Home সাহিত্য ও বিনোদন জমে ওঠেছে সম্মিলিত বাজার-আর্ট মার্কেট

জমে ওঠেছে সম্মিলিত বাজার-আর্ট মার্কেট

11

স্টাফ রিপোটার: টেপা পুতুল ও টেরাকোটা শিল্পী শ্রী সুবোধ কুমার পাল এসেছেন রাজশাহীর উলাপুর থেকে। বংশ পরম্পরায় তারা মৃৎশিল্প নিয়ে কাজ করেন। এটি শুধু পেশা নয়, তাদের পারিবারিক ঐতিহ্যও। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আর্ট মার্কেটে অংশ নিয়েছেন তিনি। তার মতো চারুশিল্পের সাথে সমপৃক্ত বিভিন্ন ধারার শিল্পকর্ম ও হাতে তৈরী ঐতিহ্যবাহী শিল্প পন্য নিয়ে আর্ট মার্কেটে বসেছেন প্রায় ১০০ শিল্পী। রয়েছে বিলুপ্তপ্রায় শিল্প মাধ্যম বায়োস্কোপও। সুরে সুরে লোকজ এই মাধ্যমের সাথে নতুন প্রজন্মকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন বায়োস্কোপ শিল্পী জলিল মন্ডল। একইভাবে ইউনেস্কো স্বীকৃত রিক্সা পেইন্টিং থেকে শুরু করে জামদানী, পাহাড়ি বুনন, গহনা, ভাস্কর্য তৈরীর হাতে খড়ি, উদ্যোক্তাসহ নানা শিল্পপণ্যের পসরা নিয়ে বসেছে শিল্পীরা। শিল্পপন্য শুধু প্রদর্শন কিংবা কেনা-বেচা নয়, পেশাভিত্তিক শিল্প চর্চায় উদ্ধুদ্ধ করতে এবং নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশের লোকসাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরতেই বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির এ আয়োজন।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে ভিন্নধর্মী এ আর্ট মার্কেট চলছে একাডেমির উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ থেকে চলমান এ আর্ট মার্কেট চলবে ৩রা মার্চ পর্যন্ত, বাকি আর মাত্র ৫ দিন। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে সূবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ থেকে শুরু হয়েছে সমসাময়িক নান্দনিক সৃজনকৃত শিল্পকর্ম নিয়ে ভিন্ন ধর্মী আয়োজন শিল্প বাজার বা আর্ট মার্কেট। শিল্পকর্ম/শিল্পপণ্য প্রদর্শন ও বিক্রয়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে শুরু হয় “শিল্প বাজার- ২০২৪”।

মুলত সমকালীন শিল্পচর্চার প্রেক্ষাপটকে বিবেচনা করে নান্দনিক জীবনের জন্য শিল্পের প্রসার, পেশাভিত্তিক শিল্পচর্চায় ’শিল্প বাজার’, নিজ নিজ শিল্পকর্ম বা শিল্পপণ্য তৈরিতে শিল্পীকে আরো বেশী উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করতে এই আয়োজন। এছাড়াও শিল্পী ও শিল্পমাধ্যমের সঙ্গে সম্পৃক্তদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জীবিকা নির্বাহের পন্থা হিসেবেও বিবেচনা করা যেতে পারে।

শিল্প বাজারের এই আয়োজনকে আরো বিস্তৃত করার লক্ষ্যে দেশের অন্যতম শিল্প ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ, শিল্পী ও উদ্যোক্তাগণদের সম্পৃক্ত করা হয়েছে। “শিল্প বাজার- ২০২৪” এ মূলত শিল্পী, শিল্প- উদ্যোক্তাদের তৈরি করা শিল্পকর্ম/ শিল্পপণ্য দেশের জনগণের কাছে পৌছে দেওয়ার একটি ক্ষেত্র তৈরি করবে যা শিল্পসম্মত ক্রেতা ও শিল্প সংগ্রাহক হতে উদ্বুদ্ধ করবে। এ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে চারুশিল্পের সমকালীন ধারা, শিল্পকর্ম, ঐতিহ্যবাহী পণ্য, উদ্যোক্তা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সকল মাধ্যমের তৈরী সৃজনশীল পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রয়ের লক্ষ্যে অনন্য সম্ভার ‘শিল্পবাজার ২০২৪’। প্রতিদিন রাত ৮.৩০টায় অনুষ্ঠিত হয় শিল্পবাজার ব্যান্ড সংগীত।

২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ আর্ট মার্কেটের উন্মুক্ত মঞ্চে ব্যান্ড সঙ্গীত পরিবেশিত হয়েছে। শিল্পী সানজিদা রিমি পরিবেশন করেন ‘আমায় ডেকো না’, ‘নি:স্ব করেছো আমায়’, ‘শ্রাবনের মেঘগুলো জড়ো হলো আকাশে’ এবং ‘সেই তুমি কেন এতো’।

জয় শাহরিয়ার পরিবেশন করেন ‘সত্যি বলছি’, ‘তোমাকে আসতেই হবে’, ‘আমি নেই’ এবং ‘ভালো আছি ভালো থেকো’।

এলিটা করিম পরিবেশন করেন ‘হ্রদয়ে ঝরে’, হঠাৎ দুজনে’, ‘আবার এলো যে সন্ধ্যা’ এবং ‘হাসতে দেখো গাইতে দেখো’। সবশেষে শিল্পী মং পরিবেশন করেন ব্যান্ড সঙ্গীত ‘নীলা তুমি’, ‘পূর্ণতা’, এবং বাংলাদেশ।

‘নান্দনিক জীবনের জন্য শিল্পের প্রসার পেশাভিত্তিক শিল্পচর্চায় শিল্প বাজার’ প্রতিপাদ্যে আর্ট মার্কেট চলবে ০৩ মার্চ ২০২৪ পর্যন্ত, প্রতিদিন বিকাল ৪.০০টা থেকে। পুরো আয়োজন সকলের জন্য উন্মুক্ত।
প্রায় ১০০ টি শিল্প পণ্যের স্টল বসেছে শিল্পকলা একাডেমিতে । এর মধ্যে চারুশিল্পী ও উদ্যোক্তাদের জন্য ক. ঐতিহ্যবাহি ধারা (২০ টি স্টল) বরাদ্দ দেয়া হয়েছে খ.সমকালীন ধারায় একক ও দলগতভাবে ৩০ টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে থাকবে চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (৮ বিভাগ), চারুকলা বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; চারুকলা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়; শান্ত-মরিয়ম বিশ্ববিদ্যালয়, চারুকলা বিভাগ; ইউডা;চারুকলা বিভাগ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়; চারুকলা বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং চারুকলা বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। রয়েছে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থাদের সৃজনকৃত শিল্পপণ্য।

এছাড়াও সূবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে রয়েছে বছরব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালা।