Home জাতীয় কুমিল্লায় সহিংসতা: সিআইডির জালে ১২ প্রভাবশালী ইন্ধনদাতা

কুমিল্লায় সহিংসতা: সিআইডির জালে ১২ প্রভাবশালী ইন্ধনদাতা

31

ডেস্ক রিপোর্ট: কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কোরআন রাখাকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় ১২ প্রভাবশালী ইন্ধনদাতাকে নজরদারিতে রেখেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকায় সিআইডির সদর দপ্তরে ডাকা হতে পারে। ১২ জনের মধ্যে রাজনৈতিক দলের স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন নেতাও রয়েছেন। তদন্ত সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

এদিকে, পবিত্র কোরআন অবমাননাসহ ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি ইকবাল হোসেনসহ ৪ আসামিকে পুলিশ ও সিআইডির হেফাজতে রিমান্ডে নিয়ে টানা ১২ দিন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এরপর আসামিদের আদালতে হাজির করলে বুধবার ( ৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক। কারা কর্তৃপক্ষও আসামিদের কঠোর নজরদারিতে রাখছে। বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) পর্যন্ত তাদের সঙ্গে স্বজনদের কেউ দেখা করতে আসেননি।

সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, এই ঘটনায় দায়ের করা মামলা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনার পর গ্রেফতার ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তে উঠে আসা কুমিল্লা নগরসহ জেলাজুড়ে আলোচিত বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার গতিবিধি ও অবস্থান সম্পর্কিত বিষয় নজরদারিতে রয়েছে। ওপরের গ্রিন সিগন্যাল পেলে যেকোনো সময় তাদের গ্রেফতার করা হতে পারে।

সূত্র আরও জানায়, প্রধান আসামি ইকবাল হোসেন, ৯৯৯ নম্বরে পুলিশকে ফোন করা রেজাউল করিম ওরফে ইকরাম, দারোগাবাড়ি মসজিদ-মাজারের সহকারী খাদেম হুমায়ুন কবির ও ফয়সাল আহমেদের বুধবার তৃতীয় দফায় ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর শেষে তাদের কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) বিকালে সিআইডি-কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার খান মুহাম্মদ রেজওয়ান বলেন, ‘কোরআন অবমাননা ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের ঘটনায় ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে দায়ের করা মামলাটিতে সন্ত্রাস দমন আইনের ৩টি ধারা সংযোজন করা হয়েছে। এছাড়া, এ পর্যন্ত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তে ঘটনার নেপথ্যে ইন্ধনদাতা হিসেবে ১২ জন প্রভাবশালীর নাম এসেছে। তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে পাওয়া তথ্যগুলো ডিজিটালি ও ম্যানুয়ালি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এ মাসের মধ্যেই ঢাকায় সিআইডি সদর দপ্তরে তাদের ডাকা হতে পারে। একদিন, পাঁচদিন, ৭ দিন, কিংবা যতদিনই লাগুক না কেন, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এ তালিকায় স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাও আছেন।’ তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই তাদের কারও নাম-পরিচয় প্রকাশ করতে তিনি অস্বীকৃতি জানান।

এদিকে, বৃহস্পতিবার বিকালে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. আসাদুর রহমান জানান, ‘কারাগারে ইকবাল হোসেনসহ ৪ আসামিকে কঠোর নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত তাদের স্বজনদের কেউ সাক্ষাতের জন্য কারাগারে আসেননি।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লা নগরীর নানুয়া দিঘির উত্তর পাড়ের একটি অস্থায়ী পূজামণ্ডপে কোরআন অবমাননা ও মন্দির ভাঙচুরসহ সহিংসতার ঘটনায় এই পর্যন্ত মোট ১২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে কোতোয়ালী মডেল থানায় ৮টি, সদর দক্ষিণ মডেল থানায় ২টি এবং দাউদকান্দি ও দেবিদ্বারে একটি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫টি মামলার তদন্তের ভার পেয়েছে সিআইডি।-ইত্তেফাক