স্টাফ রিপোটার: কিশোরীদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন সরকারি বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা। তারা বলেছেন, বিবাহিত এবং অবিবাহিত কিশোর – কিশোরীদের জন্য মানসম্পন্ন সেবাদান এর উদ্দেশ্যে পেশাদার স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দিতে হবে। স্বাস্থ্যখাতে সুযোগ সুবিধা উন্নতকরণের লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরণের পদক্ষেপ নিতে হবে।
ইউনিসেফ ও ডিনেট আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে তারা এ সব কথা বলেন। আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। “কিশোর কিশোরীদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবাঅ্যান্ড রাইটস সার্ভিস এক্সেস ইন বাংলাদেশ” শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন ডিনেটের রিসার্চ ফেলো নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. দীপক মিত্র।
বৈঠকে বিশ্বব্যাংকের লিয়াজোঁ অফিসার নন্দিনী লোপা বলেন, যেহেতু যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এখনো বাংলাদেশের সমাজে একটি ট্যাবু ইস্যু, বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে এটি একটি বিশাল ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায়। সেজন্য আমাদের সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং দাতা সংস্থাগুলোর কাজের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে যাতে তারা উভয়েই এই বিষয়ে মাঠপর্যায়ে কাজ করতে এগিয়ে আসেন । আমাদের গৃহীত কার্যক্রমগুলোর যেন ট্রান্সজেন্ডার, আদিবাসী, দলিত, ভাসমান কিশোর কিশোরীদেরকেও অন্তর্ভুক্ত করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। গণমাধ্যমকর্মীরা যাতে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে প্রতেবেদন এর সময় সংবেদনশীলভাবে শব্দচয়নে মনোযোগী হন সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আরেকদিকে গণমাধ্যমকর্মীরাও যাতে মাঠপর্যায়ে কাজের ক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন না হন, সেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট থাকতে হবে।
প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের এসআরএইচআর লিড ফেরদৌসী বেগম বলেন, এডোলেসেন্ট দের নিয়ে সরকারের সাথে তারাই প্রথম ২৫০টি স্কুলে কার্যক্রম চালান মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে অনুমতি নিয়ে যে প্রোজেক্টের দ্বিতীয় পর্যায়ে এক হাজার ১০০টি স্কুলে সেক্সুয়াল রিপ্রোডাক্টিভ এন্ড হেলথ রাইটস বিষয়ক জ্ঞান বৃদ্ধির অনুমতি পেয়েছেন।
বিএসএসএমইউ’র প্রফেসর ডাঃ. ফারিহা হোসেন কিশোর কিশোরীদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবার ইতিবাচক তুলে ধরে বলেন, এখন অবিবাহিত নারীরাও তাদের মাকে নিয়ে স্বাস্থ্যসেবা খোঁজ করতে আসছে। আর তাঁর মতে উদ্বেগের এর জায়গা হলো বয়ো:সন্ধিকালীন কিশোরদের যখন তাদের সেক্সচুয়াল অ্যান্ড রিপ্রডাক্টিভ হেলথ চিকিৎসা নিতে আসছে সেখানে সামাজিক, সাংস্কৃতিক কিছু প্রথাগত ধারনা এখনো বিরাজ করছে। এ সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানানো যেতে পারে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে বা জাতীয় সংগীতের সময়। শিক্ষকেরা এ নিয়ে যেন ছাত্রছাত্রীদের জানিয়ে দেয় এবং পরিবারের বাবাদেরও বয়ো:সন্ধিকালীন সময় সম্পর্কে তার সন্তানদের জানাতে হবে।
ডিনেটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক এম. শাহাদাত হোসেন বলেন, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার সেবা পাওয়ার চেষ্টা করার সময় কিশোর-কিশোরীরা অনেক বাধার সম্মুখীন হয়। আমাদের এমন পরিষেবাগুলি অফার করতে হবে যা পৌঁছানো যায়, এবং বিচার-বিহীন যা কিশোর-কিশোরীদের জন্য গোপনীয়তা নিশ্চিত করে।
গোলটেবিল বৈঠকে আরও বক্তব্য দেন ডিজিএফপি এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডাঃ. মোঃ মনজুর হোসেন, ডিজিএইচএস এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডাঃ মোঃ শামসুল হক, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ক্লিনিকাল সাইকো লজিস্ট এবং হেড অফ ন্যাশনাল ট্রমা কাউনসিলিং সেন্টার ইসমত জাহান, ইউনিসেফ এর হেলথ অফিসার ডাঃ. সাবরিনা রাফি, ওয়ার্ল্ড ভিশনের ডাঃ সন্তোষ কুমার দত্ত, পাথফাইন্ডার ইন্টারন্যাশনাল এর ম্যানেজার ডাঃফাতেমা শবনম, এবং মোঃ বাপসার কাওসার করিম।