Home রাজনীতি টিকার জন্য শতশত মানুষ সারারাত লাইনে বসে রাত কাটিয়েছেন–জি এম কাদের

টিকার জন্য শতশত মানুষ সারারাত লাইনে বসে রাত কাটিয়েছেন–জি এম কাদের

42

মাহাবুবুর রহমান: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, গণটিকা কর্মসূচি সফল করে সারা বিশ্ব যখন সব কিছু স্বাভাবিক করে ফেলছে, তখন আমাদের দেশে শতশত মানুষ এক ডোজ টিকার জন্য সারারাত লাইনে বসে রাত কাটিয়েছেন। বিশেষ করে বয়োবৃদ্ধরা সীমাহীন ভোগান্তিতে রাত কাটিয়েছেন শুধু এক ডোজ করোনা টিকা পাওয়ার আশায়। কারণ, গেলো কয়েকদিন তারা বিভিন্ন কেন্দ্রে ঘুরেও টিকা পায়নি। বিশ্বে এমন দুঃখজনক ঘটনা নজিরবিহীন। জাতির জন্য এরচেয়ে লজ্জাজনক সংবাদ আর হতে পারেনা। টিকার জন্য সারা রাত শতশত নারী-পুরুষ লাইনে বসে রাত কাটানোর ঘটনা মূল্যায়ন করলেই প্রমাণ হবে গণটিকা কার্যক্রম কতটা ব্যার্থ। গণটিকা কর্মসূচি সফল করতে অন্তত ২৭ কোটি ডোজ টিকা প্রয়োজন হবে, দেশের মানুষকে বাঁচাতে দ্রুততার সাথে বিভিন্ন সোর্স থেকে টিকা সংগ্রহ করতে হবে। তাছাড়া, গণটিকা কর্মসূচীতে যথাযথ পরিকল্পনা ও সার্বিক সমন্বয় থাকতে হবে।

আজ দুপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে সদস্য প্রয়াত নেতাকর্মীদের স্মরণসভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, টিকা নিয়ে একেক মন্ত্রী একেক ধরনের কথা বলছেন। মন্ত্রীদের কথা এখন আর মানুষ জানতে চায় না। তাদের বক্তব্যে দেশের মানুষ সরকারের ওপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। বাস্তবতা হলো সরকার যা করতে বলছেন দেশের মানুষ এখন আর তা করতে আগ্রহবোধ করছে না।

জাতীয় ওলামা পার্টি আয়োজিত সদ্য প্রয়াত নেতাদের স্মরণ সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, করোনার চিকিৎসা নিয়ে সরকার অনেক বড়বড় কথা বলেছেন, অনেক আস্ফালন করেছেন। বলেছেন, আমরা নাকি করোনার চেয়েও শক্তিশালী। অথচ, চিকিৎসা পেতে ছুটতে গিয়ে দেশের মানুষ পথে-ঘাটে-গাড়িতে ও অ্যাম্বুলেন্সে মারা যাচ্ছে। কিন্তু দেশের মানুষ করোনার চিকিৎসা পায়নি। গ্রাম-গঞ্জে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা কিন্তু চিকিৎসা নেই। প্রতিদিন বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। তিনি বলেন, আমেরিকা ও ভারত শুধু টিকা দিয়ে করোনা নিয়ন্ত্রণে এনেছে। আমাদের যেখানে ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনতে হবে, সেখানে মাত্র ৩ ভাগ মানুষ করোনার টিকা পেয়েছে। সরকার মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে তামাশা করছে, সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পুরোপুরি ব্যার্থ হয়েছে সরকার। লকডাউন সফল হচ্ছে না, কিন্তু দেশের অর্থনীতি ধংস হয়ে যাচ্ছে। করোনা নিয়ে সরকার শুরু থেকেই প্রহসণ করছে। করোনাকালে যারা চিকিৎসার টাকা নিয়ে দুর্নীতি করবে তাদের ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। একদিন জবাব দিতে হবে করোনা আক্রান্তু কতো মানুষ বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন।

অনুষ্ঠানে কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেছেন, ইতিহাস থেকে অনেক রাজনৈতিক দল হারিয়ে গেছে। কিন্তু দেশের মানুষের ভালোবাসায় জাতীয় পার্টি এখনো বেঁচে আছে। তিনি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আদর্শের জাতীয় পার্টিকে আগামী দিনে আরো শক্তিশালী করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে আহবান জানান। জাতীয় পার্টি গণমানুষের সাথে ছিলো, আগামী দিনেও সাধারণ মানুষের রাজনৈতিক শক্তি হিসেবেই মাঠে থাকবে জাতীয় পার্টি।

কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি বলেন, জাতীয় পার্টি আগামী দিনের রাজনীতিতে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় শক্তি। দেশের মানুষ এক বুক প্রত্যাশা নিয়ে জাতীয় পার্টির দিকে তাকিয়ে আছে। তাই জাতীয় পার্টিকে আরো শক্তিশালী করতে সবার প্রতি আহবান জানান তিনি।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি। শোক প্রস্তাব পাঠ করেন, জাতীয় পার্টির দফতর সম্পাদক-২ এমএ রাজ্জাক খান এবং স্মরণ সভা সঞ্চালনা করেন জাতীয় পার্টির যুগ্ম দফতর সম্পাদক মাহমুদ আলম।