Home কুটনৈতিক ও প্রবাস ইউরোপ আওয়ামী লীগ বির্তকিত ও আস্থাহীন হয়ে পড়েছে। আসছে নতুন কমিটি

ইউরোপ আওয়ামী লীগ বির্তকিত ও আস্থাহীন হয়ে পড়েছে। আসছে নতুন কমিটি

1990

প্রবাসী ডেস্কঃ দেশে বিদেশে সর্বত্র চরম বিতর্কিত ও আস্থাহীন হয়ে পরেছে ইউরোপ আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম ও সাধারন সম্পাদক মজিবর রহমান।
ফিনল্যান্ডে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উল্লেখিত দুইজনকে সাক্ষাতের অনুমতি না দেওয়ায় এমনিক ফিনল্যান্ডে অবস্থান করেও দুই দিনে বহু চেষ্টা করেও হোটেল লবিতেও আসতে না পারায় এরা অপ্রাসাঙ্গিক ও আস্থাহীন হয়ে পড়েছে। উল্লেখ্য প্রায় তিন বছর আগে প্রধানমন্ত্রী ইউরোপ সফরে মৌখিকভাবে নজরুল ইসলামকে সভাপতি ও মজিবর রহমানকে সাধারন সম্পাদক হিসেবে ঘোষনা
করে তাদেরকে তিন মাসের মধ্যে ইউরোপের সব দেশের সিনিয়র নেতাদের সমন্বয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটির গঠনের নির্দেশ দেন।
নেতৃদ্বয় ক্ষমতা পেয়ে এতটাই স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠেন যে তিন বছর অতিক্রান্ত হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটির করার কোন চেষ্টাই তারা করেন নি। কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে বারবার তাগিদ দেওয়া সত্বেও সেদিকে তারা কর্ণপাত করেননি। এমনিক তাদের দাম্ভিকতা এমন পর্যায়ে উপনীত হয়েছে যে বলে বেরান আমরা দুজনেই ইউরোপ কমিটি চালাবো।অভিযোগ রয়েছে সভাপতির দায়িত্ব পেয়ে এম নজরুল ইসলাম সাধারন সম্পাদক মজিবর রহমানকে তোয়াক্কা না করে সু সংগঠিত ইউরোপের বিভিন্ন দেশগুলোতে আওয়ামী লীগের মধ্যে গ্রুপিং তৈরী করে নিজস্ব বলয় সৃষ্টি করেন। এবং ইউরোপের সব দেশের আওয়ামী লীগকে ২/৩ভাগে বিভক্ত করে রাখেন এবং দুই পক্ষ থেকেই অনৈতিক সুবিধা আদায় করেন। এম নজরুল ইসলাম যে দেশে অবস্থান করেন সেই অষ্ট্রিয়াতেই আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ দ্বিখন্ডিত। দুই পক্ষই পৃথক পৃথক কর্মসুচী পালন করে। স্পেন আওয়ামী লীগকে পাশ কাটিয়ে এম নজরুলের একক ক্ষমতাবলে সাবেক জামাত নেতা রবিনকে সভাপতি মনোনিত করেন। এই রবিনের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু হত্যার আসামী ডালিমকে আশ্রয়দানের অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইউরোপের আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। একটি সুত্রে জানায় কয়েকহাজার ইউরোর বিনিময়ে এম নজরুল ইসলাম এসব অভিযোগ তোয়াক্কা না করে রবিনকেই সভাপতি করেন।
জার্মানীতে গত ২বছর আগে সম্মেলনে জনাব নজরুল উপস্থিত থেকে কাউন্সিলের কমিটিকে পাশ কাটিয়ে আরেকটি কমিটি করে দেয়। এসময় হোটেল লবিতে এম নজরুলকে কাউন্সিলে নির্বাচত কমিটির নেতৃবৃন্দ মারধর করে জামা খুলে নেয়।
জার্মানীতে এখন দুইটি কমিটিই বিদ্যমান।
বেলজিয়ামে এম নজরুল ইসলাম ইউরোপ আওয়ামী লীগে তার প্রতিদ্বন্দ্ব বজলুর রশীদ ভুলুকে অস্বস্তিতে রাখতে ওখানে আর একটি কমিটি করে দেন।
ইউরোপের অপর দেশ মাল্টায় বিপুল অর্থের বিনিময়ে প্রাধানমন্ত্রীকে কটাক্ষকারী জামাতের এজেন্ট মশিউর রহমানকে সভাপতি বানিয়েছেন।
এ নিয়ে মাল্টা আওয়ামী লীগের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা আর একটি কমিটি গঠন করেছে। ওখানেও দুটি কমিটিই বিদ্যমান।
আয়ারল্যান্ডে সু সংগঠিত আওয়ামী লীগকেও তিনি বিভক্ত করেন। অর্থের বিনিময়ে জনাব নজরুল বিতর্কিত ব্যক্তিকে আহবায়ক করেন। ওখানেও দুটি কমিটি বিদ্যমান।
ডেনমার্ক আওয়ামী লীগ সভাপতি, ইউরোপ আওয়ামী লীগে তার প্রতিদ্ব›িদ্ব লিংকন মোল্লাকে বিপাকে ফেলতে জনাব নজরুল তার পছন্দমত একটি পকেট কমিটি করেন।
নেদারল্যান্ডেও দুটি কমিটি রয়েছে।
ইউরোপের ইউকের পর ইতালীতে বেশী সংখ্যক বাংলাদেশীদের বসবাস। সেখানেও তিনি স্বার্থের বিনিময় বিভক্তি সৃষ্টি করেছেন। ইতালিতে মেয়াদোত্তীর্ণ (নয় বছরের অধিক) কমিটিকে অর্থের বিনিময় টিকিয়ে রাখার অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে ব্যাংকে চাকুরীরত, শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি বছরে ১১ মাস বাংলাদেশে অবস্থানকারী বিশিষ্ট ব্যবসায়ি ইদ্রিসফরাজী প্রতি মাসে এম নজরুলকে নিয়মিত মাশোয়ারা দিয়ে নেতাকর্মীদের চাহিদার সম্মেলনকে গুরুত্ব না দিয়ে অসাংগঠনিকভাবে টিকিয়ে রেখেছেন। এবং ইদ্রিশ ফরাজী দম্ভোক্তি করেন যে ইউরোপ আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারন সম্পাদক আমার পকেটে। যদিও ইতালি আওয়ামী লীগের ৯০শতাংশ নেতাকর্মীর ইচ্ছার ভিত্তিতে আগামী ১৪ই নভেম্বর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। যা ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে অবগত করেছেন। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনের সফলতা কামনা করে বাণী প্রদান করেছেন।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ফিনল্যান্ড সফরে হেলসিংকির হোটেল ক্যাম্প এর লবীতে ইতালি আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার লোকমান হোসেন ও ইতালি আওয়ামী লীগ নেতা সম্মেলনে সাধারন সম্পাদক প্রার্থী এম এ রব মিন্টু প্রধানমন্ত্রীকে সম্মেলন সম্পর্কে অবগত করেন।

