ডেস্ক রিপোর্ট: : মধ্য আফ্রিকার শাদের মরুভূমিতে প্রায় ৭০ লাখ বছর পুরোনো মাথার খুলি পেয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিক মাইকেল ব্রুনেটের দল। এই আশ্চর্যজনক আবিস্কারের নাম দেয়া হয় তোওমাই। এরই মধ্যে খুলিটির প্রজাতি পরিচয় নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। দ্য গার্ডিয়ানের একই প্রতিবেদন এ তথ্য জানা যায়।

তোওমাই শব্দের অর্থ জীবনের আশা। ধারণা করা হচ্ছে, এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণের সাক্ষি এই খুলি। ওই সময় মানবজাতি ও শিম্পাঞ্জি বিবর্তনের ভিন্ন দুই পথে সবে যাত্রা শুরু করেছিল। সেই হিসেবে এখন পর্যন্ত মানবজাতির সবচেয়ে পুরাতন ফসিল এটি।

অবশ্য প্রত্নতাত্ত্বিকদের মধ্যে বিতর্কের সুরাহা হয়নি। কারো মতে এটি মানবজাতির আদিতম পুরুষ; আবার কারো মতে সাধারণ এক শিম্পাঞ্জির শেষ চিহ্ন এটি।

শুধু দুই পায়ে চলাই মানবজাতির আদিপুরুষ সাব্যস্ত করার জন্য যথেষ্ট না। রবার্তো মাচ্চিয়ারেলির মতো কোন কোন প্রত্নতাত্ত্বিক তোওমাইয়ের দুই পায়ে চলাচলকেই স্বীকার করতে চান না। এর আগে সাহেলান্থ্রোপাস শাদেনসিস নামে এক বিলুপ্ত প্রজাতির নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে। দ্বিপদ হলেও তারা শিম্পাঞ্জির মতো চার হাত-পা ব্যবহার করেই চলাচল করতো। তোওমাই তাদেরই সদস্য হতে পারে।

অবশ্য হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্যানিয়েল লিবারম্যান বেশ জোরের সঙ্গেই এ খুলিকে মানুষের আদিতম ফসিল বলছেন। তার ভাষ্যে, প্রথম দেখাতে ভেবেছিলাম এটি শিম্পাঞ্জি।কিন্তু আরো গভীর পর্যবেক্ষণ রীতিমতো চমকে দেয় আমাকে। আমি এখন এর মানুষ হবার পক্ষে বাজি ধরতেও রাজি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পুরোপুরি নিশ্চিত হবার জন্য একই সময়ের আরো কিছু ফসিল প্রয়োজন। কিন্তু ফসিল গঠনের জন্য বনাঞ্চল খুব একটা সহায়ক নয়। অথচ শিম্পাঞ্জি হোক কিংবা প্রাচীন মানব; তাদের সঙ্গে জঙ্গলের সম্পর্ক ছিল গভীর। ঠিক এই কারণেই শিম্পাঞ্জির ফসিল খুব একটা পাওয়া যায় না।

তবে তোওমাইয়ের ফসিল একটা আশার আলো দেখায়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সাহারা অঞ্চলে ফসিল পাওয়া কঠিন হলেও অসম্ভব না। আর আফ্রিকা ছিল প্রাচীন মানবের বিচরণভূমি।

মাইকেল ব্রুনেট ইউনিভার্সিটি অব পয়টিয়ার্সের গবেষক দলের একজন। এই আবিষ্কার তাকে ফ্রান্সে, বিশেষ করে পয়টিয়ার্সে রাতারাতি জনপ্রিয় করে ফেলেছে। সেখানকার একটা রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে তার নামে।
আমাদের সময়.কম