Home মতামত জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকার

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকার

219

জিয়াউল হক মুক্তা:

১. নবতর প্রেক্ষাপট
মানুষের তৈরি জলবায়ু পরিবর্তন একটি বৈশ্বিক সমস্যা; সেজন্য এর সমাধানও হতে হবে বৈশ্বিক। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে ২০০৭ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ৮ বছরব্যাপী ‘জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে জাতিসংঘের কাঠামো সনদ’-এর অধীনে পরিচালিত জলবায়ু আলোচনার মাধ্যমে বিশ্বনেতৃত্ব যে ‘প্যারিস চুক্তি’তে উপনীত হয়েছেন, তা নখদন্তহীন একটি অসার ও সীমাবদ্ধ দলিল মাত্র। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী ও অপরাপর দেশ এই চুক্তির অধীনে যেসব ঐচ্ছিক প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বা ক্ষতিগ্রস্ত জনগণকে সহায়তার ক্ষেত্রে সেসবের কোনো বৈপ্লবিক ভূমিকা নেই। বিশেষ করে ক্ষতিকর গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর জন্য দেশগুলো যে ‘জাতীয়ভাবে নির্ধারিত প্রতিশ্রুতি’ ব্যক্ত করেছে, তা যদি শতভাগও বাস্তবায়িত হয় তার ফলে জলবায়ু পরিবর্তন বন্ধ তো হবেই না— বরং, ‘জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি’র ২০২২ সালের ‘এমিশনস গ্যাপ রিপোর্ট’-এর মতে এই শতকের শেষ নাগাদ বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা প্রাক শিল্পায়ন যুগের চেয়ে কমপক্ষে ২.৪ ডিগ্রি থেকে ২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যাবে, এবং তার প্রভাব হবে প্রলয়ংকরী, মানুষের তৈরি নিত্য-কেয়ামতের মতো। মূলত ‘প্যারিস চুক্তি’ হলো ‘মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন থেকে মানবসৃষ্ট নিত্য-কেয়ামতের জন্য প্রতিষ্ঠিত একটি ঐকমত্য’।

২. সংবিধান ও রাজনীতি
বাংলাদেশের বৈধ রাজনৈতিক দলগুলো দেশের নির্বাচন কমিশনের অধীনে নিবন্ধনপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান। নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং সরকার গঠন করে। জাতীয় সংসদের সব সদস্য, প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের মন্ত্রিসভার সব সদস্য এবং দেশের রাষ্ট্রপতি— সবাই সংবিধান সমুন্নত রাখার জন্য সাংবিধানিকভাবে নির্ধারিত ‘শপথ’ পাঠ করার পরই কেবল দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারেন।

২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে ‘রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি’ শিরোনামের দ্বিতীয় ভাগে ‘পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও উন্নয়ন’ শিরোনামে সংযোজিত ‘১৮ক’ ধারায় বলা হয়েছে: “রাষ্ট্র বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করিবেন এবং প্রাকৃতিক সম্পদ, জীব-বৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্যপ্রাণির সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান করিবেন।” বলাবাহুল্য, ‘পরিবেশ’ একটি বৃহত্তর ধারণা, এবং জলবায়ু পরিবর্তন এর অন্তর্গত অন্যতম প্রধান একটি বিবেচ্য। বিশ্বের খুব কম সংবিধানেই এত স্পষ্ট ও বিস্তারিতভাবে এসব বিষয় ব্যক্ত হয়েছে।

