Home মতামত ওয়ান ইলিভেনের দুঃসহ স্মৃতিকথা

ওয়ান ইলিভেনের দুঃসহ স্মৃতিকথা

221

মোঃ আক্তারুজ্জামান খোকা : ২০০৬ সালে বিএনপি জোট সরকারের মেয়াদ শেষ হবার আগে থেকেই পরিকল্পনা করেছিলো তাদের আর্দশের লোককে প্রধান নির্বাচন করে ও তত্বাবাধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্ঠা করে কোনভাবে নীলনকশার নির্বাচন করে আবার ক্ষমতয় ফিরে আসা।

তখন তত্বাবাধায়ক সরকারের প্রধান হওয়ার আইন ছিলো সুপ্রীম কোর্টের প্রধান বিচারপতির।

তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রধান বিচারপতি কেএম হাসানকে তত্বাবাধায়ক সরকারের প্রধান করার জন্য চাকুরীর মেয়াদ বয়স ৬৫ থেকে ৬৭ দুই বছর বৃদ্বি করেছিলো।
উল্লেখ্য যে বিচারপতি কেএম হাসান বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচারে বিব্রতবোধ করেছিলেন। তাই আওয়ামীলীগ তত্বাবাধায়ক সরকারের প্রধান নিরপক্ষ লোককে করতে বিচারপতি কেএম হাসানের পদত্যাগের দাবীতে রাজপথে আন্দোলন শুরু করে।

বিএনপি দলীয় আর্দশে বিশ্বাসী প্রধান নিবাচন কমিঁশনার বিচারপতি আজিজের পদ ত্যাগের দাবীতে ও আওয়ামীলীগ রাজপথে স্বোচ্চার ছিলো।

২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর জোট সরকারের মেয়াদ শেষে আওয়ামীলীগের আন্দোলনে মুখে বিচারপতি কেএম হাসানের প্রধান উপদেষ্ঠা করার পরিকল্পনা বাদ দিয়ে বিএনপি সমর্থিত তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রফেসর ইয়াজ উদ্দিন আহমদ নীজেকেই তত্বাবাধায়ক সরকারেরর প্রধান উপদেষ্ঠা করে, তারই নেতৃত্বে তত্বাবাধায়ক সরকার গঠন করে।

আওয়ামীলীগ যখন বুঝতে পারে তারা নীলনকঁশার নির্বাচন করে আবার ক্ষমতা থাকতে যায়। আওয়ামীলীগ নির্বাচন বর্জনের সিদ্বান্ত নিয়ে রাজপথে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছিলো।

অবশেষে আওয়ামীলীগের প্রবল চাপের মুখে ২০০৭ সালের ১১ই জানুয়ারী জরুরী অবস্হা জারী করা হয়।

২২ জানুয়ারী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সিদ্বান্ত বাতিল করা হয়। রাষ্টীয় ক্ষমতা অধিষ্ঠিত হয় সেনা সর্মথিত তত্বাবাধায়ক সরকার। তত্বাবাধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্ঠা হয়েছিলেন ফখরুদ্দিন আহমেদ।

তৎকালীন সেনাশাসিত তত্বাবাধায়ক সরকারের দায়িত্ব ছিলো তিন মাসের মধ্যে এক কোটি ভুঁয়া ভোট বাতিল করে সঠিক ভোটার তালিকা প্রণয়ণ করা।যথাসময়ে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্হান্তর করা।

তাদের পরিকল্পনা ছিলে তাদের নেতৃত্বাধীন অর্নিবাচিত সরকার দীর্ঘদিন ক্ষমতা ধরে রাখা। পরে তারা নীলনকশা এঁটেছিলো বিএনপি আওয়ামীলীগ ভেঙ্গে কিংস পাটি গঠন করে তাদের যেন তেন নির্বাচন করে বহুদিন ক্ষমতা থাকা। তারা মাইনাস ওয়ান ফর্মুলা হিসাবে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই গ্রেফতার করে।

পরে মাইনাস টু ফর্মুলা হিসাবে খালেদা জিয়াকে আটান্ন দিন পর ৩ রা সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করে।

