Home রাজনীতি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তন নয় বাতিল করুন

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তন নয় বাতিল করুন

19

স্টাফ রিপোটার: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তনের নামে একই রকম নিবর্তনমূলক সাইবার সিকিউরিটি আইন প্রণয়নের চক্রান্ত রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের উদ্যোগে আজ ১১ আগস্ট সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য নিখিল দাস ও সদস্য জুলফিকার আলী।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে লেখক মুশতাককে জীবন দিতে হয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী খাদিজা গত ২ বছর ধরে জেলখানায় বন্দী। সাড়ে ৫ হাজার মামলা এখনো বিচারাধীন। ফলে নিবর্তনমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি বাতিলের দাবিতে দেশের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে সোচ্চার রয়েছে। শুধু তাই নয়, জাতিসংঘসহ দেশি বিদেশি বিভিন্ন সংস্থাও এই কুখ্যাত আইনটি বাতিলের দাবি জানিয়েছে। দেশি বিদেশী নানামুখী চাপে পড়ে সরকার এই দমনমূলক আইনটি বাতিল না করে পরিবর্তনের মাধ্যমে কৌশলে একই ধরনের নিবর্তনমূলক সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নিয়ে গত সোমবার মন্ত্রীসভায় অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৬০টি ধারার সবগুলোই নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনে থাকবে। শুধুমাত্র অজামিনযোগ্য ৮টি ধারা জামিনযোগ্য করা হয়েছে। কয়েকটি ক্ষেত্রে শাস্তির মাত্রা কিছুটা কমিয়ে জেল জরিমানার জায়গায় শুধু জরিমানা করা হয়েছে। ডিএসএর ২১ ও ২৮ ধারা দুটি মত প্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হয়রানীর হাতিয়ার। নতুন আইনে শাস্তি কমিয়ে এ দুটি ধারাও রাখা হয়েছে। ডিজিটাল আইনের ৩২ ধারায় ঔপনিবেশিক আমলের ১৯২৩ সালের অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট বহাল রয়েছে। শাস্তির মাত্রা কমিয়ে এটিও রাখা হয়েছে। বিতর্কিত ৪৩ ধারায় পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতারের অধিকার দেয়া হয়েছে। ধর্ম অবমাননার নামে ব্লাসফেমী আইনের ধারাটিও নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনে থাকবে। আইনমন্ত্রী ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী বলছেন, ‘সাইবার নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার হবে না’। যেখানে আইনটিই অপআইন মানে নিবর্তনমূলক আইন, সেখানে তার প্রয়োগই তো অপব্যবহার ও দমনমূলক হতে বাধ্য। ফলে নতুন আইনের নামে এটি একটি আই ওয়াশ মাত্র এবং জনগণের সাথে চরম প্রতারণা।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, বর্তমান সরকার আবারো ক্ষমতায় আসার জন্য ফন্দিফিকির করছে। ক্ষমতায় থেকেই জাতীয় নির্বাচন করার চেষ্টা করছে। ফলে সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে দেশের জনগণের যে লড়াই তাকে দমন করার জন্যই সাইবার সিকিউরিটি আইনটি করার চেষ্টা করছে। অতীতের স্বৈরশাসকদের মতই নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখা ও বিরোধী মতকে দমন করার কাজে ব্যবহৃত হবে।
নেতৃবৃন্দ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সকল নিবর্তনমূলক কানাকানগুলো বাতিল ও একই ধরনের দমনমূলক সাইবার নিরাপত্তা আইন করার সরকারের চক্রান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সকল প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল প্রেসক্লাব থেকে তোপখানা রোড-পল্টন মোড়-বিজয় নগরসহ বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সেগুনবাগিচাস্থ দলীয় কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।