Home রাজনীতি নভেম্বর বিপ্লব বার্ষিকী ও বাসদ(মার্কসবাদী) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

নভেম্বর বিপ্লব বার্ষিকী ও বাসদ(মার্কসবাদী) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

43

স্টাফ রিপোটার: ৭ নভেম্বর ১০৪ তম রুশ নভেম্বর বিপ্লববার্ষিকী ও বাসদ(মার্কসবাদী)—র ৪১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ ১২ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাসদ(মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নিবার্হী ফোরামের উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় নিবার্হী ফোরামের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী কমরেড ফখরুদ্দিন কবির আতিকের সভাপতিত্বে ও সদস্য মানস নন্দীর সঞ্চালনায় উক্ত সভায় বক্তব্য রাখেন নিবার্হী ফোরামের সদস্য মোস্তফা ফারুক, আলমগীর হোসেন দুলাল ও ঢাকা নগর শাখার ইনচার্জ নাঈমা খালেদ মনিকা।

সভায় বক্তারা বলেন, ‘ আমাদের পার্টি জীবনে এই প্রথম বাসদ(মার্কসবাদী)—র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হচ্ছে যখন এই পার্টির প্রতিষ্ঠাতা কমরেড মুবিনুল হায়দার চৌধুরী প্রয়াত হয়েছেন। বাসদ(মার্কসবাদী)—র প্রতিষ্ঠার যে আদর্শিক—রাজনৈতিক ভিত্তি মার্কসবাদ—লেনিনবাদ—শিবদাস ঘোষের চিন্তাধারা তা আমরা মুবিনুল হায়দার চৌধুরীর মাধ্যমেই পেয়েছিলাম। তিনিই এদেশে শিবদাস ঘোষের চিন্তাধারা বহন করে নিয়ে এসেছিলেন। এবং এই পার্টি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কেন এই উদ্যোগ তিনি নিয়েছিলেন? আপনারা জানেন, গত দু’বছর ধরে প্রায় গোটা বিশে^ করোনা ভাইরাসের প্রকোপ চলছে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশে^র ৫০ লক্ষেরও বেশি মানুষের জীবনহানি ঘটেছে। গোটা দুনিয়া জ্ঞান—বিজ্ঞানে, প্রযুক্তিতে অগ্রসর হলেও এত এত মানুষের জীবন রক্ষা করতে পারেনি। কারণ, পৃথিবীতে যে উৎপাদন ব্যবস্থা চলছে তা প্রতিনিয়ত প্রাণ—প্রকৃতি ও পরিবেশকে ধ্বংস করছে। কয়েকদিন আগে গ্লাসগোতে জলবায়ু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে – পুঁজিবাদী—সাম্রাজ্যবাদীরা দেখাতে চাইছে তারা পরিবেশ রক্ষায় তৎপর। কিন্তু আপনারা জানেন, বাংলাদেশ সেখানে সম্মতি দেয়নি। সুন্দরবনের পাশেই রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করছে। কল—কারখানা তৈরি করছে। পরিবেশ ধ্বংস হোক কিন্তু পুঁজিবাদীদের প্রয়োজন মুনাফা। মানুষের জীবনের বিনিময়ে হলেও পুঁজিবাদ মুনাফা নিশ্চিত করতে চায়। সে কারণে এই করোনাকালেই আমরা দেখেছি, একদিকে মানুষের জীবন বিপন্ন অন্যদিকে পুঁজিপতিরা আরও বেশি পুঁজির মালিক হয়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, ‘এদেশে আজ দ্রব্যমূল্য অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। মধ্যবিত্ত—নিম্নমধ্যবিত্ত গরীব শ্রমজীবী মানুষ সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। করোনায় জীবন—জীবিকা বিপন্ন হয়েছে। অনেকে চাকুরিচ্যূত হয়েছে – বেকারত্বের দুঃসহ বোঝা ঘাড়ে চেপে বসেছে। প্রায় ৭৭ শতাংশ মানুষের আয় কমেছে। এই অবস্থায় আওয়ামী লীগ সরকার মানুষের জীবনমান রক্ষায় উদ্যোগ না নিয়ে উল্টো এই সময়েই জ¦ালানি তেল তথা ডিজেল—কেরোসিনের মূল্য লিটার প্রতি ১৫ টাকা বাড়িয়েছে। একে অজুহাত করে বাসভাড়াও বাড়ানো হয়েছে। ফলে দ্রব্যমূল্য আরও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। কিন্তু মানুষের প্রকৃত আয় বাড়ছে না। শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য মজুরি নেই। কৃষকের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য নেই। গত ৫০ বছর ধরে এদেশে এই অবস্থা চলছে। অথচ মুক্তিযুদ্ধে এদেশের শ্রমিক—কৃষক মেহনতী মানুষ আত্মাহুতি দিয়েছিল শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। বরং সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে। কেন শ্রমিক—কৃষকের এই সংকট? কোন পথে এই সংকটকে মোকাবেলা করে সত্যিকার মুক্তি অর্জন সম্ভব? এই প্রশ্নের উত্তর প্রথম মানবজাতিকে দিয়েছে মার্কসবাদ। এই মার্কসবাদকে হাতিয়ার করে আজ থেকে ১০৪ বছর আগে রাশিয়ার বুকে মহামতি লেনিনের নেতৃত্বে সেদেশের শ্রমিক—কৃষকরা লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন তথা শ্রমিকরাজ প্রতিষ্ঠা করেছিল। এর মধ্য দিয়ে সেদেশে শ্রমিক—কৃষকসহ আপামর মানুষ মুক্তির স্বাদ পেয়েছিল। তাই আমরা যদি এদেশের মানুষের মুক্তির আন্দোলনকে বেগবান করতে চাই তাহলে রুশ বিপ্লবের প্রেরণা ও শিক্ষা আমাদের গ্রহণ করতে হবে।’