Home জাতীয় ঈদ উপলক্ষ্যে আনন্দ উচ্ছ্বাসে মেতেছেন আগত পর্যটকরা।।

ঈদ উপলক্ষ্যে আনন্দ উচ্ছ্বাসে মেতেছেন আগত পর্যটকরা।।

29

ডানা মেলেছে সাগর কন্যা কুয়কাটার সবকটি পর্যটন স্পট

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি: পবিত্র রমজানের টানা এক মাস নির্জনতা থাকার পর ডানা মেলেছে সাগর কন্যা কুয়াকাটার সবকটি পর্যটন স্পট। ঈদের তৃতীয় দিনেও পর্যটকে পরিপূর্ন। আনন্দ উচ্ছ্বাসে মেতেছেন আগত পর্যটকরা। কেউ সাগরের ঢেউয়ে সাথে শরীর ভিজিয়ে সাঁতার কাটছেন। কেউ প্রিয়জনের সঙ্গে সেলফি তুলছেন। কেউ কেউ নাচ গানে মেতে রয়েছে। আবার কেউবা সৈকতের বেঞ্চিতে বসে উপভোগ করছেন প্রকৃতির সৌন্দর্য। অনেকে আবার ঘুরছেন ঘোড়ায় কিংবা মোটরসাইকেলে। মোট কথা পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার সৈকতে যেন বিরাজ করছে ঈদ উৎসবের আমেজ। এদিকে পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় তৎপর রয়েছে ট্যুরিষ্ট পুলিশ।
এছাড়াও তিন নদীর মোহনা, লেম্বুর বন, শুটকি পল্লী, ঝাউবাগান ও গঙ্গামতীসহ সব পর্যটক স্পটগুলোতে রয়েছে পর্যটকদের বাড়তি উপস্থিতি। এর ফলে প্রানচাঞ্চল্যতায় ফিরেছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো। পর্যটকের চাপ আরও দু-এক দিন থাকবে বলে জানিয়েছেন ব্যাবসায়িরা।
পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলেছেন,পদ্মা সেতু চালুর পর বছরজুড়েই কমবেশি পর্যটকের আনাগোনা থাকে কুয়াকাটায়। তবে ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে পর্যটক ও দর্শনার্থীর ভিড় কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এবারের ঈদেও পর্যটক ও দর্শনার্থীদের আগমনে জমজমাট। আগত পর্যটকদের ভিড়ে বুকিং রয়েছে কুয়াকাটার ৮০ ভাগ হোটেল মোটেল। বিক্রি বেড়েছে খবার হোটেল সহ বিভিন্ন প্রসাধনী সমগ্রীর দোকানগুলোতে। এসব ব্যবসায়ীদের সময়টা ব্যস্তাতার মধ্যেই কাটছে। ঈদের প্রথম দিন থেকেই বিভিন্ন বয়সের মানুষ ঘুরতে আসতে শুরু করেন। তবে ওই দিন দূরদূরান্তের চেয়ে নিকটবর্তী এলাকার পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
পর্যটক ও দর্শনার্থীদের আগমনে ফটোগ্রাফার, মোটরসাইকেল চালক, ভ্যানচালক, অটোরিকশা চালক, সৈকতের ছাতা-বেঞ্চ ব্যবসায়ী, ট্যুর অপারেটরসহ পর্যটনকেন্দ্রিক সব ব্যবসায়ী বেশ খুশি। পর্যটকদের সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে কুয়াকাটা জিরো পয়েন্টের পূর্ব-পশ্চিম পাশে অস্থায়ীভাবে বসা ফিশ ফ্রাই দোকানগুলোতে। এসব দোকানে লবস্টার, রুপচাঁদা, কোরাল, তাইরা, টুনা, চিংড়ি, কাঁকড়া, ইলিশসহ সামুদ্রিক বিভিন্ন মাছের পসরা সাজিয়ে রেখেছেন বিক্রেতারা। ফিশ ফ্রাই ব্যবসায়ী বলেন, প্রতিটি ভাজা মাছের দোকানে বিকেল চারটা থেকে রাত একটা পর্যন্ত বিক্রি চলে।
পর্যটক মোহেদী হাসান জানান, এখানে প্রথমবারে এসেছি। কুয়াকাটা সুন্দর একটি জায়গা। বন্ধুদের নিয়ে পর্যটন স্পটগুলো ঘুরে দেখেছি। খুব ভালোই লেগেছে। এছাড়া সমুদ্রে সাতার কেটেছি। আমাদের যে আনন্দ তা ভাষায় প্রকাশ করার নয়। পর্যটক জাকির হোসেন-মৌ দম্পত্তি জানান, ঈদের আনন্দ উপভোগ করতেই কুয়াকাটায় এসেছি। তিন দিনের জন্য হোটেল বুকিং করেছি। বিয়ের পর এই প্রথম আসলাম।
কুয়াকাটা সিকদার রিসোর্ট অ্যান্ড ভিলেজ এর ম্যানেজার মো.আল-আমিন জানান,পর্যটকরা এখনও রুম বুকিং দিচ্ছেন। ঈদ উপলক্ষ্যে তাদের হোটেলের রুম ভাড়ায় বিশেষ ছাড় রয়েছে।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অফ কুয়াকাটা টোয়াক’র সভাপতি রুমান ইমতিয়া তুষার বলেন, কুয়াকাটায় ব্যাপক পর্যটকের আগমন ঘটেছে। আমরা পর্যটকদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।
কুয়াকাটা ট্যুরিষ্ট পুলিশ জোনের পুলিশ পরিদর্শক মো.হাসনাইন পারভেজ জানান, ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের ব্যাপক চাপ রয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন পর্যটন স্পটে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া সাদা পোশাকের পুলিশও কাজ করছে। যারা সাগরে গোসল করার জন্য নামছেন, তাদের মাইকিং করে প্রতিমুহুর্তে সতর্ক করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশী টহল জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া অভিযোগের জন্য একটি হটলাইন চালুও রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।