বাংলাদেশের সংবিধানের আরও একটি ধারার উল্লেখ করা উচিত, যার প্রাসঙ্গিকতা পরে উপস্থাপন করা হবে, তা হলো— ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে ‘বিবিধ’ শিরোনামের একাদশ ভাগে ‘আন্তর্জাতিক চুক্তি’ শিরোনামে প্রতিস্থাপিত ‘১৪৫ক’ ধারায় বলা হয়েছে: “বিদেশের সহিত সম্পাদিত সকল চুক্তি রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করা হইবে, এবং রাষ্ট্রপতি তাহা সংসদে পেশ করিবার ব্যবস্থা করিবেনঃ তবে শর্ত থাকে যে, জাতীয় নিরাপত্তার সহিত সংশ্লিষ্ট অনুরুপ কোন চুক্তি কেবলমাত্র সংসদের গোপন বৈঠকে পেশ করা হইবে।”

অতএব, বাংলাদেশের সব বৈধ রাজনৈতিক দলের ‘নৈতিক কর্তব্য’ হচ্ছে সংবিধানিক নির্দেশনা অনুসারে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে অবস্থান গ্রহণ করা। তাদের দায়িত্ব হচ্ছে সরকার গঠন করলে সেই অবস্থানের আলোকে নীতি প্রণয়ন, কর্মসূচি ও প্রকল্প গ্রহণ, এবং যথাযথ বরাদ্দ প্রদান করে সেগুলোর বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ করা। উপরন্তু, তাদের ‘সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা’ রয়েছে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোন আন্তর্জাতিক চুক্তি রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করার ও তাঁর মাধ্যমে তা সংসদে উপস্থাপন করার। সংসদে বিরোধী দল ও সব সদস্যের দায়বদ্ধতা রয়েছে উল্লিখিত বিষয়ে প্রস্তাব উপস্থাপন ও মতামত প্রদান করার।

বলা বাহুল্য, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাগণ তাদের উপর অর্পিত দায়িত্বের অংশ হিসেবে প্রায়শ নীতি প্রণয়ন, কর্মসূচি ও প্রকল্প গ্রহণ, এবং বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে সেগুলোর বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ করে থাকেন। এসবের দায়ভারও সরকারের ‘রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষ’ হিসেবে রাজনৈতিক দলকে বহন করতে হয়। সুতরাং রাজনৈতিক দলের দায়বদ্ধতাকে পাশ কাটিয়ে যাবার কোনো উপায় নেই।

৩. জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকার
আলোচনার এই অংশে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ছয়টি রাজনৈতিক দলের দলীয় সাহিত্য অর্থাৎ ঘোষণাপত্র, ও কর্মসূচি এবং নির্বাচনী ইশতেহার থেকে জলবায়ু পরিবর্তন সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো আলোচনা করা হচ্ছে। দলগুলো হচ্ছে: ডান বিচ্যুতির মধ্যপন্থি দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, মধ্যবাম জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, চরম বাম বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, সংসদে অকার্যকর বিরোধী দল ডানপন্থি জাতীয় পার্টি এবং সাবেক বিরোধী দল চরম ডান বিচ্যুতির ডানপন্থি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বা বিএনপি।

৩.১. বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
শুরুতে বলে রাখা ভালো যে এই আলোচনার দ্বিতীয় অংশে বর্ণিত সংযোজন ও প্রতিস্থাপনের সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলের সরকারের বিবিধ গণমুখি উদ্যোগের অন্যতম। সংযোজিত ১৮ক ধারা তৎকালে আওয়ামী লীগের ‘রূপকল্প ২০২১’-এর ৭ম দফার ত উপধারায় বর্ণিত অঙ্গীকারের বাস্তবায়ন, যাতে বলা হয়েছিল ‘আবহাওয়া পরিবর্তন ও বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে উদ্ভূত বিপর্যয় থেকে বাংলাদেশকে সুরক্ষার সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেয়া হবে’।

আওয়ামী লীগের ‘ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্র’ পুস্তকে দলের, দলের নেতৃত্বের এবং সরকারের নীতি, অবস্থান ও কার্যক্রমের মধ্যে জগাখিচুড়ি পাকিয়ে ফেলা হয়েছে।

