Home জাতীয় এভিডেন্স অ্যাক্ট, খসড়া নীতিগতভাবে অনুমোদন

এভিডেন্স অ্যাক্ট, খসড়া নীতিগতভাবে অনুমোদন

41

স্টাফ রিপোটার: মন্ত্রিসভা আজ আদালতে ডিজিটাল সাক্ষ্য-প্রমাণ দাখিলের জন্য আইনি কাঠামো নির্ধারণের লক্ষ্যে ‘এভিডেন্স (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট, ২০২২’-এর খসড়া নীতিগতভাবে অনুমোদন দিয়েছে।
বাংলাদেশ সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সাপ্তাহিক মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
তিনি তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এতে যোগ দেন। এসময় তাঁর মন্ত্রিসভার সহকর্মীবৃন্দ এবং অন্যরা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে ছিলেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী এখন থেকে ডিজিটাল সাক্ষ্য-প্রমাণ গ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে মামলার ডিজিটাল বা অনলাইন বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর প্রমাণ, নথি এবং অন্যান্য সবকিছু অনলাইনে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বিদ্যমান সাক্ষ্য আইনে অনলাইন বা ডিজিটাল প্রমাণ সম্পর্কে সরাসরি কিছু উল্লেখ করা নেই।
তিনি বলেন, বিদ্যমান আইনে, ডিজিটাল প্রমাণ বা নথি গ্রহণের ক্ষেত্রে নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কোনো সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি উচ্চ আদালতে আবেদন করলে অনেক আইনি জটিলতা দেখা দিতে পারে ।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, খসড়া আইনে ডিজিটাল প্রমাণের ফরেনসিক পরীক্ষা করার বিধান রাখা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আদালত যদি প্রয়োজন মনে করে বা মামলার কোনো পক্ষ এই ধরনের প্রমাণের সত্যতা নিয়ে সন্দেহ করে, তাহলে এগুলো ফরেনসিক পরীক্ষার মাধ্যমে পরিহার করা হতে পারে।
তিনি বলেন, ডিজিটাল প্রমাণের ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য দেশে পর্যাপ্ত ল্যাবরেটরি রয়েছে এবং বিসিসি’র এ বিষয়ে অত্যন্ত উচ্চ প্রযুক্তি রয়েছে। সরকার ডিজিটাল প্রমাণ জমা দেওয়ার স্বার্থে ল্যাবরেটরি এবং প্রযুক্তি দেশের সুবিধাজনক স্থানে ছড়িয়ে দিতে পারে। মিথ্যা বা জাল প্রমাণ দাখিল করলে সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হবে।
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, কেউ প্রমাণ বিকৃত (টেম্পার) করলে পেনাল কোডের ২১১ ধারা বা ডিজিটাল আইনের ৫৭ ধারা অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্ত্রিসভা এছাড়াও অবসরপ্রাপ্ত বিচারকের জন্য মাসিক ৭০,০০০ টাকা বিশেষ ভাতার বিধান রেখে ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট জাজেজ (লিভ, পেনশন ও প্রিভিলেজ) আইন, ২০২২’-এর খসড়া নীতিগতভাবে অনুমোদন করেছে।
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এই আইন অনুযায়ী বিচারকের গৃহকর্মী, গাড়ি চালক, দারোয়ান এবং অফিস-কাম আবাসনের রক্ষণাবেক্ষণের মতো বিভিন্ন কাজের বিপরীতে খরচ মেটাতে বিশেষ ভাতা দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, হাইকোর্টের রায় অনুসারে সামরিক শাসনের অধ্যাদেশ বাতিল করে একটি আইন প্রণয়নের জন্য খসড়া আইন প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত আইনটি সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (লিভ, পেনশন এবং সুবিধাদি) অধ্যাদেশ, ১৯৮২ এর প্রতিস্থাপন করবে।
অন্যদিকে, দন্ডিত যুদ্ধাপরাধীর বাজেয়াপ্ত সম্পত্তিকে ‘পরিত্যক্ত সম্পদ’ হিসেবে গণ্য করার বিধান রেখে পরিত্যক্ত বাড়ি (সম্পূরক বিধান) আইন, ২০২২-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
বিদ্যমান আইনটিও ১৯৮৫ সালের একটি অধ্যাদেশ। যেহেতু এটি সামরিক শাসনামলে জারি করা হয়েছিল, তাই হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী নতুন আইন প্রণয়ন করতে হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এখানে সামান্য কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যদি কেউ যুদ্ধাপরাধী মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন এবং আদালত তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে, তবে প্রস্তাবিত আইনে সেগুলি পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসাবে বিবেচিত হবে।
এছাড়া গুলশান, বনানী ও ধানমন্ডির মতো এলাকায় উচ্চমূল্যের ভবনের বিষয়ে কোনো কিছু নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে চূড়ান্ত কর্তৃত্ব সরকারের পরিবর্তে সরকার প্রধানকে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
খসড়া আইনটি পরিত্যক্ত ভবন (সম্পূরক বিধান) অধ্যাদেশ, ১৯৮৫ প্রতিস্থাপনের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।
বৈঠকে সামরিক শাসনের অধ্যাদেশ বাতিলের জন্য ‘যাকাত তহবিল ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২২’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, খসড়া আইন অনুযায়ী যাকাত আদায় ও বিতরণের জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে একটি যাকাত তহবিল বোর্ড থাকবে।