Home শিক্ষা ও ক্যাম্পাস জাবিতে বিজয় দিবসের ফিস্টঃ ৪৭৫ টাকা বরাদ্দ সত্বেও কুপন ফি নিচ্ছে প্রশাসন

জাবিতে বিজয় দিবসের ফিস্টঃ ৪৭৫ টাকা বরাদ্দ সত্বেও কুপন ফি নিচ্ছে প্রশাসন

56

জাবি প্রতিনিধি: এ বছর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রত্যেক আবাসিক হলের ছাত্র-ছাত্রী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে ‘উন্নত খাবার’ পরিবেশন করা হবে। ফিস্ট নামে পরিচিত এই উৎসবের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও হল থেকে শিক্ষার্থী প্রতি ৪৭৫ টাকা হারে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দেওয়া এই অনুমোদনে ১৬টি আবাসিক হলে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৬ হাজার ৬শ সাইত্রিশ এবং কর্মকর্তা-কর্মচারী সংখ্যা ৯৮০ জন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এবং জন প্রতি ৪২৫ টাকা হারে মোট ৭৪ লক্ষ ৮৭ হাজার ২২৫ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রত্যেক আবাসিক হল থেকে শিক্ষার্থী প্রতি ৫০ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যেখানে করোনা প্রকোপের আগের বছর বিজয় দিবসের ফিস্টে জনপ্রতি বরাদ্দ ছিল প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩০০, হল থেকে ৫০ এবং কুপন বাবদ ৩০ টাকা।

এবছর প্রত্যেক হলে ফিস্ট খেতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের কুপন মূল্য রাখা হয়েছে ৩০ টাকা। সব মিলেয়ে একজন শিক্ষার্থীর ফিস্ট বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০৫ টাকা। তবে ফিস্টে যা খাওয়ানো হবে তা ৫০৫ টাকা সমমানের কি না এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে গুঞ্জন উঠেছে। পাশাপাশি করোনায় গত তিনটি ফিস্ট অনুষ্ঠিত হয়নি। তার বরাদ্দ নিয়েও মুখ খুলছেন অনেকে।

এবিষয়ে ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাগর হোসাইন বলেন, আমি জানতাম না যে এত টাকা একজনের পিছনে বরাদ্দ দেওয়া হয়। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায় ফিস্টে যে খাবার দেওয়া হয় তার মূল্য ৩৫০ টাকার উপরে হওয়ার কথা না। যেহেতু বরাদ্দ বেশি তাই প্রশাসন চাইলে কুপন ফি না নিলেও পারত।

এ বিষয়ে জাবি সংসদ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রনি বলেন, “হলের ভর্তুকির সাথে প্রশাসন কর্তৃক মাথাপিছু ৪২৫ টাকা বরাদ্দ হওয়ার পরেও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কেন কূপন বাবদ অতিরিক্ত অর্থ নিতে হবে? শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিনামূল্যে খাবার পাবেন আর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হবে! বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন বৈষম্য কেন?
তিনি আরও বলেন, করোনার কারণে দীর্ঘ ১৯ মাস বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় টানা ৩টি জাতীয় দিবসে ফিস্টের আয়োজন করতে হয়নি প্রশাসনকে। ফলে বিশাল অংকের অর্থ খরচ করতে হয়নি। এবার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী সকলের জন্য বিনামূল্যে খাবার পরিবেশন করা উচিত। যে সকল শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ইতোমধ্যে কূপনের মূল্য নেওয়া হয়েছে, তা অবশ্যই ফেরত দিতে হবে। অতীত অভিজ্ঞতা বলে শিক্ষার্থীদের উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করতে কখনই মাথাপিছু ৪০০-৫০০ টাকা খরচ করা হয় না। তাহলে এত মোটা অংকের অর্থের উদ্ধৃতটুকু যায় কোথায়? কার পকেটে?”

এ ব্যাপারে হল প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভাপতি ও পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান বলেন, এবছর জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় বরাদ্দও বাড়ানো হয়েছে। আমি নিজেই বাজারদর যাচাই করে দেখেছি। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার খাবারের মান উন্নত করতে আমরা চেষ্ঠা করে যাচ্ছি। বরাদ্দের পুরো অর্থটা শিক্ষার্থীরা পেল কি না, তা ফিস্ট শেষে শিক্ষার্থীরাই বিচার করবে।”