পুস্তকটির দ্বিতীয় অধ্যায়ে ‘উন্নয়ন ও অগ্রগতির মহাসড়কে বাংলাদেশ’ অংশে বলা হয়েছে, “উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বব্যাপী পরিবেশ বিপর্যয় সমগ্র মানব জাতির জন্য উদ্বেগ ও আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট মোকাবেলা এবং পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য সরকার ধারাবাহিকভাবে প্রথম ও দ্বিতীয় মেয়াদে এ বিষয়ে সবিশেষ গুরুত্বসহকারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। গ্লোবাল ক্লাইমেট রিস্ক ইনডেক্স-২০২০-এ বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ১০টি দেশের মধ্যে সপ্তম অবস্থানে আছে। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন-সংক্রান্ত বিভিন্ন ইস্যুতে আন্তর্জাতিক ফোরামে স্বল্পোন্নত দেশের হয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। সেই ধারা অব্যাহত রেখে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা COP-25-এ বৈশ্বিক নেতৃবৃন্দের প্রতি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেন, ‘আমরা ব্যর্থ হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না।’

“বর্তমান সরকার জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে বাংলাদেশকে রক্ষার জন্য গত ২০০৯ সালে Bangladesh Climate Change Strategy and Action Plan (BCCSAP) তৈরি করেছে। মহান জাতীয় সংসদে এ বিষয়ে একটি প্রস্তাবও পাস হয়েছে। নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলারের বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করা হয়েছে। যার অধীনে ৪৪০টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।

“ডিসেম্বর ২০১৫ সালে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অনুষ্ঠিত United nations Framework Convention on Climate Change (UNFCCC)-এর Partyসমূহের ২১তম সম্মেলন (COP-21) বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি সর্বোচ্চ ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ধরে রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশ গত ২২ এপ্রিল ২০১৬ প্যারিস চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় UNDP-এর সহায়তায় National Adaptation Plan (NAP) তৈরি করেছে এবং এর মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় অভিযোজন কার্যক্রমসমূহ সম্পৃক্ত রেখে ‘জাতীয় পরিবেশ নীতি-২০১৮’ প্রণীত হয়েছে। ….. বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত ২৫ মিলিয়ন মানুষ সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারের সুবিধা পাচ্ছে, যা দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৩ শতাংশ। কৃষিতে ডিজেলচালিত পানির পাম্পের বিকল্প হিসেবে সৌর সেচপাম্প স্থাপন উৎসাহিত করা হচ্ছে। রান্নার কাজ থেকে গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যে ২০ লাখ উন্নত চুলা সরবরাহ করা হয়েছে। দেশব্যাপী বায়ুমান পরিবীক্ষণ ও বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে পরিবেশ অধিদপ্তর ‘নির্মল বায়ু আইন-২০১৯’ এর খসড়া প্রণয়ন করেছে। ঢাকাসহ অন্যান্য শহরে ১৬টি সার্বক্ষণিক বায়ুমান পরিবীক্ষণ কেন্দ্র (CAMS) পরিচালিত হচ্ছে এবং ১৫টি Compact CAMS স্থাপিত হয়েছে। জলাবদ্ধ এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন কৌশল হিসেবে ভাসমান সবজি মসলা উৎপাদন প্রযুক্তি শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১৫ সালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। উপকূলীয় ক্ষয়ক্ষতি কমানোর লক্ষ্যে সবুজ বেষ্টনী সৃজন এবং সমুদ্র ও নদী মোহনা এলাকায় জেগে ওঠা নতুন চর স্থায়ী করার লক্ষ্যে বনায়ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। সমুদ্রের কাছাকাছি নিকট দূরত্বে মোট ২ হাজার ২৮০ কিলোমিটার (রৈখিক দৈর্ঘ্য) উপকূলীয় এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, যার প্রায় ৯৭৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকা ইতোমধ্যে বনায়নের মাধ্যমে সবুজ বেষ্টনী সৃজন করা হয়েছে। ৫১২ কিলোমিটার উপকূলীয় এলাকায় প্রায় ২ লাখ ৮৫ হাজার ৬০ হেক্টর উপকূলীয় বনায়ন করা হয়েছে।”

