Home জাতীয় অনলাইন পোটাল বিবার্তা-জাগরণে চুরি ও ভাংচুরের অভিযোগ

অনলাইন পোটাল বিবার্তা-জাগরণে চুরি ও ভাংচুরের অভিযোগ

26

স্টাফ রিপোটার: সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বিবার্তা২৪ডটনেট ও জাগরণ আইপি টিভির অফিসে পদ্মা লাইফ টাওয়ার কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পরিকল্পিতভাবে ভাঙচুর ও চুরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন জাগরণ আইপি টিভির প্রধান সম্পাদক এফ এম শাহীন।

তিনি বলেন, ভাঙচুর থেকে রক্ষা পায়নি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিও। আমরা ইতোমধ্যে বিষয়টি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানিয়েছি। তারা সরেজমিনে এসে ঘটনার তদন্ত করছেন। আমরা আশা করছি তারা বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে দেখে অতিদ্রুত এর সমাধান করবেন।

বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর বাংলামটরস্থ পদ্মা লাইফ টাওয়ারে বিবার্তা২৪ডটনেট ও জাগরণ টিভির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তিনি। বুধবার রাতে বিবার্তা২৪ডটনেট ও জাগরণ টিভির কার্যালয়ে ভাংচুর-চুরির ঘটনায় এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বিবার্তার সম্পাদক বাণী ইয়াসমিন হাসি এবং গৌরব ৭১ সংগঠনের সভাপতি এসএম মনিরুল ইসলাম মনি উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ঘটনার বিবরণী তুলে ধরে এফ এম শাহীন বলেন, গতকাল বিকেলে পদ্মা লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান ফকরুল ইসলাম ও এসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট আজগর আলীর নির্দেশে পদ্মা লাইফ ইন্সুইরেন্স টাওয়ারের ইলেট্রিশিয়ান মাহে আলম ও নাসির এসে ভবনে বিদ্যুৎতের কাজ হবে এই মর্মে ১০ মিনিটের জন্য বিদ্যুৎ বন্ধ করে রাত পর্যন্ত আর চালু করেনি। কিছুক্ষণ পর দেখা গেল পুরো ভবনে বিদ্যুৎ আছে কিন্তু শুধু আমাদের অংশে বিদ্যুৎ বন্ধ। সংবাদ সম্মেলন চলা পর্যন্ত তারা বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়নি।

তিনি বলেন, অত্র প্রতিষ্ঠানের দুটোই অনলাইনভিত্তিক গণমাধ্যম সেহেতু বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর হেড অফ নিউজের নির্দেশে সাব-এডিটরগণ হোম অফিস করেন। এর আমরা রাত প্রায় সাড়ে নয়টার দিকে অফিস বন্ধ করে চলে যাই।

তিনি আরো বলেন, আজ সকালে বিবার্তার সম্পাদকের ড্রাইভার এসে অফিসে ঢুকেই দেখে অফিস অভ্যর্থনা কক্ষে আইসিটি মন্ত্রণালয় থেকে উপহার হিসেবে প্রাপ্ত বঙ্গবন্ধুর ছবি মেঝেতে ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে। একইস্থানে বঙ্গবন্ধুর তর্জনীর ভাস্কর্যটিও মেঝেতে ফেলা ছিল। এরপর ড্রাইভার আমাকে ফোন দিলে আমি ও বিবার্তার সম্পাদক বাণী ইয়াসমিন হাসি দ্রুত অফিসে আসি। দেখি, বিবার্তার সম্পাদকের কক্ষে সবকিছুই এলোমেলো, টেবিলের ড্র‍য়ার ভাঙা, কাগজপত্র মেঝেতে ফেলা এবং সেই কক্ষেও থাকা বঙ্গবন্ধুর পোর্ট্রেটটি মেঝেতে ফেলা রয়েছে।

জাগরণ আইপি টিভির সম্পাদক বলেন, আমি নিজের কক্ষে গিয়ে দেখতে পাই আমার কক্ষেও টেবিল ও ড্র‍য়ারের কাগজপত্র মেঝেতে ফেলা। আমার ড্রয়ার, কেবিনেট এবং রুমে ফেলানো কাগজপত্র গভীর মনোযোগে খুঁজে দেখি সেখানে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের অনুদানপ্রাপ্ত বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণকে কেন্দ্র করে নির্মিত পূর্ণদৈর্ঘ্য শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘মাইক’-এর সর্বশেষ এডিটেড পোর্টেবল হার্ডড্রাইভটি চুরি হয়ে গেছে। যেখানে প্রায় ১ কোটি টাকার অধিক মূল্যের কালার করা এডিটেড ফুটেজ ছিল। গতকাল থেকে বিদ্যুৎ না থাকায় আরো কী কী চুরি হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত নই। এরপর জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল দেই। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ, সিআইডি, ডিবি ঘটনাস্থলে আসেন।

তিনি বলেন, বিবার্তার সম্পাদকের ড্রয়ার থেকে বেতন ও অফিস ভাড়া বাবদ গতকাল ব্যাংক থেকে উত্তোলনকৃত পাঁচ লক্ষ টাকা এবং সম্পাদকের ব্যক্তিগত তহবিলের ৩৪/৩৫ হাজার টাকা অর্থাৎ সর্বমোট ৫ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা ও একটি অ্যাপেল ব্র‍্যান্ডের আইপেড চুরি করে নিয়ে গেছে।

তিনি আরো বলেন, এই ভবনে বিবার্তা-জাগরণ বাদেও ব্যাংক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি, ল’ হাউজ আছে। করোনা পরবর্তী বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দায় পদ্মা লাইফ কর্তৃপক্ষ নতুন করে সার্ভিস চার্জ বৃদ্ধি করায় গত ছয় মাসের ভাড়া দেইনি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ অনুরোধ করার পরে আমরা গত মাসের ভাড়া পরিশোধ করি এবং গতকাল পূর্ববর্তী মাসের ভাড়া এডমিন দিতে গেলে তারা বকেয়া ভাড়াসহ সকল ভাড়া না দিলে ভাড়া রাখবে না বলে ফিরিয়ে দেয়। তার ঘন্টাখানেকের মধ্যে এসে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়।

এফ এম শাহীন বলেন, ইতিপূর্বেও আমাদের বিভিন্ন স্টাফ, ড্রাইভার অফিস সহকারীদের অফিস ছেড়ে দেয়ার জন্য বিভিন্ন ধরণের হুমকি দেয় ইনস্যুরেন্স কতৃপক্ষ। এই বিষয়ে রমনা মডেল থানায় ১৮ অক্টোবর ২০২২ তারিখে একটি জিডি করা হয়। যার নম্বর ১০৬৪, তারিখ- ১৮.১২.২০২২। এরপর ২০ অক্টোবর পদ্মা লাইফ ইন্সুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোরশেদ আলম সিদ্দিকী ইলেকট্রিশিয়ান মাহে আলমকে মারধরের অভিযোগ করে বিবার্তার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বরাবর এক চিঠিতে লেখেন, বার্তা সম্পাদকের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন তাহা পদ্মা লাইফ টাওয়ারের কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অতিসত্তর জানানো জন্য বলা হইল, অন্যথায় পদ্মা লাইফ টাওয়ার কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হবে।’ তারপর থেকে রাতে লিফট চালানোর বিষয়ে তাদের নানা টালবাহানা চলতে থাকে। এছাড়াও, বিভিন্ন সময় অফিসের ইলেকট্রিশিয়ান মাহে আলম কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নানারকম অপ্রাতিষ্ঠানিক, অসৌজন্যমূলক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে আসছিল।