Home জাতীয় গ্রাম পর্যায়ে দক্ষতা কর্মসূচির মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়নে অংশ নিচ্ছে সিমেক ফাউন্ডেশন

গ্রাম পর্যায়ে দক্ষতা কর্মসূচির মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়নে অংশ নিচ্ছে সিমেক ফাউন্ডেশন

204

ডেস্ক রিপোর্ট: গ্রামীন মানুষের দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমেই প্রকৃত জাতীয় উন্নয়ন সম্ভব। জনকল্যাণমূলক সংগঠন সিমেক ফাউন্ডেশনের উদ্যেগে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠকদের সংবর্ধনা ও চ্যারিটি ডিনার অনুষ্ঠানে এমন মত দেন বক্তারা। ২৭ মার্চ সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরায় একটি কনভেনশন হলে আয়োজিত সেই অনুষ্ঠানে মানুষের জীবন বাঁচাতে এগিয়ে আসা স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের অভিনন্দন জাননো হয়। বিশেষ সংবর্ধনা জানানো হয় গ্রামীন জনগোষ্ঠীর জন্য বিভিন্ন সেবামূলক কাজে নিয়োজিত সিমেক ফাউন্ডেশনের সংগঠক ও স্বেচ্ছাসেবীদের। ফাউন্ডেশনটির প্রতিষ্ঠাতা ইঞ্জিনিয়ার সরদার মোঃ শাহীন অনুষ্ঠানে উপস্থিত সংগঠক, স্বেচ্ছাসেবী, সেবাগ্রহীতাসহ শুভাকাঙ্খীদের প্রতি মানবসেবায় ব্রতী হবার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কিছু করার মধ্য দিয়েই জীবন সার্থক হয়। সেই ভাবনা থেকেই সিমেক ফাউন্ডেশন মানুষকে শুধু সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়ে থেমে থাকতে চায়নি। বরং কীভাবে মানুষকে দক্ষ করে তোলা যায়, শিক্ষা ও প্রশিক্ষনের মাধ্যমে স্বনির্ভর ও কর্মমূখী করে তোলা যায় তেমন চিন্তা নিয়ে চালু করেছে বিভিন্ন কর্মসূচি। সিমেক ফাউন্ডেশনের জনসেবামূলক কর্মসূচির সুফলপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রী, যুবক ও নারীরা সমবেত হয়ে ভবিষ্যতে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

দীর্ঘ দুই যুগ গ্রামীন মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে জনসেবামূলক হিতৈষী প্রতিষ্ঠান সিমেক ফাউন্ডেশন। স্কুল পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তিপ্রদান, দুস্থ নারীদের জন্য বিনামূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণ, মেধাবী তরুণ ও যুবকদের জন্য বিনামূল্যে কম্পিউটার প্রশিÿণের মাধ্যমে গ্রামীণ উন্নয়নে ভ‚মিকা রাখছে এই সংগঠনটি। এছাড়াও জনসচেতনা সৃষ্টি, শোনিম শাহীন কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে বিনামূল্যে গ্রামীন অস্বচ্ছলদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান ও বিনামূল্যে রক্তদান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে এই সেবামূলক প্রতিষ্ঠানটি। কোন বিদেশি সংস্থার প্রকল্প বা সরকারি সহযোগিতা ছাড়াই সিমেক গ্রুপের জনকল্যাণমূলক কাজের অংশ হিসেবে এই ফাউন্ডেশনের কর্মসূচির সুফল পাচ্ছেন গ্রামীন জনগোষ্ঠী। সিমেক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার ২৬ টি স্কুল ও কলেজে ৫ম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত দরিদ্র অথচ মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য সাহিয়া-মজিদ শিক্ষাবৃত্তি দেয়া হয়। প্রতি বছর অন্তত ২০০ ছাত্র-ছাত্রী এই শিক্ষাবৃত্তির সুফল পায়। অনুষ্ঠানে আগত এইচএসসি পরিক্ষার্থী এ ছাত্রী জানায়, সাহিয়া-মজিদ শিক্ষাবৃত্তি না পেলে তার বাল্যবিয়ে হয়ে যেতো। পরিবার ও সমাজের চাপে পড়ে অনেক মেয়েকেই বাল্যবিয়ে মেনে নিতে হয়। কিন্তু সিমেক ফাউন্ডেশনের বৃত্তির সুযোগ কাজে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে মা-বাবাকে রাজি করাতে পেরেছে বেশ কয়েকজন ছাত্রী। ফাউন্ডেশন পরিচালিত সাহিয়া-মজিদ শিক্ষাবৃত্তির অন্যতম শর্ত হল বাল্যবিয়েতে নিষেধাজ্ঞা। এর পাশাপাশি বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নিয়ে নিয়মিত কর্মশালা ও উদ্বুদ্ধকরণ সভা আয়োজন করা হয়, যেখানে উচ্চশিক্ষার গুরুত্ব ও বাল্যবিয়ের ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরেন ফাউন্ডেশন সংগঠকেরা। ফাউন্ডেশনের সবচেয়ে জনপ্রিয় উদ্যোগগুলোর একটি হলো আবুল কালাম মন্ডল কম্পিউটার ট্রেনিং প্রকল্প। এ পর্যন্ত অন্তত পনেরো শ’ ছাত্র-ছাত্রী এই ট্রেনিং গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে অনেকেই উদ্যোক্তা হয়ে কম্পিউটার ও ডিজিটাল সেন্টার গড়ে তুলেছে নিজেদের গ্রামে। বিনামূল্যে পরিচালিত এই কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টাওে প্রশিক্ষণ নিয়ে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছে ত্রিশাল ও গফরগাও উপজেলার যুবক-যুবতীরা। গ্রাম পর্যায়ে কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার চালুর মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করতে ভ‚মিকা রেখেছে সিমেক ফাউন্ডেশন। গ্রামীণ দুঃস্থ ও অসহায় নারীদের বিনামূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণ দিতে সিমেক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগের নাম আফসানা খানম সেলাই প্রশিক্ষন প্রকল্প। এই প্রকল্পের মাধ্যমে এরই মধ্যে ৫০০ গ্রামীণ নারী উপকৃত হয়েছে। সেলাইয়ের দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে অন্তত ৩০০ জন নারী স্বাবলম্বী হয়েছেন। সামাজিক উন্নয়নে অংশ নিয়ে ত্রিশাল উপজেলার দক্ষিণ বালিপাড়া ইউনিয়নে সিমেক পল্লী গড়ে তোলার কাজ হাতে নিয়েছে সিমেক ফাউন্ডেশন।