‘উন্নয়ন-সুশাসনের লক্ষ্য ও কর্মসূচি’ শিরোনামের চতুর্থ অধ্যায়ের ‘জলবায়ু পরিবর্তন, বিশ্ব উষ্ণায়ন, পরিবেশ ও পানিসম্পদ’ উপশিরোনামের অধীনে ‘জলবায়ু পরিবর্তন ও বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা, দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলা এবং পানিসম্পদ রক্ষায় ইতোমধ্যে সরকার কর্তৃক যে সকল সমন্বিত নীতি ও পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা’, ‘বাজেট বরাদ্দ ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার সাথে পরিবেশগত, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সমন্বয় সাধন করার প্রতি জোর প্রদান করা’ এবং ‘পরিবেশ ও পানিসম্পদ রক্ষায় কার্যকর আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা গড়ে তোলা’র অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের সর্বশেষ নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছে, “বিশ্ব উষ্ণায়নের বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশের ১৭ শতাংশ এলাকা থেকে মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। সেই প্রেক্ষিতে পরিকল্পনা ও কর্মসূচি প্রণয়ন করা হবে।” এত আরো বলা হয়েছে, “ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে সাহায্য করার লক্ষ্যে ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড’-এ বরাদ্দ আরও বাড়ানো হবে।”

৩.২. জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ
জাসদের ঘোষণাপত্রে জলবায়ু পরিবর্তন শব্দটি ব্যহার করে সরাসরি কোনো বক্তব্য দেয়া হয়নি; তবে এতে পরিবেশ-প্রকৃতি রক্ষার জন্য কার্যকর জাতীয় উদ্যোগ ও উত্তর-পূর্ব হিমালয় অঞ্চলে যৌথ ও সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। কর্মসূচির ‘পরিবেশ’ অংশে রয়েছে, “প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিনষ্ট হওয়ার প্রবণতা ও পরিবেশ দূষণ প্রক্রিয়া রোধকল্পে কার্যকর নীতি ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা। এ লক্ষ্যে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী কৌশল নির্ধারণে রাজনৈতিক দল ও সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী সংগঠনসমূহের প্রতিনিধিদের নিয়ে পরিবেশ সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি গঠন করা।

দলের নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছে যে জাসদ সরকার গঠনে ভূমিকা রাখলে দেশের প্রাণী ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রচেষ্টা চালাবে। এতে ‘পরিবেশ-প্রকৃতি রক্ষায় বহুপাক্ষিক উদ্যোগ গ্রহণ’ করার কথা বলা হয়েছে। জাসদের নির্বাচনী ইশতেহারে আরো বলা হয়েছে যে দলটি ‘প্রাণবৈচিত্র, পরিবেশ, প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া বিরোধী সকল কার্যক্রম কঠোরভাবে বন্ধ করা, অবকাঠামোসহ যে কোন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে স্থানীয় ও লোকজ জ্ঞানের ব্যবহার এবং স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় জাতীয় নীতি প্রণয়ন করার জন্য ভূমিকা রাখবে।’

৩.৩. বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ২১ দফা কর্মসূচিতে বলা হয়েছে, “উন্নত পুঁজিবাদী বিশ্বের ও সাম্রাজ্যবাদী অর্থনীতির সীমাহীন মুনাফার মনোবৃত্তি বিশ্বজুড়ে কার্বন এমিশন বাড়িয়ে চলেছে। যার পরিণতি(তে) জলবায়ু পরিবর্তন সংঘটিত হচ্ছে। আর এর অভিঘাত সব দেশে পরলেও গরিব দেশগুলোর উপর নেতিবাচক প্রভাব মারাত্মক হয়ে উঠেছে, সেই কারণে বৈশ্বিক জলাবায়ু পরিবর্তনের হুমকি মোকাবেলায় জাতিসংঘের উদ্যোগে গৃহীত প্যারিস চুক্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং স্থানীয় জ্ঞান ও লাগসই প্রযুক্তি ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।”

