Home রাজনীতি আমরা স্বাধীনতা, ভূখন্ড আর পতাকা পেলেও মুক্তি পাইনি–জি এম কাদের

আমরা স্বাধীনতা, ভূখন্ড আর পতাকা পেলেও মুক্তি পাইনি–জি এম কাদের

54

মাহাবুবুর রহমান : জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, আমরা স্বাধীনতা, ভূখন্ড আর পতাকা পেলেও মুক্তি পাইনি। তিনি বলেন, যে মুক্তির জন্য দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়েছে, ত্রিশ লাখ শহীদ জীবন দিয়েছে, লাখ লাখ মা-বোন সম্ভ্রম দিয়েছে সেই মুক্তি আমরা আজো পাইনি। তাই মুক্তির সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি। আবারো মুক্তির সংগ্রাম শুরু করতে হবে, এবারের মুক্তির সংগ্রাম হয়তো আরো কঠিন হবে। মুক্তি সংগ্রামে হয়তো আরো বেশি ত্যাগ স্বীকার করতে হবে, আরো বেশি রক্ত দিতে হবে। মুক্তির আন্দোলনের জন্য নেতা-কর্মীদের প্রস্তুত হতে নির্দেশ দিয়েছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের।

আজ বিকেলে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ কথা বলেন। তিনি বলেন, আগামীকাল বিকেল ৪টায় রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে জাতীয় পার্টির ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল বঙ্গভবনে যাবেন। রাষ্ট্রপতির সাথে সংলাপের পরে আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে গণমাধ্যমের সামনে কথা বলবেন তিনি।

এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, ব্রিটিশ আমল থেকেই আমরা শোষণ, বৈষম্য, বঞ্চনা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছি। পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকে পশ্চিম পাকিস্তানীরা আমাদের সাথে বৈষম্য শুরু করে। আমাদের সম্পদ লুট করতে শুরু করে তারা। বাঙালীদের তারা দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেনীর নাগরিকে পরিণত করে। এর প্রতিবাদেই আমাদের মুক্তির সংগ্রাম। আমরা স্বাধীনতা পেলেও এখনো মুক্তি পাইনি। ১৯৯১ সালের পর আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে দেশের মানুষের সাথে বৈষম্য শুরু করেছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি না করলে যোগ্যতা থাকলেও চাকরি মেলে না, ব্যবসা করতে পারেনা। একটি আর্ন্তজাতিক গণমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী গেলো ৬ বছরে ৪ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে বাংলাদেশ থেকে। এর বাইরে আরো কত শত কোটি টাকা পাচার হয়েছে তার কোন হিসেব নেই।

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এসময় আরো বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা ভয়াবহ পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের উপর হামলা, বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ নিত্য দিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাতীয় পার্টি প্রার্থীদের মাঠে দাঁড়াতে দিতে চাচ্ছে না, পাশাপাশি নির্বাচনে প্রার্থীতা প্রত্যাহারে চাপ দিচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জয়ী হতে সরকার সমর্থকরা সব ধরনের অনিয়ম করছে। তিনি বলেন, মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই, খাবার ও কর্মসংস্থানের নিরাপত্তা নেই। রাস্তায় প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছে, যেন দেখার কেউ নেই। তিনি বলেন, গণপরিবহন কারা পরিচালনা করে তা কেউ জানেনা। গণপরিবহন পরিচালনায় সরকারের কোন হাত নেই তা বোঝাই যায়। কিন্তু, মাঝে মাঝে মনে হয়, যারা গণপরিবহন পরিচালনা করেন তারাই সরকার পরিচালনা করেন। তিনি বলেন, সরকারি দল আনন্দ-ফুর্তি করতে মাঝে মাঝে রাস্তা দখল করে। এসময় লাখো মানুষ সিমাহীন ভোগান্তির শিকার হয়, অসুস্থ্য রোগীরা হাসপাতালে যেতে পারে না। পরে সরকারি দলের পক্ষ থেকে একটি দুঃখ প্রকাশ করা হয়, যেন তাদের ফুর্তি করাটাই সবচেয়ে জরুরি।