২০০৭ সালের ১৫ মার্চ আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা অসুস্হ পুত্র বধুকে দেখতে যুক্তরাষ্ট্রে যান। তারপর দেশের ক্ষমতা লোভী উচ্চ বিলাসী একটি চক্র শেখ হাসিনা যাতে দেশে ফিরতে না পারে যড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।
৯ এপ্রিল একজন ঠিকাদারকে দিয়ে একটি চাঁদাবাজি মামলা দেওয়া হয়। এফ আই আর নাম না থাকা সত্বেও শেখ হাসিনার বিরদ্ধে হত্যা মামলায চার্জশিট দেওয়া হয।আইনগত মোকাবেলার জন্য আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ১৪ এপ্রিল দেশে ফিরার সিদ্বান্ত নেওয়া হয।

১৮ এপ্রিল তৎকালীন তত্বাবাধায়ক সরকারের প্রেসনোটে আওযামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা কে বাংলাদেশের বিপজ্জনক ব্যাক্তি হিসাবে আখ্যায়িত করে ও মিডিয়া বক্তব্য প্রদানে নিষেজ্ঞা জারী করা হয়।

বৃটিশ এয়ারওয়েজ সেনাশাসিত তত্বাবাধায়ক সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারনে বৃটিশ এযার ওয়েজ বোর্ডিংস পাস কার্ড বাতিল করে। ২৫ এপ্রিল ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বোর্ডিং পাশ বাতিল করায় দুঃখ প্রকাশ করেছিলো।

৭ই মে ২০০৭ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনার নিষেজ্ঞা ও মৃত্যু ভয় উপেক্ষা করে দেশে ফিরে আসেন। যদি বঙ্গবন্ধু কন্যা তত্বাবাধায়ক সরকারের প্রচন্ড চাপ মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, গণতন্ত্র উদ্বারে দেশে না ফিরতে পারত আজ বাংলার ইতিহাস অন্য রকম হতো।

এটা শেখ হাসিনার দ্বিতীয়বার স্বদেশের বুকে প্রত্যাবর্তন ছিলো। এর আগে ১৯৮১ সালের ১৭ ই মে দীর্ঘ দিন প্রবাসে নির্বাসন কাটিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা স্বদেশের বুকে প্রত্যাবর্তন করেছিলো।

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কারাঅন্তরীন কালীন সময়ে জননেতা মোঃ জিল্লুর রহমানের উপর আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব অর্পিত করেছিলো।

তিনি প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনে দলকে ঐক্যবদ্ব রাখার অঙ্গীকার করে নেত্রীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবী করেছিলে। তিনি আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ রেখে তৃনমুল নেতাকর্মীদেরকে উজ্জীবিত করে নেত্রীর কারামুক্তির আন্দোলন তরান্বিত করেছিলো। তথাকথিত তত্বাবাধায়ক সরকার একে একে জাতীয় নেতাদেরকে গ্রেফতার করে জেল খানায় প্রেরণ করে।

জরুরী আইন জারী করে ঘরোয় রাজনীতি ও নিষিদ্ধ করেছিলো।তখন দেশে ছিলনা কোন বাক স্বাধীনতা, ছিলোনা কথা বলার অধিকার।

তারা এসে এমন তান্ডব লীলা চালায় মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা ও ব্যাহত হয়েছিল। ব্যবসা বাণিজ্য স্হবির হয়ে গিয়েছিলো। গ্রেফতার ভয়ে অনেক জাতীয় নেতা আত্বগোপনে গিয়েছিলো আবার অধিকাংশ জাতীয নেতা তৎকালীন তত্বাবাধায়ক সরকারের সাথে আঁতাত করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলো।

যাতে বঙ্গবন্ধু কন্যা সহজে জেল থেকে বাহির হতে না পারে। তারা চেয়েছিলো যে কোন মামলায় প্রহসনকমূলক সাজা দিয়ে
নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষনা করা।

জননেতা জিল্লুর রহমানের নির্দেশে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এডভোকেট সাহারা খাতুনে নেতৃত্বে সকল মামলা আইনগত মোকাবেল করেছিলেন।
তখন সারাদেশের তৃনমুল নেতাকর্মীরা জননেত্রী শেখ হাসিনার কারা মুক্তি আন্দোলনে তৎকালীন আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জননেতা জিল্লুর রহমানের পাশে ছিলেন।

সেনা সমর্থিত তৎকালীন তত্বাবাধায়ক সরকার তৎকালীন বিএনপির মহাসচিব মান্নান ভুইয়া নেতৃত্বে বিএনপিকে বিভক্ত করে ফেলেছিলো।

