Home রাজনীতি আর্থিক সংকটের কারণে দেশের প্রায় ৭৩ ভাগ মানুষ খাদ্য গ্রহণ কমিয়েছে

আর্থিক সংকটের কারণে দেশের প্রায় ৭৩ ভাগ মানুষ খাদ্য গ্রহণ কমিয়েছে

33

স্টাফ রিপোটার: আজ ১১অক্টোবর সকাল সাড়ে ১১টায় রাজধানীর মৈত্রী মিলনায়তনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জোটের সমন্বয়ক রুহিন হেসেন প্রিন্স বলেছেন, সরকার ‘উন্নয়নের’ ঢাক-ঢোল পেটালেও দেশের মানুষের বেঁচে থাকা দুরূহ হয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষের আয় না বাড়লেও চাল-ডাল-তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশছোঁয়া। আর্থিক সংকটের কারণে দেশের প্রায় ৭৩ ভাগ মানুষ খাদ্য গ্রহণ কমিয়েছে।

তিনি বলেন, জনগণের মতামতের তোয়াক্কা না করে ভোট ডাকাতি করে গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকা সরকার একের পর এক গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটাধিকার আজ নির্বাসিত। দলীয় সরকারের অধীনে ভোটের প্রতি জনগণের বিন্দুমাত্র আস্থা নাই। বর্তমান সরকার আমলাতন্ত্র ও পুলিশের উপর নির্ভর করে টিকে আছে। সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে, সরকারের পদত্যাদ, সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন ও সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনসহ, নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করতে হবে। তিনি দেশবাসীর প্রতি ফ্যাসিবাদী সরকারের উচ্ছেদ ও শোষণমূলক পুঁজিবাদী ব্যবস্থার পরিবর্তন করে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে অংশগ্রহণ এর আহ্বান জানান। তিনি বলেন এই লক্ষ্যে সকল বাম-প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি ও গোষ্ঠী ঐকবদ্ধ হয়ে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলার সংগ্রাম একান্ত প্রয়োজন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) এর সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, কমিউনিস্ট লীগের আব্দুস সাত্তার, বাসদ (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী, সিপিবি সহঃ সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, বাসদের সহঃ সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন সহ বামজোটের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

সংবাদ সম্মেলনে, দলীয় সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন নয়, নির্বাচনকালীন দল নিরপেক্ষ তদারিক সরকারের অধীনে কালোটাকা, পেশীশক্তি, সাম্প্রদায়িকতা, আঞ্চলিকতা মুক্ত পরিবেশে নির্বাচন, নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও ঋণখেলাপী-ব্যাংক ডাকাত, অর্থপাচারকারী, কালোটাকার মালিক, দুর্নীতিবাজদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা, না ভোটের বিধান ও প্রতিনিধি প্রত্যাহারসহ নির্বাচনী ব্যবস্থার আমূল সংস্কার, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন ব্যবস্থা চালু সহ ১০ দফা দাবি জানানো হয়।

অন্যান্য দাবির মধ্যে সকল অগণতান্ত্রিক সংশোধনীসমূহ ও কালাকানুন বাতিল, রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়ন, গুম-খুন, গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পুলিশ- মাস্তানদের হস্তক্ষেপ বন্ধ, চাল-আটা সহ ৯টি অত্যাবশকীয় পণ্যের বেসরকারি বাণিজ্য বন্ধ, রেশনিং চালু, দূর্নীতি, লুটপাট বন্ধ, মজুরি কমিশন গঠন সহ নূন্যতম মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধ, শিক্ষা-স্বাস্থ্য নিয়ে ব্যবসা বন্ধ, জাতীয় সম্পদের উপর জনগণের শতভাগ মালিকানা নিশ্চিত করা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ বিদেশিদের সাথে স্বাক্ষরিত সকল চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক জনসম্মুখে প্রকাশ এবং দেশের স্বার্থবিরোধী সকল অসম চুক্তি বাতিলের দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলন থেকে আগামী ১৫ অক্টোবর শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় মৈত্রী মিলনায়তনে ‘সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিসহ নির্বাচনী ব্যবস্থার আমূল সংস্কার-সুষ্ঠু নির্বাচন ও নির্দলীয় তদারকি সরকার’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা, ১০ দফা দাবি আদায়ে অক্টোবর-নভেম্বর মাসে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার সংগঠন ও ব্যাক্তিবর্গের সাথে মতবিনিময়, আগামী ২২ অক্টোবর শনিবার ঢাকাসহ দেশব্যাপী গণপদযাত্রা এবং নভেম্বর মাসজুড়ে বিভাগীয় শহরসহ বিভিন্ন জেলায় জনসভা-সমাবেশ ও বিক্ষোভের কমসূর্চী ঘোষণা করা হয়।