এসময় জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেন, আওয়ামী লীগের দুর্নীতি ও দুঃশাসনের সাথে আমাদের সমর্থন নেই, কিন্তু জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিষয়ে আমাদের কোন দ্বিমত নেই। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাথে আমরা এক তরফা প্রেম করে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। তাই আগামীতে নিজস্ব কর্মসূচি নিয়ে গণমানুষের প্রত্যাশা পূরণের রাজনীতি নিয়ে এগিয়ে যাবে জাতীয় পার্টি।

জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেছেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সাথে কোন দল কি আচরণ করেছিলো আমরা তা ভুলিনি। তিনি বলেন, যারা পল্লীবন্ধুকে স্বৈরাচার বলেন, তারা নিজেদের চেহারা একটু আয়নায় দেখে নিন। দেশ ও মানুষের সুখ এবং সম্বৃদ্ধির জন্যই জাতীয় পার্টির রাজনীতি।

কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি বলেছেন, দেশের মানুষ বিশ^াস করে জাতীয় পার্টিই গণমানুষের প্রত্যাশা পূরণের রাজনীতি করে। তাই জাতীয় পার্টি দায়িত্ব নিয়েই গণমানুষের স্বার্থে রাজনীতি করছে। জাতীয় পার্টিই দেশের মানুষকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত স্বাদ উপহার দেবে।

পরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির আহ্বায়ক শেরীফা কাদের এমপি’র নির্দেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশ করে জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টি।

এসময় বক্তব্য রাখেন, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য এমএম আব্দুল মান্নান, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, এডভোকেট মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার মিয়া, উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য শেরীফা কাদের এমপি, ইঞ্জিনিয়ার মোঃ সিরাজুল হক, ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, মহিলা পার্টির সদস্য সচিব হেনা খান পন্নি, জাতীয় স্বেসেবক পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোঃ বেলাল হোসেন, জাতীয় যুব সংহতির সদস্য সচিব আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, জাতীয় ছাত্র সমাজ-এর সহ সভাপতি শাহ ইমরান রিপন।

উপস্থিত ছিলেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য নাজম আক্তার এমপি, রানা মোঃ সোহেল, উপদেষ্টা মনিরুল ইসলাম মিলন, এডভোকেট লাকী বেগম, নাজনিন সুলতানা, ভাইস চেয়ারম্যান, নিগার সুলতানা রানী, আমির উদ্দিন আহমেদ ডালু, যুগ্ম মহাসচিব জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, মোঃ সামছুল হক, এডভোকেট সাহিদা রহমান রিংকু, ইকবাল হোসেন তাপস, আমির হোসেন ভূঁইয়া, একেএম আশরাফুজ্জামান জামান খান, সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ হেলাল উদ্দিন, হাজী নাসির উদ্দিন সরকার, এবিএম লিয়াকত হোসেন চাকলাদার, হুমায়ুন খান, আনোয়ার হোসেন তোতা, সৈয়দ ইফতেকার আহসান হাসান, কাজী আবুল খায়ের, মাখন সরকার, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য সুলতান মাহমুদ, এমএ রাজ্জাক খান, জহিরুল ইসলাম মিন্টু, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক ভূঁইয়া, মঞ্জুরুল হক মঞ্জু, মিজানুর রহমান মিরু, গোলাম মোস্তফা, জাহাঙ্গীর হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক দ্বীন ইসলাম শেখ, আব্দুস সাত্তার গালিব, মোঃ জাকির হোসেন মৃধা, আজহার সরকার, নুরুল ইসলাম নুরু, নজরুল ইসলাম, মাহমুদ আলম, মীর সামছুল আলম লিপটন, হাফেজ ক্বারী ইসারুহুল্লাহ আসিফ, কেন্দ্রীয় নেতা রিতা নূর, ফজলে এলাহী সোহাগ, হুমায়ুন কবীর শাওন, শেখ সারোয়ার হোসেন, প্রিন্সিপাল গোলাম মোস্তফা, মুহাম্মদ ফারুক শেঠ, মাওলানা মোহাম্মদ খলিলুর রহমান, আলাউদ্দিন আহমেদ, আলমগীর হোসেন, জাকির হোসেন খান, ইঞ্জিঃ এলাহান উদ্দিন, মেহেদী হাসান শিপন, জিয়াউর রহমান বিপুল, তাসলিনা আকবর রুনা, কাজী মামুন, ইলোরা ইয়াসমিন, শাহনারা ইয়াসমিন, সৈয়দা জাকিয়া আহমেদ হিয়া, শ্রমিক পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল ইসলাম রনি, আবু তাহের।