তথাকথিত তত্বাবাধায়ক সরকার আওয়ামীলীগকে ও ভাঙার অনেক চেষ্টা করেছিলো।

জননেতা জিল্লুর রহমানের নেতৃত্বের দঢ়তা, জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অবিচল আস্হার কারনে দলের ভিতর বাহির অনেক ষড়যন্ত্র করে,ভয়ভীতি প্রদর্শনকরে ও দলকে ভাঙতে পারেনি।

জননেতা জিল্লুর রহমনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগকে ঐক্যবদ্ব করে সারাদেশের তৃনমূল নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করে জননেত্রী শেখ হাসিনার কারা মুক্তি আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করেছিলেন।

জন নেত্রীর শেখ হাসিনার নিঃশর্ত কারা মুক্তি দাবীতে জননেতা জিল্লুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ অনঢ়, অটল ছিলে।

জননেত্রী শেখ হাসিনার নিঃশর্ত মুক্তি ছাড়া আওয়ামীলীগ কোন সংলাপে যাবেনা ও জাতীয় সংসদ নিবার্চনেও অংশগ্রহন করবেনা জননেতা জিল্লুর রহমান দৃঢ় কন্ঠে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সেনাশাসিত তত্বাবাধায়ক সরকারকে জানিয়ে দিয়েছিলেন।

উল্লেখ্য যে জননেত্রী শেখ হাসিনা গ্রেফতার হওযার পরের দিন অর্থাৎ ২০০৭ সালের ১৭ জুলাই থেকেই জননেত্রী শেখ হাসিনা চিকিৎসা শেষে ২০০৮ সালের ৬ নভেম্বর দেশে ফিরা পযর্ন্ত তৎকালীন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলহাজ্ব জিল্লুর রহমান সাহেবের (প্রয়াত মহামান্য রাষ্ট্রপতি) সকল ব্রিফিং, মিটিং ও মহান নেত্রীর কারা মুক্তি সংক্রান্ত সকল নিউজ ভারপ্রাপ্ত সভাপতির ব্যক্তিগত প্রেস সহকারী হিসাবে সকল ইলেকট্রনিক ও প্রিন্টিং মিডিয়ায় আওয়ামীলীগ বিটকারী সকল সাংবাদিক সাথে যোগাযোগ করে কভারের ব্যবস্হা করেছি।

সেইসাথে আওয়ামীলীগের সাথে চৌদ্দদলের যৌথ মিটিং এ নেত্রী,কারামুক্তি সংক্রান্ত সকল ব্রিফিং সকল মিডিয়ায় কভারের ব্যবস্হা করেছি।

উল্লেখ্য যে তৎকালীন আওয়ামীলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসাবে ২০০৭ সালের ১৭ ই জুলাই তারিখে আলহাজ্ব জিল্লুর রহমান সাহেবের প্রথম সাংবাদিক সম্মেলন শেষে ঐদিন রাত্রে গুলশানস্হ নেতার বাসভবন থেকে বাসায় ফিরার পথে অজ্ঞাত বিশেষ গোয়েন্দা বাহিনী চোখ বেঁধে ধরে নিয়ে যায়।

সারারাত অমানুষিক নির্যাতন শেষে ভোরে লেকের পারে রেখেগিয়েছিলো। কেন মিডিয়ার কভারেজের দায়িত্ব নিলাম, তারা অনেক ধরনের অমানুষিক টর্চার করেছিলো, ফেলে যাওয়ার আগে তারা নিষেধ করেছিলো যাতে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির পাশে না থাকি। নেতার গুলশানস্হ বাসায় যাতে আর না আসি।

এই ব্য্যপারটি কাউকে বলা যাবেনা তারা নিষেধ করেছিলো জীবন বিপন্ন হবে বিধায় দীর্ঘদিন কাহারও কাছে প্রকাশ করেনি।

সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ভাই মহান নেত্রী গ্রেফতার হবারকয়েক মাস পরে লন্ডন থেকে দেশে ফিরে আসেন।তখন কট্রর সংস্কারবাদী নেতা মুকুল বোস বাংলাদেশ আওয়ামীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