দলটির নির্বাচনী ইশতেহারে ‘পরিবেশ রক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা’র অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে।

৩.৪. বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি
‘পরিবেশ, প্রকৃতি ও জলবায়ু’ শিরোনামে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির ১৬ নম্বর কর্মসূচিতে ‘প্রকৃতি ও পরিবেশ বিধ্বংসী সকল প্রক্রিয়া রোধকল্পে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা’র কথা বলা হয়েছে। করণীয় হিসেবে এতে আরো বলা হয়েছে: “পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্টকারী কার্যক্রম বন্ধ করে প্রকৃতির সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়ন-ধারা নিশ্চিত করা। বিকল্প জ্বালানি ব্যবহার বহুগুণ বৃদ্ধি করা। সব নাগরিকের জন্য সুপেয় জলের নিশ্চয়তা বিধান করা। পুঁজিবাদী মুনাফাসর্বস্ব পরিবেশ বিধ্বংসী উন্নয়ন ধারার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী আন্দোলন জোরদার করা। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে দায়ী দেশগুলোর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় এবং বাংলাদেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সর্বাঙ্গীন উন্নতি ও দক্ষতা নিশ্চিত করা। প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিনষ্ট হওয়ার প্রবণতা ও পরিবেশ দূষণ প্রক্রিয়া রোধকল্পে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।”

কমিউনিস্ট পার্টির গঠনতন্ত্রে দলের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে অনুচ্ছেদ ১২তে বলা হচ্ছে, “পার্টি পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য, মানুষ ও প্রকৃতি রক্ষায় বিকল্প উন্নয়ন ধারা প্রতিষ্ঠাসহ বহুমুখী ও সামগ্রিক প্রয়াস চালাবে।” দলের কর্মকর্তাদের শপথবাক্যে ‘পরিবেশ, প্রকৃতি, জীববৈচিত্র্য রক্ষা’র বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়াও দলটির নির্বাচনী ইশতেহারে ‘জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা’র কথা বলা হয়েছে।

৩.৫. জাতীয় পার্টি
জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির ওয়েবসাইটে দলটির ঘোষণাপত্র পাওয়া যায়নি। ভিন্নসূত্রে সংগৃহীত জাতীয় পার্টির নির্বাচনী ইশতেহারে পরিবেশ বা জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে কোন বক্তব্য নেই।

৩.৬. বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের কোন ঘোষণাপত্র দলের ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়নি; তবে এর ‘রাজনৈতিক নীতি’ অংশে গঠনতন্ত্র, ৩১ দফা, ১৯ দফা, ১০ দফা ও ভিশন ২০৩০ শিরোনামে কতগেুলো নীতিগত দলীয় সাহিত্য পাওয়া যায় । দলের প্রস্তাবিত ‘জাতীয় সরকার’ যেসব ‘রাষ্ট্র রূপান্তরমূলক সংস্কার কার্যক্রম’ গ্রহণ করবে, তার ৩১টির ২৯তমটিতে ‘জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট ও ক্ষতি মোকাবিলায় টেকসই ও কার্যকর কর্মকৌশল গ্রহণ করা’র কথা বলা হয়েছে। দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ঘোষিত ১৯ দফা কর্মসূচিতে পরিবেশ বা জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে কোন বক্তব্য থাকার কথা নয়; নেইও। বর্তমান চেয়ারপার্সন ঘোষিত দলের ‘ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা’র দলিলটি হচ্ছে ‘ভিশন ২০৩০’। এর জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক অংশে বলা হচ্ছে:

“জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মানবজাতির অস্তিত্ব যেভাবে বিপন্ন হতে চলেছে, তার জন্য বাংলাদেশের মত দেশ দায়ী নয়। জলবায়ু পরিবর্তনের দায়ভার শিল্পোন্নত বিশ্বকে নিতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে শিল্পায়িত বিশ্বকেই এগিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা কাঠামো গড়ে তুলতে বিশ্বজনমত গঠন ও বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণে সক্রিয় ভূমিকা নেবে।” এতে আরও বলা হচ্ছে, “জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা করার জন্য টেকসই Mitigation এবং Adaptation কৌশল গ্রহণ করা হবে, যেমন- কার্বন নিঃসরণ হ্রাস,খাল-বিল-নদী-নালা ও জলাভুমি পুনরুদ্ধার, পরিকল্পিত নগরায়ন ইত্যাদি।”

৪. জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বাংলাদেশের দলীয় সাহিত্যের পর্যালোচনা
(ক) বিশ্বপরিসরে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বিজ্ঞানীগণ পাঁচ দশক ধরে রাজনীতিকদের মনযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করলেও এ নিয়ে ২০০৭ সালে জাতিসংঘ কাঠামো সনদের অধীনে সূচিত নতুন দফা আলোচনা শুরুর পর দেশে দেশে রাজনীতিকগণ সক্রিয় হন। বাংলাদেশে ওই সময়ে ক্ষমতায় ছিল ওয়ান-ইলেভেনের সরকার। পরবর্তীতে প্রায় দেড় দশক ধরে ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলের সরকার। ফলে আওয়ামী লীগ ও তার মিত্ররা জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে যে পারফরম্যান্স দেখিয়েছে তা কারো সাথে তুলনার প্রশ্ন আসে না।

(খ) তবে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংবিধানে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে ধারা সংযোজন, সংসদে গ্রহগত জরুরি অবস্থা ঘোষণা, রূপকল্প ২০২১-এর আলোকে পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রবর্তন ও তার অধীনে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় প্রত্যাবর্তন, জলবায়ু পরিবর্তন কৌশলপত্র ও কর্মপরিকল্পনা পরিমার্জন, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড গঠন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন প্রণয়ন, বদ্বীপ পরিকল্পনা প্রণয়ন, মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা প্রণয়নসমেত অনেক উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ২০০৯ সালে কোপেনহেগেন অ্যাকর্ডে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা বিষয়ে প্রথম বৈশ্বিক নীতিগত আলোচনার সূত্রপাত করেন এবং ২০১১ সালে তিনি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বাস্তুচ্যুতি ও অভিবাসন বিষয়ে জাতিসংঘের অধীনে একটি স্বতন্ত্র আন্তর্জাতিক রেজিম দাবি করেন; কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে প্রধানমন্ত্রীর এসব অবস্থান দল হিসেবে আওয়ামী লীগ গ্রহণ করেনি এবং সরকারের মন্ত্রণালয়গুলো সেগুলো নিয়ে কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করেনি।

(গ) আওয়ামী লীগের দলীয় সাহিত্যে প্রত্যক্ষভাবে ‘সরকার কর্তৃক যে সকল সমন্বিত নীতি ও পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে’ সেগুলোর বাস্তবায়ন করার কথা বলা হয়েছে— যা একটি রাজনৈতিক দলের জন্য সম্মানজনক নয়। রাজনৈতিক দল সরকারের নেতৃত্ব দেয়, সরকারের অনুসারী নয়। আওয়ামী লীগের দলীয় সাহিত্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার উল্লেখ থাকলেও এতে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন কমানো বিষয়ে কোনো নীতিগত নির্দেশনা নেই।

(ঘ) আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার ‘প্যারিস চুক্তি’ রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করেছে কিনা জানা নেই, তবে রাষ্ট্রপতি তা সংসদে উপস্থাপন করেননি এটা সর্বজনজ্ঞাত।

