Home সাহিত্য ও বিনোদন ইবি লেক যেনো তৃণাচ্ছাদিত গোচারণ ভূমি

ইবি লেক যেনো তৃণাচ্ছাদিত গোচারণ ভূমি

61

নূর ই আলম, ইবি প্রতিনিধি।। একসময় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) হাতিরঝিল নামে পরিচিত ইবি লেক বা মফিজ লেক বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরম ও সৌন্দর্যমণ্ডিত স্থান হিসেবে সকলের কাছেই পরিচিত। প্রথমবার কেও ক্যাম্পাসে আসার পর লেক পরিদর্শনে যায় নি এমন শিক্ষার্থী খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। সকাল হতে সন্ধ্যা প্রতিটা সময় এক ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে কাটে লেকের আঙিনা। তবে অযত্ন অবহেলায় এখন লেক যেনো গবাদি পশুদের জন্য তৃণাচ্ছাদিত ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শুষ্ক মৌসুম পেরিয়ে গেলেও এক ফোঁটা পানি নেই লেকের কোথাও। আইআইইআর ভবন পার হয়ে লেকের প্রবেশ মুখে ঢুকতেই দেখা যায় পূর্ব পাড়ের ব্লক ভেঙ্গে মুখ আটকে আছে। একটু সামনে এগুলে দেখা যায় দুইপাশ বিস্তৃত জঙ্গল। তাছাড়া ঝোপঝাড়ে পরিপূর্ণ হয়ে আছে লেক সংলগ্ন আশেপাশের এরিয়া। সেখানে বিভিন্ন বিষাক্ত সাপের ভয় তো আছেই। লেকের একমাত্র ওয়াচটাওয়ারের অবস্থাও নাজেহাল। লেকে পানি সরবারাহের কোনো উৎস খুঁজে পাওয়া যায় নি আশেপাশের কোথাও।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সূচনালগ্ন থেকে থাকা লেকটি কয়েকবছর আগে আকিজ গ্রুপের অর্থায়নে একটি দৃষ্টিনন্দন ব্রিজ, উত্তর-পশ্চিম পাশে একটি ওয়াচ টাওয়ার এবং লেকের পাশে বসার স্থান তৈরি করা হয়েছিল। সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য ব্রিজে লাইটিং ও করা হয়েছিলো। যেকারণে সন্ধ্যার পর লেকের সৌন্দর্য আরও বেড়ে যেতো। তখনকার লেকের পরিষ্কার পানি, দৃষ্টিনন্দন লাইটিং, মনোরম আবহাওয়া সবারই আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু ছিলো। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় লেক এখন গোচারণভূমিতে পরিণত হয়েছে।

শীতকালে এই লেকে প্রচুর অতিথি পাখির আগমন ঘটতো। কিন্তু এই অব্যবস্থাপনা এবং অবহেলায় গতবছর থেকে কোনো অতিথি পাখি দেখা যায় না লেকে। যেখানে লেকে পানি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর সেখানে অতিথি পাখির কথা কল্পনা করা যেনো বিলাসিতা। এমনটাই মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

একসময় মফিজ লেক ইবি ক্যাম্পাসের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন জায়গা ছিলো। কিন্তু এখন তা অতীত। চার মাস হয়ে গেলো বিশ্ববিদ্যালয় খোলার। কিন্তু এখনো একই অবস্থায় পড়ে আছে লেকটি। অবহেলা এবং অব্যবস্থাপনার কারণে একসময়ের দৃষ্টিনন্দন লেকের অবস্থা এমন হয়ে আছে বলে মনে করেন সাধারন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী শতরূপা বলেন, একসময় লেকের মনোরম আবহাওয়া সবাইকে মুগ্ধ করতো। সারাদিন ক্লাসের পর যখন বন্ধুদের সাথে লেকের মনোরম পরিবেশে আড্ডা জমানো যেতো তখন সারাদিনের ক্লান্তি দূর হয়ে যেতো এক নিমিশে। কিন্তু লেকের সেই অবস্থা এখন আর নেই। অবহেলা এবং অব্যবস্থাপনার কারণে একসময়ের দৃষ্টিনন্দন লেকের অবস্থা করুণ হয়ে গেছে। স্বচ্ছ পানি তো দূরের কথা এখন পানি পাওয়া ই মুশকিল, ঝোপঝাড়ে ছেয়ে গেছে আশপাশ। কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাই, লেকটির সঠিক পরিচর্যা করে তার পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যান।

আরো অনেক শিক্ষার্থীদের দাবি, লেকে স্বচ্ছ পানি সরবরাহ করার পাশাপাশি পরিচ্ছন্নতা বৃদ্ধি করে মনোরম পরিবেশ নিশ্চিত করে যেনো। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন তারা।

লেক খড়ায় ভুগছে কেনো জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী(ভারপ্রাপ্ত) এ.কে. এম শরীফ উদ্দীন বলেন, অনাবৃষ্টির জন্য পানি থাকছে না, পানির সোর্স নাই। একসময় ক্যাম্পাসের পানি প্লাস বাইরের পানি লেকে ঢুকতো। এখন পাশে খনন কাজের ফলে পানি বের হয়ে যায়। পানি রাখা যাচ্ছে না লেকের ভেতর।

এছাড়া লেকের মধ্যে ফোয়ারার জন্য ফ্রেম করে রাখার বিষয় সম্পর্কে বলেন, লেকের জন্য ২ কোটি ৭ লক্ষ্য টাকা বরাদ্দ ছিলো লেকের চারপাশ, রাস্তা, ব্রীজ, ওয়াচটাওয়ার এসবের জন্য। ফোয়ারার জন্য আলাদা স্পন্সর ছিলো ওইটা আমাদের দেখার বিষয় না।