Home রাজনীতি চ্যালেঞ্জের মুখে বাজেট: সিপিবি

চ্যালেঞ্জের মুখে বাজেট: সিপিবি

32

দুর্নীতি, বৈষম্যমুক্ত, গণতান্ত্রিক সমাজ গড়া ও
সুশাসনের বাজেট প্রণয়নের দাবি

স্টাফ রিপোটার: আসন্ন জাতীয় বাজেট ২০২৩-২৪ কে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) নেতৃবৃন্দ বলেছেন ‘চ্যালেঞ্জের মুখে বাজেট ২০২৩-২৪’। ‘নিম্ন প্রবৃদ্ধি, সর্বোচ্চ মূদ্রাস্ফীতি, সর্বনিম্ন বৈদেশিক মূদ্রার রিজার্ভ, শহরাঞ্চলে সর্বোচ্চ আয় বৈষম্য, গণতন্ত্রহীনতা ও কর্তৃত্বপরায়ণতা, বৈদেশিক চাপ’-এসবের মধ্যে বাজেট হতে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাজেটের ধারাবাহিকতায় দেখা যায় ধনী অভিমুখী প্রবণতা, শহর অভিমুখী প্রবণতা, মেগা প্রজেক্টের অপচয় ও বৈদেশিক নির্ভরতা বাজেটে জনকল্যাণ বয়ে আনে না।
আজ ৩০ মে মঙ্গলবার, সকাল সাড়ে ১১টায় পুরানা পল্টনস্থ মুক্তিভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ, সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহীন রহমান, এ এন রাশেদা। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ ডা. ফজলুর রহমান, সদস্য আহসান হাবিব লাবলু, অ্যাড. আনোয়ার হোসেন রেজা, অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন, লুনা নূর।
সংবাদ সম্মেলনে আইএমএফ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গণবিরোধী শর্তাবলী ও চাপের কাছে নতি স্বীকার না করে দুর্নীতি-বৈষম্যমুক্ত, গণতান্ত্রিক সমাজ গড়া ও সুশাসনের লক্ষ্যকে সামনে রেখে বাজেট প্রণয়নের দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্য হ্রাসের জন্য প্রগতিশীল প্রত্যক্ষ করনীতি ও প্রগতিশীল ভ্যাটনীতি চালু, শিক্ষা-স্বাস্থ্য-সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি, প্রয়োজন অনুযায়ী ও বাস্তবায়ন ক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, সেগুলি দুর্নীতিহীনভাবে বণ্টনের দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আয়-ব্যয়ের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত, জনসাধারণের জন্য রেশন ও ন্যায্যমূল্যের দোকান চালু, ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সুনিশ্চিত, কৃষকের জন্য ন্যায্য মূল্যে উপকরণ প্রদান, ক্ষুদ্র শিল্প ও কর্মসংস্থান খাত তৈরি, জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নিশ্চিত, আমদানি নির্ভরতা ক্রমশঃ কমিয়ে আনার জন্য দেশীয় শিল্পের বিকাশ ঘটানো, পাচারের টাকা, খেলাপী ঋণ উদ্ধারের বিশেষ ভূমিকা নেওয়া, বৃহৎ প্রকল্প সম্পর্কে মূল্যায়ন করে প্রকল্প গ্রহণ, সর্বত্র স্বচ্ছতা, জবাবদিহীতা ও স্থানীয় মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন, জলদস্যু-ভূমিদস্যু-বনদস্যুদের শাস্তি বিধান, ঋণখেলাপী ও টাকা পাচারকারীদের শাস্তি, ঘুষ-দুর্নীতির উৎপাটন, বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে সমবায়ী উৎপাদক-ভোক্তা বাজার ব্যবস্থা চালু করার দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, ধনিক তোষণের ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে বৈষম্য কমবে না। বেসামরিক-সামরিক আমলাদের পরিবর্তে সাধারণ মানুষের স্বার্থে বরাদ্দ বাড়িয়ে সঠিকভাবে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি বলেন, মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে নয়-ছয় হয় অথচ শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সেবা খাতে অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন হয় না, এটা সরকারের ব্যর্থতা। ঋণখেলাপী বহাল রেখে, টাকা পাচারের সুযোগ দিয়ে জনগণের টাকা ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। এটা বন্ধ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, মিশ্র অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে হবে। এ জন্য রাষ্ট্রীয় ও সমবায়ী খাতকে প্রধান করে তুলতে হবে। দেশীয় উৎপাদনের সুযোগ দিতে হবে।