Home সারাদেশ কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পর্যটক বরণের অপেক্ষায় কুয়াকাটা।। হোটেল মোটেল’র ৭০-৮০ ভাগ...

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পর্যটক বরণের অপেক্ষায় কুয়াকাটা।। হোটেল মোটেল’র ৭০-৮০ ভাগ বুকিং

26

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি।। পর্যটক বরণের অপেক্ষায় কুয়াকাটা। পাখির কলতানে মুখরিত সবুজ প্রকৃতি সাথে বালিয়ারীতে লাল কাকড়ার অবাধ বিচরনে ফুটে ওঠা আল্পনা। সৈকতে গুল্ম লতা নতুন রূপ দিয়েছে সাগর কন্যা কুয়াকাটাকে। নীল জলরাশি আর ঢেউয়ের গর্জন ও প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য যেন পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর এই প্রথম কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে কুয়াকাটায় পর্যটকদের আগমন ঘটবে লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি। এ লক্ষে হোটেল মোটেল ব্যবসায়ীরাও তাদের হোটেলগুলো সাজিয়ে রেখেছে পর্যটকদের বরণে। দোকানীরাও বেশি বেচাকেনার আশায় আগেভাগে পসরা সাজিয়ে বসেছে। হোটেল মোটেলসহ দর্শনীয় স্থানগুলোতে পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশসহ আইন শৃংঙ্খলা বাহিনী। ইতোমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর হোটেলগুলোর ৭০ শতাংশ বুকিং হয়ে গেছে। তবে বাড়তি চাপ সামলাতে রয়েছে ইকো ট্যুরিজম ব্যবস্থা এমনটাই জানিয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একই স্থানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের বিরল দৃশ্য দেখতে পাওয়ায় ভ্রমন পিপাসুদের কাছে কুয়াকাটা সবসময়ই একটি বিশেষ আকার্ষন। তাই পদ্মা সেতু দিয়ে রাজধানী থেকে ভোরে রওনা দিয়ে সারাদিন আনন্দ করে আবার রাতেই রওনা করতে পারবে পর্যটকরা। এছাড়া কোরবানির লম্বা ছুটিতে বাড়ি ফেরা মানুষ কুয়াকাটায় ছুটে আসবে। কেউ সৈকতের বালিয়ারীতে গাঁ ভাসিয়ে নেচে গেয়ে আনন্দ উন্মাদনা করবেন। কেউ সৈকতের বেঞ্চে বসেই সমুদ্র ও প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ কববে। কেউ কেউ সমুদ্রে মাঝে জেগে ওঠা চর বিজয়, কুয়াকাটার কুয়া, সৈকতের লেম্বুরবন, গঙ্গামতির লেক, লাল কাঁকড়ার চর, মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধ বিহার, শ্রী মঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, রাখাইন পল্লীসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্পটগুলোতে ঘুরে দেখবেন। পর্যটকদের পদচারনায় বিরাজ করবে উৎসব মুখর পরিবেশ।
এদিকে কুয়াকাটায় পর্যটকদের রাত্রিযাপনের জন্য ১৬০ টির অধিক আবাসিক হোটেল মোটেল রয়েছে। যার ধারণ ক্ষমতা পনের হাজারের মত। এই ছুটিতে তার কয়েকগুণ পর্যটক আসার সম্ভাবনায় নতুন নতুন হোটেল ও স্থাপনা তৈরিতে ব্যস্ত রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
সৈকত লাগোয়া আচার ও ঝিনুক ব্যবসায়ী মো.জহিরুল ইসলাম বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় আসতে সময় লাগবে মাত্র ৬ ঘণ্টা। তাই কোরবানির ঈদের দিন অনেক পর্যটকদের আগমন ঘটবে। এজন্য ক্রেতাদের চাহিদার দিকে খেয়াল রেখে মালামাল ক্রয় করে দোকান সাজিয়ে রেখেছি। কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কেএম বাচ্চু জানান, পর্যটকদের আগাম সম্ভাবনাকে ঘিরে আমরাও প্রস্তুতি নিয়েছি।
হোটেল সমুদ্র বাড়ির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহিরুল ইসলাম মিরন বলেন, আগামী ১২-১৩ তারিখে পুরো রিসোর্ট অগ্রীম বুকিং পেয়েছি। আবার ১৪-১৫ তারিখেরও ৭০ শতাংশ বুকিং রয়েছে। হোটেল রেইন ড্রপসের পরিচালক দীপংকর চন্দ্র সিকদার জানান, ঈদ উপলক্ষে ইতোমধ্যে অগ্রীম ৫০-৬০ শতাংশ রুম বুকিং পেয়েছি। আশাকরছি বাকিগুলোও বুকিং হয়ে যাবে।
ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অফ কুয়াকাটা টোয়াক’র সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, ইত্যেমধ্যে কুয়াকাটার হোটেল মোটেল’র সত্তর থেকে আশি ভাগ বুকিং হয়ে গেছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর এই প্রথম কোরবানির ঈদের ছুটি। তাই অনেক বেশি পর্যটক হবে এমটাই আশাপ্রকাশ করেছেন তিনি।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো.মোতালেব শরীফ বলেন, কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন পর্যটকদের সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। পর্যটকদের বাড়তি চাপ থাকলে ইকো ট্যুরিজমের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পর্যটকদের বাড়তি চাপ থাকলেও তেমন সমস্যা হবেনা বলে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
মহিপুর থানা ওসি খোন্দকার মো. আবুল খায়ের বলেন, প্রতিদিনই থানা পুলিশের একটি টিম পর্যটকদের নিরাপত্তায় কাজ করছে। এছাড়া ঈদকে ঘিরে পর্যটকরা যাতে নিরাপদ ভ্রমন করতে পারে এর জন্য বাড়তি নজরদারি থাকবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.আবদুল খালেক জানান, পর্যকদের নিরাপদ ভ্রমনের জন্য গোয়েন্দাদের নজরদারি সহ সার্বিক নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।