Home বাণিজ্য ও অর্থনীতি খোলাবাজারে ডলারের ক্রেতা কম, সরবরাহ বাড়ায় কমেছে দাম

খোলাবাজারে ডলারের ক্রেতা কম, সরবরাহ বাড়ায় কমেছে দাম

53

ডেস্ক রিপোর্ট: ঈদের আগে প্রায় প্রতিবছর নগদ ডলারের দাম বেড়ে যায়। কারণ, ঈদের আগে ও পরে অনেকে দেশের বাইরে বেড়াতে যান। যার প্রভাব পড়ে ডলারের দামে। তবে এবারের ঈদে নগদ ডলারের দাম বাড়েনি। বরং সরবরাহ বেশি হওয়ায় দাম কিছুটা কমে গেছে। রাজধানীর মতিঝিল ও গুলশানের মানি চেঞ্জার ও খোলাবাজারের ডলার বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।প্রথমআলো
ডলার বিক্রেতারা বলছেন, এবারের ঈদে বিদেশ থেকে অনেক প্রবাসী দেশে এসেছেন। দেশে আসার সময় সবাই কমবেশি ডলার ও বিভিন্ন দেশের মুদ্রা নিয়ে এসেছেন, যা তাঁরা দেশে আসার পর বিক্রি করে দেন। ফলে ডলারের সরবরাহ ভালো। সে তুলনায় চাহিদা কম। আগের চেয়ে এবার কম মানুষ নগদ ডলার কিনছেন।
মানি এক্সচেঞ্জগুলোর ডলার সংগ্রহের মূল উৎস বিদেশফেরত ব্যক্তিরা। বিদেশফেরত ব্যক্তিরা মানি এক্সচেঞ্জের কাছে ডলার বিক্রি করেন, বিদেশগামীরা সেই ডলার ক্রয় করেন। গত বছর রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর দেশে খোলাবাজারে নগদ ডলারের দাম ১২০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। পরে বাংলাদেশ ব্যাংক মানি চেঞ্জারগুলোর ডলারের দাম নির্ধারণ করে দেয় এবং রাজধানীর বিভিন্ন মানি এক্সচেঞ্জে অভিযান পরিচালনা করে। এখন ব্যাংকগুলো যে দামে নগদ ডলার বিক্রি করে, তার চেয়ে দেড় টাকা বেশি দামে ডলার বিক্রি করতে পারে মানি এক্সচেঞ্জগুলো। তবে অনেক মানি চেঞ্জার সেই নির্দেশনা মানছে না।
ব্যাংকগুলো এখন নগদ ডলার সর্বোচ্চ ১০৯ টাকা দামে বিক্রি করছে। গত মঙ্গলবার সর্বশেষ ব্যাংক খোলার দিনে অগ্রণী, জনতা ও এনআরবি ব্যাংকে নগদ ডলারের দাম ছিল ১০৯ টাকা। বেসরকারি সিটি ব্যাংকে যা ছিল ১০৮ টাকা। তবে ব্যাংকগুলোতে নগদ ডলার পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে বাধ্য হয়ে বিদেশগামীরা মানি চেঞ্জার ও খোলাবাজারের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ডলার সংগ্রহ করছেন।
দুই সপ্তাহ আগে রাজধানীর মানি চেঞ্জারগুলো ডলার বিক্রি করেছে ১১৩ টাকা ৬০ পয়সা দামে। গতকাল বুধবার যা কমে হয়েছে ১১২ টাকা ৬০ পয়সায়। রাজধানীর গুলশান ও মতিঝিলের এক্সচেঞ্জ হাউস ঘুরে গতকাল বুধবার খুব বেশি ক্রেতার দেখা পাওয়া যায়নি। অনেকগুলো এক্সচেঞ্জ হাউস বন্ধ ছিল।
মানি চেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এস এম জামান বলেন, মানি চেঞ্জারগুলো ১১১-১১২ টাকার মধ্যে ডলার বিক্রি করছে। এবারের ঈদে দাম বাড়েনি, কারণ সরবরাহ ভালো ছিল।

একজন বাংলাদেশি নাগরিক বছরে সর্বোচ্চ ১২ হাজার ডলার দেশের বাইরে খরচ করতে পারেন। সেটা নগদ ডলার ও কার্ড—উভয় মিলেই। এ অনুমোদন দেয় সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক ও মানি চেঞ্জারগুলো। ডলার খরচ কমাতে যাচাই-বাছাই করে পাসপোর্টে ডলার ব্যবহারের অনুমোদন দিতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি কী পরিমাণ ডলার খরচ করা হয়েছে, তা-ও যাচাই করে দেখতে বলা হয়েছে।
এদিকে ব্যাংকগুলোয় ডলারের ঘোষিত মূল্য রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে ১০৫ টাকা, প্রবাসী আয়ে ১০৭ টাকা। ফলে আমদানিতে খরচ ১০৬ থেকে ১০৭ টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে এ দাম নির্ধারণ করেছে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডলার অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা)। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এ দাম কার্যকর হচ্ছে রপ্তানি আয় আছে, এমন আমদানিকারকদের ক্ষেত্রে। বাকি আমদানিকারকদের অনেককে ডলারের দাম ১১৩ টাকা পর্যন্ত দিতে হচ্ছে বলে একাধিক আমদানিকারক জানান।