Home রাজনীতি গণবিরোধী সরকার মানুষের কষ্ট বোঝে না–জি এম কাদের

গণবিরোধী সরকার মানুষের কষ্ট বোঝে না–জি এম কাদের

35

স্টাফ রিপোটার : জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনতো জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলছেন, দেশ পরিচালনায় সরকার সম্পূর্ণ ব্যার্থ। তেলের দাম বাড়িয়ে মানুষের কষ্ট বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, তেলের দাম না বাড়ালেও পারতো সরকার। ভ্যাট-ট্যাক্স না নিলে এবং জ্বালানী তেলের অর্জিত মুনাফা সমন্বয় করলেই জ্বালানি তেলের দাম বাড়াতে হতো না। যে সরকার তেলের দাম বাড়িয়ে মুনাফা করে কিন্তু মানুষের কষ্ট বোঝেনা সেই সরকার জনগনের সরকার না। গণবিরোধী সরকার মানুষের কষ্ট বোঝে না। সরকার বিভিন্নভাবে মুনাফা করে, উন্নয়ন ও মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে লুণ্ঠন করছে। সরকার মুনাফার টাকা ব্যাংকে রাখছে, নামে-বেনামে সেই টাকা ঋণ করে বিদেশে পাচার করছে একটি শ্রেণি। প্রজাতন্ত্রের নামে দেশে এক ব্যাক্তির শাসন তৈরী হয়েছে। গণতন্ত্রের নামে দেশে স্বৈরাশসন চলছে। উন্নয়নের নামে দেশে ঘুষ ও দুর্নীতির জোয়ার বইছে।

আজ দুপুরে সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম রব্বানী জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপির হাতে ফুল দিয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। এসময় তাকে স্বাগত জানিয়ে দেয়া বক্তব্যে গোলাম মোহাম্মদ কাদের একথা বলেন।

এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, গেলো বছর শুধু সুইস ব্যাংকেই বাংলাদেশ থেকে জমা হয়েছে প্রায় ৪ লাখ কোটি টাকা। আমেরিকা, কানাডা, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরসহ অন্যান্য দেশে আরো অনেক টাকা পাচার হয়েছে। তথ্য চাইলেই সুইস ব্যাংক তথ্য দিচ্ছে কিন্তু বাংলাদেশ সরকার পাচারকারীদের তথ্য চাচ্ছে না। কারণ, যারা টাকা পাচার করেছে তারা সরকারে এবং সরকারী দলের লোক। তারা যেন পাচারকারী হিসেবে চিহ্নিত না হয় সেজন্যই পাচারকারীদের তালিকা প্রকাশ করছে না সরকার। সরকার বলছে ৪০ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ আছে কিন্তু সেই তথ্যে গলদ রয়েছে। ডলারের দাম ১২৩ টাকা পর্যন্ত হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে ২’শ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তিনি বলেন, সংসদে আমরা কথা বললে কাজ হয় না। আমাদের পরামর্শ, কথার কথা হয়ে গেছে। উন্নয়ন কর্মকান্ড ঋণ নির্ভর হয়ে পড়েছে। আবার পরিচালন ব্যায় ট্যাক্সের ওপর নির্ভরশীল। ট্যাক্স আদায় লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী না হলে, বেতনÑভাতা পরিশোধে ঝামেলা হতে পারে।

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এসময় আরো বলেন, লোডশেডিং কেন? উৎসব করা হলো আমরা নাকি বিদ্যুৎ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ? আমরা যখন বলেছি দেশ শ্রীলংকার পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে, তখন সরকারী দলের পক্ষ থেকে বলা হলো আমি নাকি অশিক্ষিত। তাহলে এখন লোডশেডিং কেন? সারাদিন বিশ^ব্যাংক, আইএমনএফ এবং এডিবিকে গালাগাল করে এখন কেন ঋণের জন্য তাদের পিছনে ধর্ণা দিতে হচ্ছে? কেন এই অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি হলো? বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেই কুইক রেন্টাল, রেন্টাল এবং ক্যাপাসিটি চার্জের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করা হচ্ছে।

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ সময় আরো বলেন, দেশে বিরাজনীতিকরণ চলছে। রাজনীতি চিরতরে ধংসের পায়তারা চলছে। রাজনীতিতে প্রতিযোগিতার বিপরীতে প্রতিহিংসা শুরু হয়েছে। আগামী নির্বাচনে যারা পরাজিত হবে তারা যেন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। আওয়ামী লীগ পরাজিত হলে, আওয়ামী লীগের নিশ্চিহ্ন হবার আশংকা সৃষ্টি হয়েছে। আমরা এমন রাজনীতি চাইনা, আমরা চাই সহনশীল পরিবেশে রাজনীতি। আমরা রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন চাই।

সরকার যেকোন মূল্যে আবারও ক্ষমতায় থাকতে চায়। এজন্য তারা ইভিএম নিয়ে জালিয়াতির ষড়যন্ত্র করছে।

সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম রব্বানীর সাথে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সুরুজ আলী, সামছুল ইসলাম, আব্দুল হাকিম, সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, আব্দুল হান্নান তালুকদার, মতিউর রহমান তালুকদার, ইউপি সদস্য আব্দুল হাদি, আব্দুল হাকিম। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম এমপি, মোস্তফা আল মাহমুদ, মাননীয় চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা লিয়াকত আলী খান, জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ জসীম উদ্দিন ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু, সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন তোতা, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য এম এ রাজ্জাক খান, আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সাত্তার গালিব, আবু নাসের বাদল, মাহমুদ আলম, সমরেশ মন্ডল মানিক, কেন্দ্রীয় সদস্য শফিকুল আলম তপন, ঝোটন দত্ত, আবুল কালাম আজাদ, আরিফুল ইসলাম রুবেল, আবুল কাশেম, আনোয়ার হোসেন শান্ত, আবুল হাসনাত আজাদ, এডভোকেট আব্দুল ওহাব, আব্দুল হাদি, ইঞ্জিনিয়ার এলাহান, ফেরদৌস, হাসান, সবুজ, আজাদ।