পরবর্তীতে মুকুল বোস সহ অনেক সংস্কারবাদী নেতা ধানমন্ডি আওয়ামীলীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে সামনে তৃনমুল নেতাকর্মীদের রোষানলে পরে লাঞ্চিত হয়েছিলেন।

যেদিন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ভাই বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়েছিলেন সেটির নিউজ সকল মিডিয়া যোগাযোগ করে কভারেজের ব্যবস্হা করেছি।

সৈয়দ আশারাফুল দেশে ফিরার পর দলের ভিতর বাহির অনেক চাপ ছিল।যাতে সে দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাকের দায়িত্ব না নিয়ে যেন সে আবার লন্ডনে ফিরত চলে যায়।

যেদিন সে দায়িত্বে নিতে দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির গুলশানস্হ বাসায় আসে। আমি ন্যাম ভবনের বাসা থেকে সৈয়দ আশারাফুল ইসলাম ভাইকে নিয়ে আসি।সাথে ছিলো তার ব্যক্তিগত ড্রাইভার মন্জু। গাড়ীতে উঠার আগে প্রিয় নেতা জিল্লুর ভাইকে বলে রেখেছিলাম যাতে মুকুল বোসকে বাসায় আসতে বলে।

সৈয়দ আশারাফুল ইসলাম ভাই সহ যখন নেতার কাছে উপস্হিত হয়ে দেখি, মুকুল বোস আগেই বসা ছিলো নেতার সামনে সোপার এক কোণে।

নেতা শুধু এতটুকু বলল দেখ মুকুল গঠনতন্ত্রে আছে, ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব দিতে হয়না,উপস্হিত হলে অটোমেটিক সে তার দায়িত্ব পাবে।

যখন আবদুল জলিল জেলে গেছে, ওবাদুল কাদের দায়িত্ব পেয়েছে।ওবাদুল কাদের যখন জেলে গেছে আশরাফ ভারপ্রাপ্তর সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছিলো।

আশরাফ লন্ডনে চলে গেছে তুমি দায়িত্ব পেয়েছ। আশরাফ দেশে ফিরেছে সে এমনিতে দায়িত পাবে। এই রকম চৌকুশ নেতা ছিলেন জননেতা জিল্লুর রহমান। তারপর মুকুল বোস হন করে নিরাশ মনে বাসা থেকে চলে যায়।

আমি সাথে সাথে প্রথম চ্যানেল আই এর বার্তা সম্পাদক ফয়সুল ভাইকে টেলিফোনে নিউজ দিয়েছিলাম “আজ থেকে সৈয়দ আশারাফুল ইসলাম বাংলাদশ আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদকে দায়িত্ব নিচ্ছেন”। তিনি সাথে সাথে চ্যানেল আই টিভি স্টলে নিউজটি দিয়েছিলো। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ভাই ও প্রিয় নেতা টিভি স্টলে এক সাথেই নিউজটি দেখেছিলে।

আর পত্রিকার নিউজ তো পরের দিন আসবে, যাতে তাঁর দায়িত্ব নিতে কোন যড়যন্ত্রে না পরতে হয়, সেইজন্য সেদিনই সকল টিভির স্টলে নিউজ কভারের ব্যবস্হা করেছিলাম।

শুধু বিটিভি ছাড়া,কারন তখন বিটিভি আওয়ামীলীগের কোন নিউজ কভার করতোনা। ঐদিন সন্ধার পরে বাসায় যাওয়ার পথে আবার গ্রেফতার হলাম কারন তখন জুরুরী আইনে ঘরোয়া রাজনীতিও বন্ধ ছিলো।

ছাড়া পাই ঐদিন রাতের শেষে ভোরে। বারবার জীবনমৃত্যুর মুখোমুখি হয়ে মহান নেত্রীর মুক্তির আন্দোলনে প্রিয় নেতা কাছ থেকে দুরে সরে সরে যায়নি।তখন দেশে অস্বাভাবিক অবস্হা বিরাজ করেছিলো।কোন নেতা ভয়ে ক্যামেরার সামনে সাহস পাইনি।

সেই সাথে তৎকালীন আওয়ালীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম (পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী) ভাইয়ের মিডিয়া সমন্বয়কারী হিসাবে দুই বৎসর দায়িত্ব পালন করি। তাঁর সকল মিটিং ব্রিফিং সকল মিডিয়ায় দুই বছর কভারেজের ব্যবস্হা করেছি।

