Home সাহিত্য ও বিনোদন একুশে বইমেলায় আজ নতুন বই এসেছে ১৭১টি

একুশে বইমেলায় আজ নতুন বই এসেছে ১৭১টি

51

স্টাফ রিপোটার: আজ ৯ই ফেব্রুয়ারি শুক্রবার। অমর একুশে বইমেলা ২০২৪-এর নবম দিন। মেলা শুরু হয় সকাল ১১টায় এবং চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। সকাল ১১টা থেকে বেলা ০১টা পর্যন্ত ছিল শিশুপ্রহর। আজ নতুন বই এসেছে ১৭১টি।
অমর একুশে উদ্যাপনের অংশ হিসেবে সকাল ৮:৩০টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। এতে ক-শাখায় ৩৯৫, খ-শাখায় ২৩৫ এবং গ-শাখায় ৬৫ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে। চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করেন অধ্যাপক নিসার হোসেন।
সকাল ৯:৩০টায় বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে শিশু-কিশোর আবৃত্তি প্রতিযোগিতার প্রাথমিক বাছাই পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এতে ক-শাখায় ১২৩, খ-শাখায় ১৩৮ এবং গ-শাখায় ৫১ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে। বিচারকের দায়িত্বে ছিলেন বাচিকশিল্পী আনজুমান আরা, মো. গোলাম সারোয়ার এবং রফিকুল ইসলাম।
বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণ : এস. ওয়াজেদ আলি শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আবু হেনা মোস্তফা এনাম। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ইকতিয়ার চৌধুরী এবং কুদরত-ই-হুদা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক সৈয়দ আকরম হোসেন।
প্রাবন্ধিক বলেন, এস. ওয়াজেদ আলির রচনাসমগ্র কালের ¯ূ’’ল ও নির্মম মুখোশমালা খুলে দেওয়া, সর্বমানবের মাঙ্গলিক সমাজ নির্মাণের ইশতিহার। ¯œায়ু ও মজ্জার ভেতর আশ্চর্য বরাভয় নিয়ে তিনি লিখেছেন সমাজ-রাষ্ট্র-জীবন ও শিল্পসন্ধানী মানবমুক্তির দুঃসাহসিক রচনাসমূহ। এস. ওয়াজেদ আলির রক্ত ও মজ্জায় গেঁথে ছিল স্বদেশিকতা, জাতিত্ববোধ, মানবসম্পর্কের ঔদার্য। এমনকি তাঁর সাহিত্য ও নন্দনচিন্তার সাঁকো গড়ে উঠেছে মানুষের মাঙ্গলিক সম্মিলনের আকাক্ষায়। কালের ক্ষত, রক্তের দাগ এবং অগ্নিদগ্ধ ছাই পেরিয়ে যে অখণ্ড রাষ্ট্রের স্বপ্ন তিনি দেখেছেন, স্বভাবতই সেখানে হিন্দু-মুসলমান সম্প্রদায়ের সম্মিলন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।
আলোচকবৃন্দ বলেন, স্বচ্ছল ও অভিজাত বাঙালি মুসলমান পরিবারের সন্তান এস. ওয়াজেদ আলি ইউরোপীয় আধুনিক চিন্তা-চেতনার দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন। ধর্মীয় সংস্কৃতির মধ্যে সমন্বয় সাধন করে একটি জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতেন তিনি। ধর্মচর্চার ব্যাপারে এস. ওয়াজেদ আলি ছিলেন যুক্তিবাদী, আধুনিক ও উদার দৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি ছিলেন তাঁর সময়ের চাইতে অনেক অগ্রসর।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সৈয়দ আকরম হোসেন বলেন, এস. ওয়াজেদ আলি ছিলেন সব্যসাচী লেখক এবং একজন মহান চিন্তক। আন্তঃসাংস্কৃতিক মিলনের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ ভারতের স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। তাঁর আদর্শ ও চিন্তা নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য আমাদের যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে।
আজ লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন শিশুসাহিত্যিক রিফাত নিগার শাপলা, গবেষক অধ্যাপক মো. মাহবুবর রহমান, কবি মাশরুরা লাকী এবং কথাসাহিত্যিক আনোয়ার হোসেন বাদল।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি হারিসুল হক, বায়তুলøাহ কাদেরী এবং আফরোজা সোমা। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী আজহারুল হক আজাদ, সৈয়দ শহিদুল ইসলাম, সুকান্ত গুপ্ত এবং তামান্না সারোয়ার নীপা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পুথি পাঠ করেন আবুল বাশার তালুকদার। এছাড়াও ছিল মো. বশির উদ্দিন মাহমুদের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বিশ্বভরা প্রাণ’, সিলেটের সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘শ্রুতি সিলেট’ এবং ড. লীনা তাপসী খানের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘International Center Bengali Music (ICBM)’-এর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী অণিমা মুক্তি গোমেজ, মমতা দাসী, শামসেল হক চিশতি, রওশন আলম, বাউল সুভাষ বিশ্বাস, মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ওয়াদুদুর রহমান রাহুল এবং ফারুক নূরী। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন রাজু চৌধুরী (তবলা), রবিনস্ চৌধুরী (কী-বোর্ড), মো. ফায়জুর রহমান (বাঁশি), অরূপ কুমার শীল (দোতারা) এবং আব্দুস সোবহান (বাংলা ঢোল)।
আগামীকালের সময়সূচি
আগামীকাল ১০ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪ শনিবার। অমর একুশে বইমেলার দশম দিন। মেলা শুরু হবে সকাল ১১টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। সকাল ১১টা থেকে বেলা ০১টা পর্যন্ত মেলায় থাকবে শিশুপ্রহর।