Home রাজনীতি নাটোরের বড় হরিশপুরে নৌকার মনোনয়ন বাতিল না হলে গণপদত্যাগ

নাটোরের বড় হরিশপুরে নৌকার মনোনয়ন বাতিল না হলে গণপদত্যাগ

52

বুলবুল আহমেদ, নাটোর প্রতিনিধি: নাটোর সদর উপজেলার বড় হরিশপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পাওয়া বর্তমান চেয়ারম্যান ওসমান গণির মনোনয়ন বাতিল চেয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদকসহ সকল ওয়ার্ডের সভাপতি-সম্পাদকরা। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অভিযোগ, নানা অপকর্ম, অনিয়ম ও দুর্নীতির সুষ্পষ্ট অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও ভুল তথ্য কেন্দ্রে যাওয়ায় মনোনয়ন পেয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান ওসমান গণি। তাই তার মনোনয়ন বাতিল করা সর্বস্তরের ইউনিয়নবাসী ও দলীয় কর্মীদের একক দাবীতে পরিণত হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এই মনোনয়ন বাতিল করা না হলে ইউনিয়নের সকল আওয়ামী লীগ নেতারা একযোগে পদত্যাগের হুমকি দিয়েছেন।

রোববার(১০ অক্টোবর) দুপুরে শহরের একটি রেস্তোরায় সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা জানান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী তিন নেতা। এসময় তাদের সমর্থন জানিয়ে সেখানে উপস্থিত ছিলেন ৯টি ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।

সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্যে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ সেলিম রেজা বলেন, চেয়ারম্যান ওসমান গণি দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পরদিনই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাংচুর করেন তার ছেলে শফিকুল ইসলাম কালিয়া। তিনি চেয়ারম্যান থাকাকালীন ২০১৬ সালে বাল্যবিবাহ বন্ধের নামে জরিমানার টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না করে আত্নসাত করেন। চেয়ারম্যানের নামে খনন করা সরকারি খালের মাটি বিক্রির মতো গুরুতর অভিযোগ থানায় রয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে সাহায্যপ্রার্থী এক আওয়ামী লীগ নেত্রীর গায়ে হাত তুলে তার সম্মানহানি করেছিলেন চেয়ারম্যান ওসমান গণি। টাকা নিয়ে প্রত্যয়ন দেবার ঘটনায় আদালত ওসমান গণিকে এক ঘন্টার সাজা প্রদান করেন। স্থানীয় সাতগ্রাম কবরস্থানের উন্নয়নের জন্য সেখানকার বাঁশ ও গাছ কাটার টাকা চেয়ারম্যান আত্নসাৎ করলে তাকে কবরস্থান কমিটি থেকে অব্যাহতি দেয়া দেয়। ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের ৭৫ বস্তা সরকারি চাল আত্নসাতের চেষ্টা করেন চেয়ারম্যান ওসমান গণি।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আছলামুর রহমান বলেন, বর্তমানে ইউনিয়ন পর্যায়ের কোনো নেতা চেয়ারম্যান ওসমান গণির পক্ষে নেই। সাধারণ জনগণও তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এই অবস্থায় মনোনয়ন পরিবর্তন করা না হলে নৌকার পরাজয় হতে পারে। প্রার্থী পরিবর্তন করা তাই সময়ের দাবী। তা না হলে গণপদত্যাগ থেকে নেতাকর্মীদের বিরত রাখা যাবে না।

জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী মোঃ রিয়াজুল ইসলাম মাসুম বলেন, ওসমান গণি ভূইয়া একজন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। তার নামে মামলা আছে, তাঁর ছেলের নামে বহু অপকর্মের প্রমাণ রয়েছে। চেয়ারম্যান ওসমান গণিকে নৌকা প্রতীক দেয়ায় হতাশ হয়েছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। ওসমান গনি এলাকায় প্রচার করছেন তিনি ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে মনোনয়ন পেয়েছেন। দলের নীতি নির্ধারণী কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের আবেদন তারা সরেজমিন তদন্ত করে দেখে যাবেন। চেয়ারম্যান ওসমান গণির বিরুদ্ধে সকল অভিযোগের সত্যতা মিলবে। একইসাথে তার নৌকা প্রতীকের ব্যাপারে গৃহীত সিদ্ধান্তের পুনর্বিবেবচনার দাবী জানাই।

এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান ওসমান গনির বক্তব্য জানার জন্য মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

আগামী ১১ই নভেম্বর সদর উপজেলার ৬টি ও বড়াইগ্রাম উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।