Home জাতীয় ক্ষেতমজুরসহ গ্রামীণ মজুররা মানুষের মতো বেঁচে থাকার অধিকার চায়

ক্ষেতমজুরসহ গ্রামীণ মজুররা মানুষের মতো বেঁচে থাকার অধিকার চায়

12

ডেস্ক রিপোর্ট: বংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় নেতৃবৃন্দ বলেছেন, গ্রামের ক্ষেতমজুরসহ গরিব মানুষ অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করছে। তারা মানুষের মযার্দায় বেঁচে থাকার অধিকার চায়। সভায় বলা হয়, গ্রামের একটি দরিদ্র পরিবারের তিন-চারজন সদস্য দিনরাত কাজ করেও ঠিকমতো সংসার চালাতে পারছেন না। নিত্যপণ্যের উর্ধ্বগতির কারণে তাঁদের নাভিশ্বাস উঠেছে। ফলে তারা যা উপার্জন করে তা দিয়ে খাবার, কাপড়, সন্তানের শিক্ষা, পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসা ব্যয় মেটানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
সভায় নেতৃবৃন্দ বলেছেন, আশির দশক থেকেই ক্ষেতমজুরসহ গ্রামীণ মজুররা ক্ষেতের কাজসহ যখন যে কাজ সে কাজই করে জীবন নির্বাহ করতো। এখন রাস্তাঘাট ও শহরে গার্মেন্ট শিল্প হওয়ায় তাদের সন্তানরা শহরে কাজের আশায় চলে আসে। কিন্তু এত পরিশ্রমের পরও তাঁরা মানুষের মতো বেঁচে থাকতে পারছে না। গ্রামের প্রায় প্রতিটি পরিবার তিন থেকে চারটি এনজিও থেকে ঋণ দিয়ে কিস্তি পরিশোধ করতে পারছে না। নেতৃবৃন্দ বলেন, কিস্তি পরিশোধ করতে না পেরে এনজিওদের চাপে অনেক পরিবার আত্মহত্যা পর্যন্ত করতে বাধ্য হচ্ছে। নেতৃবৃন্দ এনজিও ঋণের অত্যাচার থেকে গরিব মানুষকে মুক্ত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
আজ ২২ মার্চ শুক্রবার সকালে পুরানা পল্টনস্থ মুক্তিভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে ক্ষেতমজুর সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. ফজলুর রহমান। কেন্দ্রীয় কমিটির রিপোর্ট উত্থাপন করেন সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আনোয়ার হোসেন রেজা। সভার শুরুতে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন নির্বাহী কমিটির সদস্য মোতালেব হোসেন।
রিপোর্টের ওপর আলোচনায় অংশ নেন সংগঠরেন সহ সভাপতি পরেশ কর, আব্দুল মান্নান, সদস্য অ্যাড. রফিকুল ইসলাম, চন্দন সিদ্ধান্ত, অ্যাড. চিত্তরঞ্জন গোলদার, বীরেন বিশ্বাস, অ্যাড. আবুল হোসেন, মোজাহারুল হক, মাসুম ইবনে শফিক, অশোক সরকার, ডা. তপন বসু, লোকমান হোসেন, হাফিজার রহমান, সাহা সন্তোষ, শ্রীকান্ত মাহাতো, লিয়াকত আলী কাক্কু, সুশান্ত দেবনাথ খোকন, আব্দুর রউফ, ডা. আবু তাহের ভূঞা, সুফিয়া বেগম, মো. ইসরাফিল, হারুন আল বারী, আব্দুল আউয়াল, আব্দুল করিম, আবুল কালাম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার ক্ষমতায় এসেই চালের দাম বাড়িয়ে দিয়ে গরিব মানুষের পিঠে চাবুকাঘাত করেছে। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে চাল, ডাল, তেল, চিনি, মাছসহ নিত্যপণ্যের দাম কমানোর দাবি জানান।
সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, গ্রামীণ বরাদ্দ লুটপাট, বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতির কারণে প্রকৃত উপকারভোগীরা তার সুফল পাচ্ছে না। নেতৃবৃন্দ বয়ষ্ক ভাতা, বিধবা ভাতার বদলে সকল ষাটোর্ধ্ব মজুরদের মাসে বিনা জামানতে দশ হাজার টাকা পেনশনের দাবি করেন।
সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, গ্রামে এমনকি উপজেলায় স্বাস্থ্যব্যবস্থা বলতে কিছু নেই। সেখানে ডাক্তার, নার্স, ঔষধ কিছু পাওয়া যায় না। ফলে দরিদ্র মানুষকে বেশি কষ্ট ভোগ করতে হয়। নেতৃবৃন্দ ইউনিয়ন ও উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র/হাসপাতালের আধুনিকায়ন ও চিকিৎসার নিশ্চয়তার দাবি করেন।
সভায় দাবি আদায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এছাড়া সদস্য সংগ্রহ, গ্রাম কমিটি গঠন, উপজেলা ও জেলা সম্মেলনের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করা হয়।