Home শিক্ষা ও ক্যাম্পাস জাবি উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে নিয়োগ বোর্ডে ছাত্রলীগের বাঁধা

জাবি উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে নিয়োগ বোর্ডে ছাত্রলীগের বাঁধা

166

জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেনসিং অ্যান্ড জিআইএস’র শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড শুরুর সময়ে বাধা দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের ৩য় তলায় উপাচার্য অফিসের প্রধান গেটে অবস্থান নেয় শাখা ছাত্রলীগের অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মীরা৷ অবস্থান নেওয়ার ফলে স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় এবং উপাচার্য তার নিজ কক্ষে অবরুদ্ধ হয়ে থাকে৷ রিমোট সেনসিং অ্যান্ড জিআইস’র একজন শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২৩ জন প্রার্থীর নিয়োগ বোর্ড শুরু হওয়ার কথা ছিলো সকাল ১০টায়। এ সময় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে প্রার্থীদের উপাচার্য অফিসের অপেক্ষমান কক্ষ থেকে বের করে দেন এবং নিয়োগ বোর্ড যাতে না বসে সে লক্ষ্যে উপাচার্য অফিসের প্রধান গেটে অবস্থান নেয়।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করা শর্তে একাধিক প্রার্থী জানান, নিয়োগ বোর্ড শুরু হওয়ার কথা ছিলো সকাল ১০টায়। আমরা যথাসময়ে উপাচার্য অফিসের অপেক্ষমান কক্ষে বসেছিলাম। এরপর শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী এসে বলেন আজকে নিয়োগ বোর্ড বসবে না এবং আমাদের সেখান থেকে চলে যেতে বলে। তারপর থেকেই আমরা উপচার্য অফিসের বাহিরে প্রায় ২ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলাম।
নিয়োগ বোর্ডে বাধা প্রসঙ্গে শাখা ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক আশরাফুল আলম গোলদার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বিরোধী এমন কারো বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ হোক তা আমরা চাই না৷ আমাদের দাবিটি শাখা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে কয়েকবার জানানো হলেও তিনি তা আমলে নেননি। উপাচার্য স্যার আজকে আমাদের অপারগ হয়ে জানিয়েছেন তিনি চান কিন্তু অনেকের চাপে তা সম্ভব হয় না।তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পরিপন্থী লোকদের শিক্ষক হিসেবে নিবেন না। এবং তাদেরকে শিক্ষক হিসেবে নিতে কোন ধরনের চাপ অনুভব করছেন না। এ বিষয়ে আমরা উপাচার্যের সুস্পষ্ট বক্তব্য চাই। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় রসায়ন বিভাগের তিন প্রভাষককে নিয়োগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ইতোমধ্যে নবনিযুক্ত প্রভাষকরা বিভাগে চাকুরিতে জয়েন করেছেন। এসময় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাদিয়া আফরিন পাপড়িকে নিয়োগ দেয়া হয়নি৷ এ ঘটনার জের ধরে আজ উপাচার্য অফিস অবরোধ করেছে নেতাকর্মীরা। রসায়নসান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নবনিযুক্ত তিনজন প্রভাষক ৩৯ ব্যাচ, ৪৩ ব্যাচ ও ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী৷ তারা প্রত্যেকেই নিজ বর্ষে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে প্রথম বা দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন। তবে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পাপড়ি স্নাতকে চতুর্থ ও স্নাতকোত্তরে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষায় নকল করে বহিস্কৃত ও প্রশ্নফাঁসের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তাই তাকে নিয়োগ দেয়া হয়নি৷ এদিকে প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে নিয়োগ সংক্রান্ত কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর অনিবার্য কারণ উল্লেখ করে নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ বিষয়ে ডেপুটি রেজিস্ট্রার গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, অনিবার্য কারণবশত আজকের নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নিয়োগ বোর্ডের তারিখ এখনো চূড়ান্ত নয়, চূড়ান্ত হলে এরপর জানিয়ে দেয়া হবে।
ইন্সটিটিউট অব রিমোট সেন্সিং’র পরিচালক অধ্যাপক শেখ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের বিভাগের জন্য শিক্ষক নিয়োগ খুবই জরুরি ছিল। একটি শুন্য পদের বিপরীতে ২৩ জন ক্যান্ডিডেট ছিল। তবে বোর্ড স্থগিত হওয়া খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।