Home জাতীয় জাসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর বাণী

জাসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর বাণী

53

জাসদ বরাবরই আন্দোলনে আমাদের সহযোগী হিসেবে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে: প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট: জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আমি এই দলের সকল নেতাকর্মী, সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ২৩ বছরের রাজনৈতিক সংগ্রাম এবং ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা অর্জন করেছি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।
জাতির পিতা যখন যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখনই স্বাধীনতা বিরোধী পরাজিত শক্তি ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট তাঁকে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ নির্মমভাবে হত্যা করে। তাঁকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশে শুরু হয় হত্যা, ক্যু, সংবিধান, লঙ্ঘন, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ধ্যান-ধারণার পুনর্বাসন এবং তাদের রাষ্ট্র-রাজনীতি-সমাজে পুনঃপ্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা। দেশবাসীর ওপর সামরিক শাসনের জগদ্দল পাথর চাপিয়ে দিয়ে কুচক্রী মহল তাদের উদ্দেশ্য অনেকটা চরিতার্থ করতে সক্ষম হয়। দেশ ধাবিত হয় এক অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে।
দেশের এমনি এক ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে আমি ১৯৮১ সালের ১৭ই মে ৬ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে দেশে ফিরে আসি ভাত ও ভোটের অধিকার আদায়ের সঙ্কল্প নিয়ে। ততদিনে কুচক্রীমহল সমাজের অন্ধ্রে দুর্নীতি, অপরাজনীতি এবং সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পের অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে ফেলেছে। শুরু হয় গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের লড়াই।
তৎকালীন পাকিস্তানের ধর্মভিত্তিক বিভাজনের রাজনীতি এবং শোষণ-বঞ্চনা থেকে মুক্তিলাভের উদ্দেশেই এ দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এমন একটি বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন, যে বাংলাদেশ হবে গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক এবং শোষণ ও বৈষম্যমুক্ত। আর সে জন্যই যে সংবিধান তিনি উপহার দিয়েছিলেন সেটি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধম্যনিরপেক্ষতা এবং সমাজতন্ত্র – এই চারটি মূল স্তম্ভের উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
কিন্তু জাতির পিতাকে হত্যার পর ক্ষমতাদখলকারী শাসকচক্র পাকিস্তানী কায়দায় দেশে আবারও বিভাজনের রাজনীতি প্রবর্তন করে সাম্প্রদায়িকতা উস্কে দেয়। দেশে ফিরে এসে আমি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী অসাম্প্রদায়িক এবং গণতান্ত্রিক সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে ভাত ও ভোটের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে লিপ্ত হই।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল বরাবরই মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনায় অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, শোষণ ও বৈষম্যমুক্ত রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আমাদের সহযোগী হিসেবে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে।
আমি আশা করি অতীতের ন্যায় ভবিষ্যতেও জাসদ মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা বিরোধীদের ক্ষমতা দখলের অপরাজনীতির বিরুদ্ধে এবং দেশে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ধারা, উন্নয়ন ও শান্তির রাজনীতি অব্যাহত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
আমি এই দলের সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।