Home স্বাস্থ্য অসংক্রাম রোগ প্রতিরোধে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে: উপাচার্য

অসংক্রাম রোগ প্রতিরোধে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে: উপাচার্য

35

স্টাফ রিপোটারঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল সেমিনার সাব কমিটির উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ব্লক অডিটোরিয়ামে ১৮ ডিসেম্বর সকালে বিজয়ের ৫১ বছরে স্বাস্থ্যখাতে বাংলাদেশের অর্জনসমূহ নিয়ে গবেষণামূলক তথ্য সমৃদ্ধ প্রবন্ধ উপস্থাপন ও সেন্ট্রাল সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ। বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা ও বর্তমানে কমিউনিটি ক্লিনিক ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী ও সম্মনিত উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন। সম্মানিত অতিথি ছিলেন ইউজির অধ্যাপক হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জী। অনুষ্ঠানে চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব পালন করেন সেন্ট্রাল সেমিনার সাব কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. বেলায়েত হোসেন সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ জাহিদ হোসেন বক্তব্য রাখেন। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স
অধ্যাপক ডা. মোঃ আতিকুল হক।

সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় সেন্ট্রাল সেমিনার সাব কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মোঃ শহীদুল্লাহ সবুজ।

সেমিনারে বলা হয়, দেশের স্বাস্থ্য খাতে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে। শিশু-মাতৃমৃত্যু রোধ, টাইফয়েড, পোলিও, ডায়রিয়া, আমাশয়সহ সব সংক্রামক রোগগুলো প্রায় নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। আটটি মেডিকেল কলেজ থেকে বর্তমানে ১১৩টি মেডিকেল কলেজ হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৯৭১ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৫১ বছরে দেশের স্বাস্থ্য খাতে কী উন্নতি হয়েছে, সেটি নিয়েই আজকের অনুষ্ঠান। আমরা স্বাস্থ্যসেবায় অনেক অর্জন করেছি কিন্তু দেশে বড় আকার ধারণ করছে ক্যান্সার, হৃদরোগসহ অসংক্রামক রোগীগুলো। এগুলোতেই বর্তমানে বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। এ বিষয়ে আমাদের সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে।উপাচার্য বলেন, এখন আর ঠিক মতো অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করছে না। কারণ অ্যান্টিবায়োটিক এখন মানুষের কাছে স্বাভাবিক খাবারে পরিণত হয়েছে। এর বাইরেও গরু, মুরগিকে যে খাবার দেওয়া হচ্ছে সেগুলোতে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে। যে কারণে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হচ্ছে। আমাদের অসংখ্য মানুষের কিডনি ড্যামেজ হচ্ছে, কারণ আমরা যখন-তখন ব্যথানাশক ওষুধ খাচ্ছি। আশঙ্কাজনক হারে কিডনি রোগী বেড়ে গেছে। হাসপাতালগুলো কিডনি ডায়ালাইসিসের রোগীতে ভরপুর। অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ডায়াবেটিসে আক্রান্তের পরিমাণ বাড়ছে। ডায়াবেটিস প্রিভেনশনে আমাদের একটা গবেষণা শুরু হয়েছে। এটা সফল হলে আমাদের দেশের রোগীদের আর ডায়াবেটিসের জন্য লাখ লাখ টাকা খরচ করতে হবে না। এছাড়াও স্বাস্থ্য খাতে আমরা আর কী কী অ্যাচিভমেন্ট করতে পারিনি সেগুলো নিয়ে একটা সেমিনার করা হবে। গবেষণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি যতদিন দায়িত্বে থাকব, গবেষণা না করলে পদোন্নতি পাওয়া যাবে না। গবেষণা পেপার না থাকলে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর হওয়া যাবে না, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর থেকে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর বা প্রফেসরও হওয়া যাবে না।

কমিউনিটি ক্লিনিক ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী বলেন, বাংলাদেশে মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে। চক্ষুরোগ, হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগের উন্নত চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে সাধারণ মানুষ। বর্তমানে শুধু শহরের মানুষ নয়, গ্রামের মানুষও চিকিৎসাসেবার আওতায় এসেছে। স্বাস্থ্যসেবার সকল খাতেই অগ্রগতি হয়েছে। যেকোনো মহামারীকে বাংলাদেশ এখন সফলভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম। বঙ্গবন্ধুর দার্শনিক চিন্তা-ভাবনা এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জননেত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নেতৃত্বের কারণেই স্বাস্থ্যখাতের এই বিরাট সাফল্য অর্জিত হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন বলেন, গত ১০ বছরে আমাদের দেশ থেকে যে পরিমাণ রোগী বিদেশে চিকিৎসা নিতে গেছে, এখন সেটি অনেক কমে এসেছে। এখন বরং অন্যান্য দেশ থেকে বাংলাদেশে এসে চিকিৎসা নেয়। কারণ হলো আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। গত তিন বছর করোনা মহামারিতে আমাদের চিকিৎসকরা নিজেদের উজাড় করে চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে দেশের প্রতিটি মানুষ এসময়ে দেশে চিকিৎসা নিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. জাহিদ হাসান বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় আমাদের স্বাস্থ্য খাত অনেকদূর এগিয়ে গেছে। শিশু সার্জারির উন্নয়ন করার চেষ্টা করছি, যে সার্জারিগুলো দেশে হতো না, এগুলো আমরা ইন্ডিয়া থেকে এনে করছি। শিশুদের প্রায় ৯৮ শতাংশই এখন দেশে চিকিৎসা নেয়।