জননেতা জিল্লুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের প্রবল দাবীর মুখে, আন্তর্জাতিক চাপে ২০০৮ সালের ১১ই জুন তৎকালীন তত্বাবাধায়ক সরকার আওয়ামীলীগ সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আট সপ্তাহের জামিনে মুক্তি দেয়। শেখ হাসিনা চেখের চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যান ২০০৮ সালের ৬ নভেম্বর দেশে ফিরেন।এবং পরে তিনি স্থায়ী জামিন লাভ করেন।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সহ মহাজোট বিপুল সংখা গরিষ্ঠ নিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় লাভ করে।
বঙ্গবন্ধুর কন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০০৯ সালের ৬ ই জানুয়ারী সরকার গঠন করে।

জননেত্রী শেখ হাসিনার মুক্তি আন্দোলনে যারা সার্বক্ষনিক জিল্লুর রহমান সাহেবের পাশে থেকে কাজ করেছে, ঐ কঠিন সময়ে জীবন মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েও যারা মহান নেত্রীর মুক্তির আন্দোলন থেকে চুল পরিমান ও বিচ্যুতি হয়নি তারা আজ হারিয়ে গেছে। তাদের কোন মুল্যায়িত হয়নি। তারা আজ নিক্ষিপ্ত হয়েছে ইতিহাসের আস্থাকুঁড়ে।

কেহই জননেত্রীর সুনজরে আনেনি।আমরা কঠিন সময়ে জীবন ঝুুঁকি নিয়ে মহান নেত্রীর মুক্তি আন্দোলনে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পাশে থেকে সার্বক্ষনিক কাজ করেছি, কিন্চিত পরিমান হলে ও আমাদের অবদান আছে, সেটা কেহই নেত্রীকে অবগত করত করেনি। যদি মহান নেত্রী জানত তবে বুকের ভিতর জমে থাকা কষ্টটা দুর হতো।মহান নেত্রীর মুক্তি আন্দোলনে কঠিন সময়ে যারা ছিলো তার সবাই আমাদের কথা জানে।

ঐসময়ে ঢাকা মহানগর সহ সারাদেশের ও সারা বিশ্বের নেতাকর্মী, সাংবাদিক ভাইদের তৎকালীন আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির সাথে যোগাযোগের ও সাক্ষাতের মাধ্যম হিসাবে কাজ করেছি। ওয়ান এলিভেনের সময় অনেক কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে প্রায় প্রতিদিন টেলিফোনে কথা হইত।

নেতার বাসার আসার আগে অনেকের সাথে ফোনে কথা হইত। প্রিয় নেতাকে আগেই বলে রাখতাম। কোন মিটিং বা অসুস্থ থাকলে জানিয়ে দিতাম।নেতার সাথে সাক্ষাতে আসলে সকল নেতাকে রিসিভ করে নেতার কাছে নিয়ে আসতাম। আবার লিপ্টে নামিয়ে গাড়ীতে উঠে বিদায় দিতাম।

আজ অনেকেই অনেকে ওয়ান এলিভেনে দুঃসময়ের কথা মনে রাখতে চাইনা। যদি ওয়ান এলিভেনের কঠিন সময় প্রিয় নেতার উপর আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব অর্পিত না হতো অথবা সেনাশাসিত তত্বাবাধায়ক চাপে দায়িত্ব থেকে সরে যেত তাদের দীর্ঘদিন ক্ষমতার থাকার স্বপ্ন ভঙ্গ হতোনা। তখন অনেকে ক্ষমতার আসনে বসতে পারতোনা কিনা সন্দেহ ছিলো।আজ বাংলার ইতিহাস ভিন্ন হতো।

জননেতা জিল্লুর রহমান তখন শুধু দলের নয়, বাঙালী জাতির অভিভাবক হয়ে উঠেছিলেন।তখন তিনি ছিলেন জাতির নির্ভতার প্রতীক। ওয়ান ইলিভেনের কঠিন সময় মহান নেত্রীর কারামুক্তি আন্দোলনে তাঁর দুঃসাহসিক ভূমিকা এইদেশের সাধারন মানুষ কোনদিন ভুলতে পারবেনা চীরদিন পরম শ্রদ্ধাভরে স্বরন করবে।

-লেখক : সাধারন সম্পাদক, জিল্লুর রহমান পরিষদ।