্রবার থেকে কাজ শুরু হলেও গত রবিবার বিকেল থেকে বিএসএফের ফের বাধায় এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আবারো তিনটি পয়েণ্টের মধ্যে দুটি পয়েন্টের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। শুধু সালদানদী ব্রীজের কাজের অনুমোদন বিএসএফ হাতে পেয়েছে। কসবা রেল ষ্টেশন ও সালদা নদী রেল ষ্টেশনের কাজের কাগজ হাতে না পাওয়ায় এ দুটি নির্মানাধীন বন্ধে পুনরায় বাধা দিয়েছে বিএসএফ ।
তমা গ্রুপের কর্মকর্তা অনিল চন্দ্র ভৌমিকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন. গত শুক্রবার থেকে কাজ শুরু হয়েছিলো। কিন্তু গত রবিবার বিকেলেই বিএসএফ বাধা দেয়ায় বিজিবির পক্ষ থেকে লোকজন এসে কাজ বন্ধ রাখতে বলেন। তাই গত রবিবার বিকেল থেকে পুনরায় বন্ধ রাখা হয়েছে।
৬০ বিজিবি’র অধিনস্ত কসবা বিওপি’র কোম্পানী কমান্ডার হারুনুর রশিদ বলেন, বিজিবি’র উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে গত রবিবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তিনি তমা গ্রুপের স্থানীয় কর্মকর্তাদের কাজ বন্ধ রাখার জন্য বলেছেন। এরপর থেকে কাজ বন্ধ রয়েছে। তিনি জানান, কসবা ষ্টেশন ও সালদানদী ষ্টেশনে কাজ শুরু করার বিষয়ে সীমান্তের ওপাড়ের বিএসএফ অধিনায়কও কোনো ভারত সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কোনো নির্দেশনা পাননি।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার উপর দিয়ে অবস্থিত ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের সম্প্রসারিত ডুয়েলগেজ রেলপথ প্রকল্পের নির্মান কাজ শুরু হয়। গত এপ্রিল মাস থেকে কসবা, সালদানদী ও মন্দাবাগ ৩টি পয়েন্টের কাজ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বাধায় বন্ধ হয়ে। আন্তর্জাতিক সীমানার অজুহাতে কাজ বন্ধ হয়ে গেলে রেললাইনের পাশে লাল নিশান টানিয়ে দিয়ে সর্তকতা জারি করে বিএসএফ। এতে প্রকল্পে ব্যবহৃত অনেক মূল্যবান নির্মান সামগ্রী নষ্ট হওয়ায় উপক্রম দেখা দেয়। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে অসন্তোষ দেখা দেয়। পরবর্তীতে এ বিষয়টি নিয়ে উভয় দেশের রাষ্ট্রিয় ও নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে আলোচনা হয়। বিষয়টি সমাধানের পর শুক্রবার থেকে কাজ পুনরায় শুরু হয়। কাজ শুরু হওয়া পর ২০২৩ সালের জুন মাসের মধ্যে কুমিল্লা থেকে আখাউড়া পর্যন্ত ৪৭ কিলোমিটার চলমান ডুয়েলগেজ প্রকল্পের কাজ শেষ হতে পারে বলে আশাবাদী ছিল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।