(ঙ) জাসদ জাতীয় কমিটি গঠন, জাতীয় নীতি প্রণয়ন এবং আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক উদ্যোগ গ্রহণের কথা বললেও অতি জরুরি অগ্রাধিকার প্রশ্নে কোনো নীতি নির্দেশনা দেয়নি।

(চ) ওয়ার্কার্স পার্টি সুনির্দিষ্টভাবে প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নের কথা বলেছে, কিন্তু প্যারিস চুক্তির বাস্তবায়ন যে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ২.৪ ডিগ্রি থেকে ২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি করবে সে বিষয়ে দলটি অবহিত নয়।

(ছ) কমিউনিস্ট পার্টি পুঁজিবাদি বিশ্ব ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সংগ্রামের কথা বলেছে, কিন্তু যতোদিন না পুঁজিবাদি বিশ্বব্যবস্থার পরিবর্তন সাধিত হবে ততোদিন জনগণের ভোগান্তি বিষয়ে দলটি নিশ্চুপ। জাতিসংঘের অধীনে বহুপাক্ষিক দরকষাকষি নিয়েও দলটি নিশ্চুপ।

(জ) পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন জাতীয় পার্টির অ্যাজেন্ডায় পুরোপুরি অনুপস্থিত।

(ঝ) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল আন্তর্জাতিক দরকষাকষি এবং অভ্যন্তরীণভাবে নির্গমন হ্রাস ও অভিযোজনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছে যথাযথভাবে, কিন্তু এসব ক্ষেত্রে দলের নীতিগত অবস্থান স্পষ্ট করেনি।

৫. প্রস্তাবনা
আরেকটি জাতীয় নির্বাচন সমাগত। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে কাজ শুরু করেছে। বর্ণিত প্রেক্ষাপটে দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে জরুরি ভিত্তিতে সদয় বিবেচনার জন্য নিচে কতিপয় প্রস্তাব উপস্থাপন করা হচ্ছে:

(ক) রাষ্ট্রপতির কাছে ‘প্যারিস চুক্তি’ পেশ করতে হবে; রাষ্ট্রপতির উদ্যোগে জাতীয় সংসদে ‘প্যারিস চুক্তি’র উপর সাধারণ আলোচনার আয়োজন করতে হবে।
(খ) ‘প্যারিস চুক্তি’র অসারতা ও সীমাবদ্ধতার প্রেক্ষাপটে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার জন্য শিল্পোন্নত ও নির্গমনকারী দেশগুলোর গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন হ্রাসের লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধির জন্য জাতিসংঘের জলবায়ু আলোচনায় অব্যাহতভাবে চাপ প্রয়োগ করতে হবে।
(গ) এই শতকের শেষ নাগাদ বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি প্রাক শিল্পায়ন যুগের চেয়ে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমিত রাখতে নতুন দফা জলবায়ু আলোচনা শুরুর দাবি জানাতে হবে।
(ঘ) জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাস্তুচ্যুতি ও অভিবাসন বিষয়ে জাতিসংঘের অধীনে একটি স্বতন্ত্র আন্তর্জাতিক রেজিম দাবি করতে হবে।
(ঙ) জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক জাতীয় নীতি-দলিলগুলোর মধ্যকার বিশৃঙ্খলা ও সামঞ্জস্যহীনতা নিরসন করতে সাংবিধানিক নির্দেশনার আলোকে সকল জাতীয় নীতি-দলিরের মধ্যে নীতিগত সামঞ্জস্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
(চ) অভ্যন্তীণভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলার জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে; জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের প্রকল্প অনুমোদনের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে; প্রকল্প অনুমোদনে অভিযোজনকে অগ্রাধিকার প্রদান করতে হবে।
(ছ) জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক জাতীয় নীতি ও কর্মসূচি প্রণয়নের ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণসহ সংশ্লিষ্টদের মতামত গ্রহণ করতে হবে।

-লেখক: একজন গবেষক।