Home জাতীয় তরুণ প্রজন্মকে অসাম্প্রদায়িক ও আধিপত্যবিরোধী সচেতন নাগরিক হতে হবে

তরুণ প্রজন্মকে অসাম্প্রদায়িক ও আধিপত্যবিরোধী সচেতন নাগরিক হতে হবে

35

‘জেন্ডার সমতা ও সমনাগরিকত্ব প্রতিষ্ঠায় গণতান্ত্রিক ও ইহজাগতিক মূল্যবোধ’ বিষয়ক সেমিনার

স্টাফ রিপোটার: তরুণ প্রজন্মকে অসাম্প্রদায়িক ও আধিপত্যবিরোধী সচেতন নাগরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। তারা বলেছেন, সংবিধান রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের সমান মর্যাদা দিয়েছে এবং ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, লিঙ্গ বা জন্মস্থানের কারণে রাষ্ট্র কারো প্রতি কোনো বৈষম্য করবে না বলে অঙ্গীকার করেছে। কিন্তু দেশে বৈষম্য ও আধিপত্য বাড়ছে। এখনো সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটছে।
আজ মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর. সি. মজুমদার মিলনায়তনে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) আয়োজিত ‘জেন্ডার সমতা ও সমনাগরিকত্ব প্রতিষ্ঠায় গণতান্ত্রিক ও ইহজাগতিক মূল্যবোধ’ বিষয়ক সেমিনারে তারা এসব কথা বলেন। সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে বিএনপিএস’র নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর বলেন, স্বাধীনতার অর্ধশত বছর পরেও ধর্মকে সুকৌশলে রাজনীতিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। ঐতিহ্যগতভাবে সম্প্রীতিপূর্ণ এই দেশটিতে ধর্মের ভিত্তিতে মানুষে-মানুষে বিভাজন সৃষ্টি করে বৈষম্যমূলক ব্যবস্থাকে জোরদার করা হচ্ছে। এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে অসহিষ্ণুতা ও সহিংসতার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলা খুবই জরুরি। যুবসমাজ এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষক ড. এ. আই মাহবুব উদ্দীন আহমেদ বলেন, পরিবার ও সমাজে পিতৃতান্ত্রিক মূল্যবোধের চর্চা ও সামাজিকীকরণের মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠার ফলে আমাদের মধ্যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ তৈরি হয়নি। এ কারণে জনগণের অংশগ্রহণমূলক প্রতিনিধিত্ব মেনে নেওয়ার মানসিকতাও তৈরি হয়নি। এসব বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গির মূল কারণগুলো খুঁজে বের করা জরুরি।
ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ড. কাবেরী গায়েন বলেন, নারী-পুরুষের বিদ্যমান বৈষম্য তো আছেই। এছাড়াও ট্রান্সজেন্ডার জনগোষ্ঠীও নানান ধরনের বৈষম্যের শিকার। এ সকল বৈষম্য নিরসনে রাষ্ট্রকে উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি জনগণকেও দায়িত্ব নিতে হবে।
ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগের শিক্ষক ড. মো. তৌহিদুল ইসলাম, বর্তমানে তরুণ সমাজের মধ্যে সম্প্রীতি ও সহিষ্ণুতার ব্যাপক অভাব লক্ষণীয়। বৈচিত্র্য ও বহুত্ববাদকে গ্রহণ করার প্রবণতাও কম। ফলে সমাজে নানান দ্বন্দ্ব ও সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। তিনি বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর দায়িত্ব হলো সংখ্যাল্পদের অধিকার সংরক্ষণে সচেষ্টা থাকা। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী ও তরুণ সমাজের ভূমিকা রাখতে হবে।
ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের শিক্ষক আবু হাসনাত মো. কিশোয়ার হোসেন বলেন, নারীর প্রতি বৈষম্য নতুন নয়। অতীতকাল থেকে তা চলে আসছে, তবে বর্তমানে নারীর প্রতি বৈষম্য ও সহিংসতার ধরণ পাল্টেছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে নারীর প্রতি বৈষম্য নিরসন করতে হবে। আর বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে দেশের সব নাগরিককে ভূমিকা রাখতে হবে।
বিএনপিএস’র পরিচালক শাহনাজ বেগম সুমীর সঞ্চালনায় সেমিনারে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তৃতা করেন মনিরুজ্জামন মাজেদ ও জান্নাতুন নূর তুলি।