ইতালীতে এম নজরুল ইসলাম ও মজিবর রহমানকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না। কারন ইতালি আওয়ামী লীগ সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশক্রমে পরিচালিত হয়।
১৪ই নভেম্বর সম্মেলনে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হলে বিতর্কিত এম নজরুল ইসলামের রাজণিিতর মাঠে টিকে থাকা কষ্টকর হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
হয়ত তখন তিনি এখানেও আর একটি কমিটি করতে পারেন।
এভাবে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ড হিসেবে খ্যাত সুসংগঠিত আওয়ামী লীগকে বিতর্কিত এম নজরুল নিজের স্বার্থে দ্বিখন্ডিত করে রেখেছে।
আরো উল্লেখ্য করোনা মহামারির সময় এম নজরুল ইসলাম ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে লক্ষাধিক ইউরো (বাংলাদেশী টাকায় প্রায় এক কোটি) চাঁদা উত্তোলন করেন। পরবর্তীতে তিনি এই টাকা বাংলাদেশের কোথাও বিতরন না করায় ইউরোপের নেতৃবৃন্দের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। যা দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নজরে আসে।
টাকার বিনিময়ে ইউরোপের সুসংগঠিত আওয়ামী লীগকে বিভক্তি করা এবং ব্যাপক চাঁদা উত্তোলনের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর অবগত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী এদের উপর অসন্তুষ্ট হলে সম্প্রতি তার সফরে ফিনল্যান্ড আসার সবুজ সংকেত পাননি জনাব নজরুল ইসলাম ও মজিবর রহমান। এমনকি ইউরোপের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীরা হোটেলের লবিতে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে আসলেও এম নজরুল ইসলাম ও মজিবর রহমানকে দেখা যায়নি। যা সকলকে অবাক করেছে। ওখানে উপস্থিত একটি সুত্র নিশ্চিত করেছে প্রধানমন্ত্রী তাদের কর্মকান্ডে ক্ষুব্ধ।পরবর্তী ইউরোপ সফরে প্রধানমন্ত্রী ইউরোপ আওয়ামীলীগের নতুন কমিটি ঘোষনা করবেন বলে সূত্রটি জানান।