Home জাতীয় জাতীয় বাজেটে সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক দপ্তর স্থাপনের দাবি

জাতীয় বাজেটে সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক দপ্তর স্থাপনের দাবি

23

আদিবাসী ইউনিয়নের সংবাদ সম্মেলন

ডেস্ক রিপোর্ট; বাংলাদেশের আদিবাসীরা চরম বঞ্চনা ও বৈষম্যের স্বীকার, তারা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠি। জাতীয় বাজেটে আকার বড় হলেও আদিবাসীদের জন্য ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের বাজেট ছিল ৬৭,৮,০৬৪ কোটি টাকা। তার মধ্যে সমতলের আদিবাসীদের জন্য থোক বরাদ্দ ছিল ১’শ কোটি টাকা। যা ৩০ লক্ষ আদিবাসী মানুষের জন্য গড় হিসাব করলে দাঁড়ায় মাত্র ৩৩৩ টাকা। এই পরিমাণ টাকা দিয়ে কি আদিবাসীদের উন্নয়ন সম্ভব ? সমতলের আদিবাসীদের জন্য এই বরাদ্দ তাদের প্রয়োজনের তুলনায় নগন্য এবং এই বরাদ্দ বন্টন এবং ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ার নানা জটিলতার কারণে আদিবাসী জীবনমান উন্নয়নে বরাদ্দকৃত এই বাজেট আদিবাসীদের জীর্ণকুটিরে পৌঁছায় না। জাতীয় বাজেটে সমতলের আদিবাসীদের জন্য ন্যূনতম ৫০০ কোটি টাকার পৃথক বাজেট বরাদ্দ ও পৃথক দপ্তর স্থাপনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়ন।
আজ ২৯ মে সোমবার সকাল ১১ টায় মৈত্রী মিলনাতন পুরানা পল্টনে বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়নের উদ্যোগে জাতীয় বাজেট ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে আদিবাসীদের জন্য জাতীয় বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন ।
সংবাদ সম্মেলনে আদিবাসী নেত্রী রাখী ¤্রং এর সভাপতিত্বে ধারনাপত্র পাঠ করেন সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক অবনী কান্ত হাজং। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে আদিবাসী ইউনিয়নের প্রধান উপদেষ্টা ডা. দিবালোক সিংহ, সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত মাহাতো, সিপিবির সহ সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ।
প্রধান উপদেষ্টা ডা. দিবালোক সিংহ বলেন, এ দেশে আদিবাসী মানুষগুলোর জীবন নানারকম অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সম্মুখিন। সমতলের ৮০% আদিবাসী দরিদ্র সীমার নীচে বসবাস করে। অন্যদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামে ৬৫% আদিবাসী মানুষ দরিদ্র। বিশ^ মহামারি করোনা কালীন সময়ে ৯২% আদিবাসী মানুষ দরিদ্র হয়ে পড়ে। যারা দরিদ্র ছিল না তারাও করোনার সময়ে নতুন করে দরিদ্র হয়ে পড়ে যা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি। মূলত বছরে বছরে বাজেটের আকার বাড়লেও তার প্রতিফলন আদিবাসীদের জীবনে নেই বললেই চলে। কারণ জাতীয় বাজেট আদিবাসী বান্ধব হয় না। এ দেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামো মুল ¯্রােতের মানুষের চিন্তাধারা দ্বারা প্রভাবিত এবং নিয়ন্ত্রিত। বিগত বছরগুলোতে বাজেটে আদিবাসীদের জন্য পৃথক বাজেট উল্লেখ থাকলেও কয়েক বছর হয় তা বাদ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে সমতলের আদিবাসীদের জন্য আলাদা কোন মন্ত্রনালয় বা অধিদদপ্তরও নেই।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচী গুলোর সুবিধা থেকেও আদিবাসীরা বঞ্চিত। বর্তমানে মানুষের মাথা পিছু গড় আয় বেড়ে দাড়িয়েছে ২,৮২৪ ডলারে। কিন্তু একজন গারো, হাজং, কোচ, বর্মণ, রাজবংশী, সাঁওতাল, মাহাতো, পাহান, মাহালি, মু-া, পাহাড়িয়া, মালো, বাগদী ও অন্যান্য যারা আছেন তাদের মাথা পিছু গড় আয়তো ২,৮২৪ ডলারে পৌছানোর আশা সুদুর পরাহত।
সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ সুপারিশ ও দাবিসমূহ তুলে ধরে বলেন, ১০০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচি ভিজিডি, ভিজিএফ, কাবিখাতে দরিদ্র আদিবাসীদের অন্তর্ভুক্তিসহ তাদের জন্য স্থায়ী রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে । জাতীয় বাজেটে বাঙালী,পাহাড়ী ও সমতলের আদিবাসীদের বাজেট বৈষম্য নিরসন করতে হবে। ভূমিহীন আদিবাসীদের খাসজমি বন্দোবস্ত দেয়াসহ গৃহহীনদের জন্য ঘর বরাদ্দের বাজেট নিশ্চিত করতে হবে এবং বরাদ্দ বাড়াতে হবে। আদিবাসী তরুণদের জীবিকায়ন ও কর্মসংস্থানে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ ও দক্ষতাবৃদ্ধি প্রশিক্ষণের জন্য বিশেষ বাজেট বরাদ্দ রাখতে হবে।