Home সারাদেশ জামালপুরে ভূমিহীন সেজে বন্দোবস্ত নিয়ে জিলা স্কুল শিক্ষকের বাড়ি দখলের চেষ্টা

জামালপুরে ভূমিহীন সেজে বন্দোবস্ত নিয়ে জিলা স্কুল শিক্ষকের বাড়ি দখলের চেষ্টা

18

সুমন আদিত্য, জামালপুর প্রতিনিধিঃ ভুমিহীন সেজে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় রেজাউল হক নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভুমি বন্দোবস্ত নিয়ে আপন চাচাতো ভাইদের বসত বাড়ি দখলের চেষ্টা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে।

এ ছাড়াও রেজাউল হক একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও কয়েক একর জমির মালিক এবং তাঁর স্ত্রী একজন সরকারী চাকুরীজীবি বলে জানান ওই ভুক্তভোগীর পরিবার।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী চাচাতো ভাই জয়নুল আবেদীন বন্দোবস্ত বাতিল চেয়ে জেলা প্রশাকের কাছে আবেদন করলেও প্রতিকার পায়নি। পূর্ব পুরুষের বসত বাড়ি রক্ষা ও বিচারের আশায় প্রশাসনের দ্বারেদ্বারে ঘুরছেন ওই ভুক্তভোগীর পরিবার।

অভিযুক্ত রেজাউল হক উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের কান্দির গ্রাম এলাকার মৃত আমিরুজ্জামানের ছেলে। আর ভুক্তভোগী জয়নুল আবেদীন শরীফ জামালপুর জিলা স্কুলের শিক্ষক এবং ওই এলাকার মৃত রকিবুজ্জামান মাস্টারের ছেলে।

স্থানীয়ভাবে খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত রেজাউল হক ও স্কুল শিক্ষক জয়নুল আবেদীন শরীফ আপন চাচাতো ভাই। তাঁরা দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের কান্দির গ্রাম এলাকার বাসিন্দা। জয়নুল আবেদীন শরিফ ও তার পরিবার বাহাদুরাবাদ মৌজার বিআরএস ১০৮০৪, ১০৮০৫ ও ১০৮০৬ নাম্বার দাগের ভুমিতে প্রায় ৯০ বছর ধরে বসত বাড়ি করে বসবাস ও ভোগদখল করছেন। প্রতিপক্ষ রেজাউল হক নিজেকে ভূমিহীন দাবি করে জয়নুল আবেদীনের বসত বাড়ি খাস জমি দেখিয়ে গোপনে ২০১৫ সালে বন্দোবস্ত করে নেন।

বন্দোবস্তোর বিষয়টি ২০২২ সালে জয়নুল আবেদীন শরীফ জানতে পারেন। পরে বন্দোবস্ত বাতিলের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন। প্রতিপক্ষ রেজাউল হকের নিজস্ব জমি থাকা সত্বেও তিনি ভূমিহীন সেজে বন্দোবস্ত নেওয়ার প্রতারণা করেন। এদিকে প্রতিপক্ষের বন্দোবস্ত বাতিলের আবেদনের বিষয়টি জানতে পেরে রেজাউল হক আদালতে মামলা দায়ের করেন এবং ওই জমিতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। পরে বিজ্ঞ আদালত কারন দর্শানোর আদেশ দেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ‘খাস জমিতে দীর্ঘদিন ধরে জয়নুল আবেদীন শরীফের বাবা ও তাঁর পূর্বপুরুষরা বসত বাড়ি করে বসবাস করে আসছেন। জয়নাল আবেদীনের চাচাতো ভাই রেজাউলের নিজস্ব জমি থাকার পরেও শরীফদের বসত বাড়ির জমি নিজের করে নেওয়ার জন্য নিজেকে ভুমিহীন দাবী করে কৌশলে প্রতারণা করে বন্দোবস্ত নিয়েছেন। এই বিষয় নিয়ে রেজাউল বেশ কয়কেটি মামলা করেছেন’।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী জয়নুল আবেদীন শরীফ অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে ওই জমিতে বসত বাড়ি করে বসবাস করে আসছি। আমার প্রতিপক্ষ রেজাউল হক আমাদের বাড়ির পাশেই বসবাস করেন। তাদের অনেক জায়গা জমি আছে। তারপরেও নিজেকে কৌশলে ভূমিহীন বানিয়ে আমাদের বসত বাড়িরর জমি বন্দোবস্ত নিয়েছেন। বন্দোবস্ত নেওয়ার পর কাউকে কিছু বলেননি তিনি। তিনি কৌশলে প্রতারনার মাধ্যমে এ কাজ করেছেন। আমার নামে ছিনতাইসহ বেশ কয়েকটি মিথ্যা মামলা করেছিল। সেগুলো খারিজ হয়ে গেছে। তিনি আমাদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন। এ ঘটনায় ন্যায় বিচারের দাবি করেন ভুক্তভোগীর পরিবার।

অভিযুক্ত রেজাউল হক প্রকৃত ভূমিহীন কিনা জানতে চাইলে কোন সদুত্তোর না দিয়ে তিনি বলেন, ‘তারাও দীর্ঘদিন ধরে শরীফদের পাশের জমিতে বসবাস করছেন। তাদের জমি আমাদের খাস জমি। আমরা যখন বন্দোবস্ত করি তখন তাদেরকে বলছি তারা কোন বন্দোবস্ত করে নাই। আমরা যে জায়গায় থাকি সেই জায়গা বন্দোবস্ত করে নিয়েছি। সে আবার বন্দোবস্ত বাতিল করার জন্য আবেদন করেছে। সে আমার চাচাতো ভাই হয়। একই বাড়ি আমাদের’।

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স বলেন, ‘একজন সরকারী চাকুরীজীবির চাকরী নেওয়ার ক্ষেত্রে স্থায়ী ঠিকানার প্রয়োজন পরে। স্থায়ী ঠিকানার ক্ষেত্রে অবশ্য নিজস্ব বা পৈত্রিক সম্পত্তি থাকতে হবে। আর নিজস্ব জমি থাকা অবস্থায় কোন ব্যক্তি বা ওই ব্যক্তির পরিবার খাস জমি বন্দোবস্ত পেতে পারেন না’।