Home খেলা ওয়ার্নের মৃত্যু ঘিরেও রহস্য

ওয়ার্নের মৃত্যু ঘিরেও রহস্য

39

ডেস্ক রিপোর্ট: শেন ওয়ার্ন নেই, এই নিষ্ঠুর বাস্তবতা এখনো অবিশ্বাস্য অনেকের কাছে। অস্ট্রেলিয়ার স্পিন কিংবদন্তির অকালবিদায় ছুঁয়ে গেছে পৃথিবীর প্রতিটি ক্রিকেটপ্রেমীকে। দিয়েগো ম্যারাডোনার মহাপ্রয়াণ ফুটবলবিশ্বকে যেমন থমকে দিয়েছিল, ওয়ার্নের মৃত্যুতে তেমনই রিক্ত, স্তব্ধ ক্রিকেটবিশ্ব। যুগান্তর

ওয়ার্নের বোলিং যেমন ছিল ধাঁধা, রহস্যমাখা, তার ব্যক্তিগত জীবনও ছিল তাই। বিচিত্র সব ঘটনার জন্ম দিয়েছেন। মাত্র ৫২ বছর বয়সে তার মৃত্যুতেও মিলছে রহস্যের গন্ধ। থাইল্যান্ডের কোহ সামুইয়ের একটি বিলাসবহুল অবকাশযাপন কেন্দ্রে ছুটি কাটাতে এসে শুক্রবার সন্ধ্যায় আচমকা হার্ট অ্যাটাকে তার মৃত্যু হয়। এর মধ্যে অনেকে রহস্য দেখছেন।

ওয়ার্নের বেহিসাবি জীবনের সঙ্গে এর যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা চলছে। প্রাথমিক তদন্ত শেষে শনিবার থাইল্যান্ডের পুলিশ জানিয়েছে, ওয়ার্নের মৃত্যু অস্বাভাবিক নয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় ওয়ার্নকে তার ভিলার রুমে অচেতন অবস্থায় পান বন্ধু অ্যান্ড্রু নিওফিতু।

তিনি সিপিআর দিয়ে প্রায় ২০ মিনিট ওয়ার্নকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। কাল ময়নাতদন্তের জন্য থাইল্যান্ডের আরেকটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় কিংবদন্তির মরদেহ। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এদিকে থাই পুলিশ জানিয়েছে, ওয়ার্নের হোটেল রুমে রক্তের দাগ পাওয়া গেছে। বলা হচ্ছে, ওয়ার্ন বুকে ব্যথা অনুভব করেছিলেন।

তিন বন্ধুকে নিয়ে থাইল্যান্ডে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন ওয়ার্ন। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে অস্ট্রেলিয়া সরকার ওয়ার্নের মরদেহ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। অস্ট্রেলিয়ায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ওয়ার্নের শেষকৃত্য হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন, ‘অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ চরিত্র শেন ওয়ার্ন। খেলার প্রতি ভালোবাসা তাকে অন্যদের চেয়ে আলাদা করেছে। দেশের হয়ে তিনি যে কীর্তি গড়েছেন, তার জন্য রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার শেষকৃত্য হবে। তার পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে সব চূড়ান্ত করা হবে।’

ভিক্টোরিয়া রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেও মেলবোর্নে ওয়ার্নের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া আয়োজনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঘরের ছেলেকে শ্রদ্ধা জানাতে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের (এমসিজি) সাউদার্ন স্ট্যান্ডের নাম করা হচ্ছে ওয়ার্নের নামে। এখন থেকে এমসিজির দক্ষিণ দিকের এই স্ট্যান্ড পরিচিত হবে ‘দ্য এসকে ওয়ার্ন স্ট্যান্ড’ নামে।

এই মাঠেই টেস্টে ৭০০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছিলেন সর্বকালের সেরা লেগ-স্পিনার। এমসিজির বাইরে আগেই ওয়ার্নের একটি ভাস্কর্য তৈরি করা হয়েছে। কাল সকাল থেকে সেই ভাস্কর্যের নিচে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করছেন শোকাহত ভক্তরা। ফুল, সিগারেটের প্যাকেট, বিয়ারের ক্যান, জার্সি, ক্যাপে ছেয়ে গেয়ে ভাস্কর্যের বেদি। শুধু মেলবোর্ন নয়, ঢাকা, মোহালি ও রাওয়ালপিন্ডিতে সব আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচের আগে এদিন স্মরণ করা হয়েছে ওয়ার্নকে।

একদম ভেঙে পড়েছি। জীবনের গণ্ডি ছাড়ানো এক চরিত্র ছিল ওয়ার্ন। ভেবেছিলাম, ওর কখনো কিছু হবে না। মানুষ বিশ জনমেও যা করতে পারে না, সে এক জনমেই তার চেয়ে ঢের বেশি করে গেছে-শান্তিতে থেকে প্রিয় বন্ধু। তোমার মতো আর কেউ কখনো আসবে না

-গ্লেন ম্যাকগ্রা

তোমার সঙ্গে অসাধারণ কিছু মুহূর্ত ও স্মৃতির ভাগীদার আমি। তোমার পাশে খেলতে পারার অভিজ্ঞতা চির আনন্দদায়ী ও গৌরবের। তোমার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। শান্তিতে থেকো

-স্টিভ ওয়াহ

কিংবদন্তি শেন ওয়ার্নের সঙ্গে আমার বহু বছরের সম্পর্ক। তিনি এত কম বয়সে মারা গেছেন শুনে আমি গভীরভাবে মর্মাহত ও দুঃখিত। যেভাবে বোলিং ইতিহাসের জন্ম দিয়েছেন তিনি, তা দেখে আমি মুগ্ধ। একসঙ্গে যে দারুণ মুহূর্তগুলো কাটিয়েছি, সেগুলোয় তাকে স্মরণ করব

-মুত্তিয়াহ মুরালিধরন

বিশ্বাস করতে পারছি না। ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা বোলার, ক্রিকেটের রকস্টার। অনেক আগেই চলে গেল। শান্তিতে থেকো বন্ধু

-ব্রেট লি